করবা চৌথে মহিলারা দীর্ঘ সময় নির্জলা উপবাস করেন। এই উপবাস শরীরের জন্য কঠিন হতে পারে। তাই, উপবাস ভাঙার সময় সঠিক খাদ্য গ্রহণ করা খুব জরুরি। ভুল খাবার খেলে শরীর অসুস্থ হতে পারে।
উপবাস ভাঙার সময়েই মহিলারা জল পান করেন। এটা ভাল পদ্ধতি। বস্তুত, উপবাস ভাঙার পর প্রথমেই জল পান করে শরীরের আর্দ্রতা বা ওয়াটার লেভেল ঠিক করতে হবে। সামান্য জলের পর অল্প করে মিষ্টি জাতীয় খাবার বা প্রসাদ খাওয়া যেতে পারে।
আসলে দীর্ঘ ক্ষণ জল না খাওয়ায় শরীর ডিহাইড্রেশন বা জল শূন্যতায় ভোগে। তাই, প্রথমেই জল, ডাবের জল বা লেবুর জল খাওয়া উচিত। এটি হজম প্রক্রিয়াকে ধীরে ধীরে সক্রিয় করতে সাহায্য করে। এক সঙ্গে বেশি জল খাবেন না।
উপবাস ভাঙার পরই সঙ্গে সঙ্গে ভারী খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন। প্রথমে ফলের রস বা ফ্রেশ জুস খান। আঙুর, আপেল বা কলা খেতে পারেন। ফলের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা বা সুগার দ্রুত শক্তি যোগায়।
উপবাস ভাঙার পরে কয়েকটি শুকনো ফল (ড্রাই ফ্রুটস) খান। খেজুর, কিশমিশ, কাজু বা আমন্ড অল্প পরিমাণে খেতে পারেন। এতে ফাইবার, শক্তি এবং গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি থাকে। এগুলি শরীরকে তাৎক্ষণিক শক্তি (এনার্জি) দেয়।
জল ও ফল খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে হালকা খাবার খান। মিষ্টির বদলে টক দই বা রায়তা খেতে পারেন। অল্প পরিমাণে স্যান্ডউইচ বা সুজির উপমাও খাওয়া ভাল। এটি পেটের জন্য আরামদায়ক হবে।
হালকা স্ন্যাকস খাওয়ার অন্তত এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর ডিনার করুন। খুব বেশি মশলাদার বা তেলযুক্ত খাবার খাবেন না। সহজপাচ্য খাবার বেছে নিন। যেমন, রুটি/ভাত, ডাল, এবং হালকা সবজির তরকারি।
উপবাস ভাঙার পর কখনওই এক বারে পেট ভরে খাবেন না। এক সঙ্গে বেশি খাবার খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। অল্প অল্প করে খান এবং কিছু ক্ষণ পর আবার খান। ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবার গিলুন।
চা বা কফি (ক্যাফেইন) বেশি পরিমাণে খাবেন না। এটি অ্যাসিডিটি বা বুক জ্বালার সমস্যা বাড়াতে পারে। এক বারে অনেক মিষ্টি বা চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া ঠিক নয়। এতে দ্রুত সুগার লেভেল বাড়ে, যা পরে ক্লান্তি আনতে পারে।
এক বারে বলতে গেলে বলতে হয়, উপবাস ভাঙার পর ধীরে ধীরে খাবার খাওয়া শুরু করুন, জল বা জুস দিয়ে। এর পর ফল বা শুকনো ফল খান। কিছু ক্ষণ পর হালকা স্ন্যাকস নিন। রাতে স্বাভাবিক ও হালকা ডিনার করুন। এই নিয়মগুলি মেনে চললেই করবা চৌথের উপবাস ভাঙার পর শরীর সুস্থ থাকবে এবং দ্রুত ক্লান্তি দূর হবে। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)