Tapojit Mitra's Puja Plan

'চোখ চলেই যায়, কিন্তু তার বেশি কিছুই হয়নি', প্রেম থেকে পরিকল্পনা, পুজোর আড্ডায় অকপট তপোজিৎ

স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গেই জমে তপোজিতের পুজোর আড্ডা, চলে জমিয়ে ঠাকুর দেখা।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:৪৫
Share:

সংগৃহীত চিত্র।

বাংলা নেটপ্রভাবীদের মধ্যে অন্যতম তিনি। বিভিন্ন ধরনের ‘কন্টেন্ট’ বানিয়ে অল্প সময়েই নজর কেড়েছেন। সেই সমাজমাধ্যম তারকা তপোজিৎ মিত্রকে পুজোর আড্ডার জন্য ফোনে ধরল আনন্দবাজার ডট কম।

Advertisement

পুজো প্রায় দরজায় কড়া নাড়ছে। আর ক’দিন পরেই মহালয়া। কত দূর পুজোর পরিকল্পনা হল জানতে চাইলে তপোজিৎ বললেন, “আমার পুজোর পরিকল্পনা প্রতি বছর একই থাকে, স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে বেরোই। বড় হয়েছি, চাকরি-বাকরি পেয়ে সবাই এক এক জায়গায় চলে গিয়েছি। খালি এই পুজোর সময়টা এক সঙ্গে সময় কাটানোর অবকাশ পাই। সবাই এই সময়টাতেই কলকাতায় আসে। দু’দিন বেরোই, চুটিয়ে মজা করি, ওরা আসে বলেই আমার পুজোর মজা। নইলে আমার আলাদা করে পুজোয় কোনও পরিকল্পনা থাকে না।” তিনি এ-ও জানান যে এক দিন তিনি বাবা-মায়ের সঙ্গে বেরোন। কিন্তু সে দিন কোনও ঠাকুর দেখেন না। বরং সিনেমা দেখেন, বাইরে মধ্যাহ্নভোজ সারেন, ব্যস এটুকুই।

আজকাল ভিডিয়োর হাত ধরে জনপ্রিয় মুখ তিনি। নিশ্চয় কোনও বদল এসেছে পুজোর আমেজ, মজাতেও? তপোজিতের সহজ জবাব, “হ্যাঁ, এটা ঠিক যে অনেকে আসেন, ছবি তোলেন, কথা বলেন। তবে, পরিবর্তন কিছু আসেনি তেমন। আমি পুজোটা একই রকম ভাবে কাটানোর চেষ্টা করি। পুজোর সঙ্গে ওটাকে মেলাতে দিইনি। আগেও বন্ধুদের সঙ্গেই ঠাকুর দেখতাম, এখনও দেখি। খালি আগে কেউ এসে কথা বলতেন না, এখন আসেন।”

Advertisement

পুজোয় কেবল স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গেই আড্ডা, ‘বেরু বেরু’র পরিকল্পনা? নাকি ‘কন্টেন্ট ক্রিয়েশন’-এর দুনিয়ার বন্ধুদের সঙ্গেও আড্ডা জমবে? “না, ওদের সঙ্গে কখনও কোনও পরিকল্পনা হয় না। ওদের একটা আলাদা গ্রুপ আছে, আমার একটা আলাদা গ্রুপ আছে। সত্যি বলতে ‘কন্টেন্ট ক্রিয়েশন’-এর দুনিয়ার কোনও ‘বাডি’ নেই আমার। কোনও ইভেন্টে দেখা-সাক্ষাৎ হল, ‘কী রে কেমন আছিস’ জিজ্ঞেস করলাম, ব্যস অতটুকুই। ভাল আলাপচারিতা আছে, কিন্তু পুজোয় বেরোনোর মতো অত সখ্যতা নেই। আমাদের ওই ৭-৮ জনের বন্ধুত্ব এমন যে আর কিছু লাগে না”, মত তপোজিতের।

পুজোর পরিকল্পনা যখন সারা তাও এত পরিপাটি ভাবে তা হলে নিশ্চয় কেনাকাটাও হয়ে গিয়েছে? হেসে এই নেটপ্রভাবীর জবাব দেন, “হ্যাঁ, তা হয়েছে। আমার মা-বাবা একটু আগে থেকে কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন। দু’জনে গিয়ে এক বারে সবার জন্য কিনে এনেছেন। পরিবারের বাকিদের সঙ্গে আমার জন্যও এনেছে কিছু, আমিও কিছু কিনেছি টুকটাক।” কী কী রয়েছে তবে এ বার তপোজিতের পুজোর সাজের ঝুলিতে? প্রশ্ন শুনেই খানিক ইতস্তত করে তিনি জানালেন, “আমি না এমন একজন, যে ফ্যাশনের সম্পর্কে একে বারেই ওয়াকিবহাল না। খুবই সাদামাটা জিনিসপত্র। আমার কুর্তা পরতে খুব ভাল লাগে, মানে পাঞ্জাবির থেকেও বেশি। মা-বাবা ২-৩টে কুর্তা দিয়েছে, কয়েকটা টিশার্ট, ইত্যাদি হয়েছে, যার মধ্যে আমি কয়েকটা আবার পরেও ফেলেছি। আর একটা জিনিস, যেটা আমার ভীষণ পছন্দের সেটা হল জুতো। কিনেছি, আরেকটা কেনার ইচ্ছে আছে।”

বড় হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখা, রাত জেগে প্যান্ডেল হপিং, আড্ডা, বাইরে খাওয়া-দাওয়া যতই যাই হোক, ছোটবেলার পুজোর একটা আলাদাই মিষ্টি সুবাস থাকে। অন্য রকম রঙিন ছিল দিনগুলি। তপোজিতের কাছে তেমন ভাবেই ছোটবেলার পুজোর স্মৃতি বলতে কী মনে পড়ে জানতে চাইলেই তিনি বলেন, “ছোটবেলায় পুজো আসলে মনে হতো যে সব ঠিক হয়ে যাবে একদম। আর কোনও চাপ নেই। কিন্তু বড়বেলায় মাথায় এটা চলতে থাকে যে না, আবার একই লুপের মধ্যে চলতে হবে। সেই সারল্যটা আর নেই। এটাই মিস্ করি।”

ছোটবেলা হোক বা বড়বেলা, ‘পুজো আসছে’ এই গন্ধটা একাধিক জিনিসের হাত ধরে যেন আমাদের কাছে পৌঁছে যায়। কারও কাছে সেটা পুজোর কেনাকাটা, তো কারও কাছে আবার পেঁজা তুলো মেঘ, শিউলি, ইত্যাদি। তবে তপোজিৎ বিশ্বাস করেন ‘পুজো আসছে’ এটা অনুভূতির বিষয়, কোনও নির্দিষ্ট জিনিসের হাত ধরে এই উপলব্ধি আসে না। বললেন, “এটা আসলে অনুভূতির একটা বিষয়। এই ‘আসছে আসছে’ সময়টা এমন একটা সময়, যেটা প্রতিটি বাঙালির মনে কাজ করে। এতে একটা ব্যাপার আছে, একটা ম্যাজিক্যাল ব্যাপার আছে। বাতাসে থাকে বিষয়টা। অনুভব করার মতো একটা জিনিস।”

আর পুজোর প্রেম? কখনও প্রেম প্রস্তাব, অঞ্জলির ফাঁকে আড়চোখে তাকানো কিংবা ফুল ছোঁড়া হয়েছে নাকি? প্রশ্ন শুনেই খানিক আক্ষেপের সুরে তিনি বললেন, “এইটা না ২৫ বছরের মধ্যে আমার এখনও অভিজ্ঞতা হয়নি সত্যি বলতে। তবে হ্যাঁ, চোখ তো যায়। বন্ধুদের মধ্যে গসিপ্ চলে, কারণ আমাদের বন্ধুদের গ্রুপে বেশির ভাগ সকলেই সিঙ্গল। চোখ চলে যায় ওটুকুই, কিন্তু আলাদা করে পুজোর প্রেম হয়ে ওঠেনি। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে পুজো উপভোগ করি না। সেটা কিন্তু যথেষ্টই উপভোগ করি। তবে এটা হলে হয়তো আলাদা কিছু হতো।”

দেবীর আগমন ঘটল বলে। আর সপ্তাহ দেড়েকের অপেক্ষা। কী প্রার্থনা থাকবে এ বার? তপোজিতের কথায়, “যে পেশাকে বেছে নিয়েছি সেটা যেন ভবিষ্যতে আরও বড় হয়, মানুষকে যেন আরও ভাল, বেশি করে বিনোদন দিতে পারি। দেবী যেন আরও ভাল ভাল কন্সেপ্ট ভাবার শক্তি দেন। আর সবাই ভাল থাকুক, সুস্থ থাকুক এটাই।”

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement