প্রতীকী চিত্র
শরৎ আসে। উৎসবের আগমনী সুর বেজে ওঠে ঢাকের তালে। দেবী দুর্গা ঘরে ফেরেন তাঁর চার সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে। সঙ্গে আসে একরাশ আনন্দ আর খুশির বার্তা। দিনগুলো যেন চোখের পলকে কেটে যায়। এক একটা দিন নতুন নতুন শাড়ি, নতুন পাঞ্জাবিতে সেজে ওঠে শহর থেকে গ্রাম। সারা বছর ধরে যে অপেক্ষা, তা যেন এক লহমায় ফুরিয়ে যায়। দেবী দুর্গা এই দশ দিন সমস্ত দুঃখ, কষ্ট, বিষাদ দূরে সরিয়ে রাখেন। কিন্তু দশমীর দিন যেন এক বিষাদময় সুর ছেয়ে ফেলে চার পাশ। সিঁদুর খেলার পরে বিদায়ের সুর, চোখের কোণে এক চিলতে জল।
প্রথমেই থাকে নিরঞ্জনের বিধি। প্রতিমা বা ঘট সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় গঙ্গা বা কোনও পবিত্র জলাশয়ে। সেখানে বিসর্জন মন্ত্র উচ্চারণ করা হয়—“যান্তু দেবগণাঃ সর্বে পূজামাদায় মামকিম…”—এই মন্ত্রেই দেবীকে জানানো হয় বিদায়, যাতে তিনি পুনরায় ফিরে আসেন আগামী বছরে। প্রতিমা ঘাটে পৌঁছনোর আগেই অর্পণ করা হয় ফুল, ধূপ, দীপ, অক্ষতা– শেষ মুহূর্তের নিবেদন। এই সময়ে চার পাশে শঙ্খধ্বনি আর ঢাকের বোলে যেন বিষাদের রেশ মিশে থাকে।
দশমীর দিনে থাকে আরও এক বিশেষ রীতি, সিঁদুর খেলা। নারীরা, বিশেষ করে বিবাহিতারা দেবীর গায়ে সিঁদুর ছোঁয়ান, নিজেরাও সিঁদুর খেলেন, প্রণাম করেন। তার পরেই বাজতে শুরু করে শঙ্খ, ঢাক আর ঢোল। শুরু হয় বিদায় যাত্রা।
গৃহস্থ পূজায় ঘট ভাসানোর চলও বহুকাল ধরে চলে আসছে। নির্দিষ্ট জলাশয়ে ঘটের জল ঢেলে দেওয়া হয়, দেবতাকে বিদায় জানানো হয় সম্মানের সঙ্গে। পুজোর সমাপ্তিতে সবাই প্রসাদ গ্রহণ করেন, পুরোহিতকে দক্ষিণা দেন, হাতজোড় করে প্রণাম জানান আরাধ্য দেবতাকে।
আজকাল পরিবেশ রক্ষার ব্যাপারে সবাই অনেকটাই সচেতন। তাই বহু জায়গাতেই এখন পরিবেশবান্ধব প্রতিমা তৈরি করা হয়, যাতে বিসর্জনের পরে গঙ্গা বা অন্য কোনও জলাশয়ে দূষণ না ছড়ায়। এই সময়ে একটি বিশেষ ঘটও নিরঞ্জন করা হয়, যার মধ্যে দিয়ে দেবতাকে বিদায় জানানো হয়।
দেবী দুর্গা ফিরে যান। কিন্তু সেই ফিরে যাওয়ায় থাকে এক নতুন প্রত্যাশা, নতুন অপেক্ষা– আবার এক নতুন বছরের জন্য, নতুন করে দুর্গা পুজোর জন্য। সেই অপেক্ষা, যা বাঙালিকে বাঁচিয়ে রাখে। এই বিদায় শুধু এক বিসর্জন নয়, এক নতুন আগমনীর ইঙ্গিত।
‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।