প্রতীকী চিত্র।
আলোর উৎসব দীপাবলি। সেই আলো, আনন্দ যাতে কারও কাছেই নিরানন্দের কারণ না হয়, সে দিকে নজর রাখা সকলেরই সামাজিক কর্তব্য ও দায়বদ্ধতার মধ্যে পড়ে। এ ক্ষেত্রে বিশেষ করে পোষ্যদের উল্লেখ করতেই হয়। প্রশাসনের তৎপরতায় শব্দবাজির দাপট আগের তুলনায় কমলেও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। তা ছাড়া, বাজি পোড়ালে দূষণ কিছুটা তো হয়ই, তা সে যতই গ্রিন ক্র্যাকার বা সবুজ বাজির ব্যবহার বাড়ুক না কেন। এই প্রেক্ষাপটে বাড়ির পুষ্যি বিড়াল, কুকুর, খরগোশ থেকে শুরু করে টিয়া, কাকাতুয়া - সকলের দিকেই বাড়তি নজর দিতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে পোষ্যের মালিক ও পশুপ্রেমীদের উদ্দেশে কিছু বার্তা ও পরামর্শ দিয়েছেন চোপড়া প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পশু চিকিৎসক সোহম সামন্ত। তিনি জানান, উৎসবের মরশুমে অনেকেই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ফলে পোষ্যকে সময় কম দেওয়া হয়। এতে অবলা প্রাণীগুলির মধ্যে মানসিক চাপ ও অস্থিরতা তৈরি হয়। তাই উৎসবের আনন্দ ও ব্যস্ততার মধ্যেও ওদের জন্য় সময় বার করতে হবে এবং ওদের সঙ্গে সময় কাটাতে হবে।
কালীপুজোর সময়ে যতটা সম্ভব পোষ্যকে ঘরের ভিতরে আগলে রাখতে হবে। যাতে কানে বাজির শব্দ কোনও ভাবে এলেও ওরা ভয় না পায়। দূরে রাখতে হবে পোড়া বাজির ধোঁয়া থেকেও। তাই খেয়াল রাখতে হবে, এই সময়টুকু অন্তত ওরা যেন ওদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলের বাইরে না বেরিয়ে পড়ে।
পোষ্য যদি বয়সে খুব ছোট বা বৃদ্ধ হয়, তা হলে নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হতে পারে। যেমন - কানের সমস্যা, নার্ভের সমস্যা, মস্তিষ্কজনিত সমস্যা প্রভৃতি। বাজির শব্দ এ সব ক্ষেত্রে পরবর্তীতে রোগ বা অসুখ সৃষ্টি করতে পারে। তাই, পোষ্যের এই ধরনের কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, থাকলে তার জন্য কী ধরনের ওষুধ খেতে হবে, সেই বিষয়ে অবশ্যই আগে থেকে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এই সমস্ত ক্ষেত্রে সাধারণত, মাল্টি-ভিটামিন, নার্ভের ওষুধ প্রভৃতি প্রয়োজন মতো পোষ্যকে দেওয়া হয়।
সর্বোপরি, এই বিষয়গুলি নিয়ে সকলেই যাতে সচেতন হন, তার জন্য প্রয়োজনীয় প্রচার, আলাপ-আলোচনা দরকার। পোষ্যের মালিকরা ব্যক্তিগত পরিসরে অথবা পশুপ্রেমীরা সামাজিক ভাবে এই কাজ করতে পারেন। তা হলেই দীপাবলির মতো ঝলমলে একটি উৎসব পোষ্যদের জীবনেও আনন্দ নিয়ে আসবে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।