Hiya Mukherjee's Puja Plan

পুজোয় রোজ মায়ের মুখ দর্শন না করলে আমার দিন কাটে না: হিয়া মুখোপাধ্যায়

এখনও হয়নি পুজোর কেনাকাটা, তবে হিয়ার পছন্দের ঝুলিতে থাকবে শাড়িই। সঙ্গে আর কী?

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:৩৯
Share:

সংগৃহিত চিত্র

‘কোর্টের ভিতর আমার মুখ চলে, আর কোর্টের বাইরে হাত’, পর্দায় তাঁর মুখেই যতই এই আগুন ঝরানো ‘বাণী’ শোনা যাক না কেন, আদতে তিনি কিন্তু যারপরনাই শান্ত। কার কথা বলছি নিশ্চয় বুঝে গিয়েছেন? হ্যাঁ, ‘গীতা এলএলবি’ ওরফে হিয়া মুখোপাধ্যায়ের। বর্তমানে তিনি ধারাবাহিকের শ্যুটিং নিয়ে দারুণ ব্যস্ত। তার ফাঁকেই আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে পুজোর আড্ডা জমালেন।

Advertisement

পর্দায় এখন তিনি গর্ভবতী। তার মধ্যেই কেস সামলাচ্ছেন, ফলে পুজো পুজো গন্ধ ঠিক এখনও ধারাবাহিকে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু বাস্তবে কি পুজো নিয়ে কোনও পরিকল্পনা হল হিয়ার? কী ভাবে কাটাবেন ৪ দিন? প্রশ্ন শুনেই অভিনেত্রীর সহজ জবাব, “আমার প্রতি বছর একই পরিকল্পনা থাকে।” কী সেটা? গীতা জানালেন, “সত্যি বলতে আমরা তো ছুটি পাই না তেমন, এই ৪-৫ দিন খালি ছুটি। এই কটা দিন আমি বাড়িতে ভীষণ কম থাকি। ওই বড় জোর দিনে ১-১.৩০ ঘণ্টা হয়তো। খালি সাজগোজ করতে আসি। সারা দিনই বাইরে। রাতে যেহেতু কাজ থাকে, ওই শো, উদ্বোধন এ সব থাকে বলে সকালবেলা থেকে আমি বেরিয়ে পড়ি।”

হিয়া জানালেন, এই সময় তিনি পারলে ব্রেকফাস্টের সময় একজনদের সঙ্গে, লাঞ্চ আরেকজনদের সঙ্গে দেখা করে সময় ম্যানেজ করেন। বললেন, “মায়েদের নিয়েও বেরোই। বিকেলের যত ক্ষণ পর্যন্ত পারি ঘুরে নিই, তারপর সন্ধ্যা থেকে ফের ব্যস্ত হয়ে যাই।” তার মানে বেশ জমিয়েই ঠাকুর দেখা হয়! কথা শেষ হতে না হতেই নায়িকা বললেন, “হ্যাঁ, ভীষণ। আগে কী হতো, গোটা শহরে যে কটা ঠাকুর হতো সব দেখে ফেলতাম। এক দিন উত্তর কলকাতায় যেতাম, তো এক দিন দমদম, আরেক দিন দক্ষিণে। এ ভাবে সব ঠাকুর দেখতাম। এখন আর সত্যি বলতে অত ভিড়ে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু হ্যাঁ, যতটা পারি দেখি। মায়ের মুখ দর্শন না করলে আমার দিন কাটে না।”

Advertisement

ঠাকুর দেখার পাশাপাশি কি কবজি ডুবিয়ে ভূরিভোজ হয়? নাকি সেখানে ডায়েট ‘জুজু’ ভয় দেখায়? অভিনেত্রী জানালেন তিনি নাকি সারা বছরই ডায়েট করেন না, ফলে এই সময় তো সেটার প্রশ্নই ওঠে না। তা হলে এত ছিপছিপে চেহারা কী ভাবে বজায় রাখতে পারছেন? হিয়ার জবাব, “কী জানি, মনে হয় আমার বাবার থেকে। আমার বাবার চেহারাও এমন।” কথা প্রসঙ্গে এদিন অভিনেত্রী জানালেন তিনি নাকি ছোটবেলার মতো এখনও কোন দিন কী খাবেন সেটা আগে থেকেই স্থির করে রাখেন।

পুজো নিয়ে যখন এত পরিকল্পনা হয়েই গিয়েছে তখন নিশ্চয় কেনাকাটাও সারা? প্রশ্ন শুনেই যেন একটু মন খারাপ হল হিয়ার। প্রায় কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন, “কেনাকাটা এখনও হয়নি। ১৭ তারিখ ছুটি আছে, ওই সময় করব।” পুজোর ফ্যাশন বলতে হিয়ার কাছে কেবলই শাড়ি। “শাড়ি পরতে ভীষণ ভালবাসি। সারা বছরই আমি শাড়ি পরি, এই সময় আরও। আমি গিয়েই কেনাকাটা করি। আমি যেখান যেখান থেকে কেনাকাটা করি সেখানে বলাই থাকে, ওরা গেলেই আমার কী পছন্দ, কী অপছন্দ সেটা জানে, সেই মতো বের করে দেখায়। ওখান দিয়ে দেখা কিনে চলে আসি” জবাব নায়িকার।

পর্দায় তাঁকে এখন এক ঝলক দেখার জন্য মুখিয়ে থাকেন তাঁর অনুরাগীরা। তাঁর সংলাপ তো দারুণ হিট! অল্প সময়ে এত নাম-ডাক, খ্যাতির ভিড়েও কি ছোটবেলার পুজোর কথা মনে পড়ে? কোন স্মৃতি আজও ভীষণ রকম টাটকা হিয়ার? গল্প করতে করতেই জানালেন, তিনি তাঁর মাসি-মেসোর সঙ্গে ঠাকুর দেখতে যাওয়া খুব মিস্ করেন। বললেন, “মেসো, মামা এঁদের হাত ধরে আমি ঠাকুর দেখতে যেতাম। ওঁরা দুটো চেপে ধরে রাখতেন, গলায় মনে হয় একটা জলের বোতল ঝুলত, আর আমি ওঁদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে যেতাম। গোটা পরিবার মিলে ঠাকুর দেখতে যেতাম আমরা। এটা আমার মনের খুব কাছের একটা স্মৃতি যেটা আর পাব না আমি। মেসো, মাসি এখন কেউই নেই আর। আমি যে এই বলছি না পুজোয় বেরোনো সেটা আমার মেসোর জন্যই শুরু হয়েছে। মেসোই ঘোরাতেন সারা কলকাতা। ওদের খুব মিস্ করি। এখন ওদের ছাড়াই যেতে হয়।”

আর প্রেম? মানে পুজোর প্রেম? অঞ্জলির ফাঁকে দেবীর বদলে পছন্দের মানুষের দিকে ফুল ছোঁড়া, পাশাপাশি দাঁড়িয়ে অঞ্জলি দেওয়া কি হয়েছে? এ বারও আক্ষেপের সুর নায়িকার গলায়। বললেন, “প্রেম জিনিসটা আমার জীবনে একদমই নেই। মানে একদম-ই নেই। আমি জানি না, আমায় কেউ কোনও দিন বলেনি, আমায় দেখে কেউ ফুলও ছোঁড়েনি, আমার পিছনে কেউ ঘোরেনি। কিচ্ছু হয়নি।”

প্রেম না হোক, প্রার্থনা থাক ভরে। দেবীর কাছে এ বার হিয়ার চাওয়া, “মায়ের সব স্বপ্ন পূরণ হোক। ছোট থেকে আমার ওটাই ইচ্ছে, অভ্যাস যে মায়ের স্বপ্ন পূরণ করব। আর মা-বাবা ভাল থাকুন। তার পরে প্রত্যেকটি মানুষ ভাল থাকুন। আমার নিজের জন্য কিছু চাওয়ার নেই। সবাই ভাল থাকলেই আমরা ভাল থাকব।”

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement