প্রতীকী চিত্র
কখনও তিনি পর্দার ‘চুনি’, আবার কখনও ‘উর্মি’। আর এ বার তাঁর আরও এক নতুন পরিচয়। কথা হচ্ছে অভিনেত্রী অন্বেষা হাজরাকে নিয়ে। দর্শকেরা আপাতত তাঁকে চিনছেন পর্দার ‘আনন্দী’ হিসেবেই। পুজোর আগে ধারাবাহিকের ব্যস্ততাও তুঙ্গে। তবুও অভিনেত্রীর কথায়, “ধারাবাহিকে কাজ করতে পারছি, এটা আমার কাছে আশীর্বাদ।”
যদিও বদলেছে ধারাবাহিকের সম্প্রচারের সময়, তুলনায় বেড়েছে কাজের চাপ। আনন্দবাজার ডট কমকে অন্বেষা বলেন, “আগে ‘আনন্দী’ আধ ঘণ্টার জন্য সম্প্রচারিত হত। এখন তো সময়সীমা বেড়ে ৪০ মিনিট। তাই স্বাভাবিক ভাবেই চাপ ও পরিশ্রম দু’ই বেড়েছে। তা ছাড়া পুজোর আগে ভাগে কিছুটা বাড়তি কাজ গুছিয়ে রাখতে হয় যাতে পঞ্চমী থেকে একটু ছুটি কাটাতে পারি।”
বাড়ির পুজোর বয়স পেরিয়েছে ১৫০ বছর। পঞ্চমী থেকে দশমী তো বোধহয় এই পুজোকে ঘিরেই কাটে অন্বেষার? অভিনেত্রী বলেন, “আমি ছোটবেলাতেও খুব একটা প্যান্ডেলে ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখিনি। আমাদের বাড়িতে চার দিন ধরে বিয়েবাড়ির মতো উৎসব চলে। তাই নিজের বাড়িতেই থাকতে ভালবাসি।” যদিও এর আরও একটি কারণ হল, শহরের ভিড়-কোলাহল একে বারেই না-পসন্দ নায়িকার। অন্বেষার কথায়, “ভিড়ভাট্টা খুব একটা সামলে উঠতে পারি না আমি। সদ্যই মা-এর সঙ্গে শেষ মুহুর্তের কেনাকাটায় গিয়েছিলাম। যা ভিড় দেখলাম, যেন বহুতুলের ছাদে গাড়ি পার্ক করার জোগাড়!”
পুজোতে নতুন জামা-কাপড় কিনতেই হবে, এই দর্শনে বিশ্বাসী নন অন্বেষা। বরং অভিনেত্রীর কথায়, “আমি অনায়াসেই পুরনো জামা ফের ব্যবহার করতে পারি। এই তো ক’টা দিন। বাড়িতে খুব বড় করে পুজো হয়, সেখানেই আনন্দ করি।” তার মানে তো বাড়ির পুজো ঘিরেও ব্যস্ততা অন্য? মজা করে অভিনেত্রী বলেন, “একটা সত্যি কথা বলব? আমি কোনও কাজে হাত দিই-ই না। খুব ছোটবেলায় আমার দাদা একটা দারুণ বুদ্ধি দিয়েছিল, বলেছিল, ‘ঘুমিয়ে থাক। অঞ্জলি দেওয়ার আগে উঠবি। তা হলে খিদে পাবে না।”’ তিনি আরও বলেন, “আসলে খালি পেটে পুজো দেওয়ার রীতি আমাদের বাড়িতে নেই। আমার বাবা নিজেই ঠাকুমাকে বলতেন, উপোস করে পুজো না দেওয়ার কথা।”
পুজোর মুখে এই ব্যস্ততাটা কেমন উপভোগ করছেন নায়িকা? তিনি বলেন, “ভালই লাগছে। এটাও ভেবে খুশি হচ্ছি যে পুজোর কয়েকটা দিন একটু ছুটি পাব। কারণ ছুটি না পেলে তো বাড়িতেও তেমন ভাবে যেতে পারি না। আর সত্যি বলতে প্রতি বার পুজোটা আমার ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই কেটে যায়। আর আমি ঘুমোলে কারও আমাকে ডাকার সাধ্য নেই।”
৯ বছর হল দাদুকে হারিয়েছেন অন্বেষা। তবে এত বছর পরেও দুর্গাপুজোয় দাদুর অনুপস্থিতি বেশ টের পান তিনি। অভিনেত্রী বলেন, “একটা ফাঁকা জায়গা থেকেই গিয়েছে। তবে সেই জায়গা প্রতি বছর কিছুটা হলেও পূরণ করে আমার দাদা, ভাই-বোনেরা। সারা বছর ওদের ঠিকানা তো হয় বেঙ্গালুরু, না হয় পুনে। আর আমি কাজের সূত্রে কলকাতায়। তাই পুজোর কয়েকটা দিন সবাই এক জায়গায় হলে পুরনো স্মৃতির পাতা ঘাঁটতে ঘাঁটতে দারুণ হইহই করে কেটে যায় সময়টা।”
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।