Mahabharata and Goddess Kali

ভদ্রকালী থেকে বলিপ্রিয়া, কী ভাবে কালী প্রসঙ্গ এসেছে মহাভারতে?

কালী ছাড়া যেমন ভারত অসম্পূর্ণ, তেমনই কালী ব্যতীত মহাভারতও সম্পূর্ণ হতো না। মহাভারতে কালীর কথা এসেছে বারে বারে।

Advertisement

সৌভিক রায়

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৪৭
Share:

প্রতীকী চিত্র।

কাল-কে যিনি ধারণ করেন, তিনিই কালী। কাল হলেন মহাকাল শিব। আবার কাল শব্দের আর এক অর্থ সময়। দশমহাবিদ্যার প্রথম দেবী কালী সময়কে ধরে রেখেছেন। কালীই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছেন। ভারতের মহান মহাকাব্যিক আখ্যান মহাভারতে তিনি থাকবেন না? কথায় বলে, যা নেই মহাভারতে, তা নেই ভারতে। কালী ছাড়া যেমন ভারত অসম্পূর্ণ, তেমনই কালীর বিহনে মহাভারতও সম্পূর্ণ হতো না। মহাভারতে বার বার এসেছে কালীর প্রসঙ্গ।

Advertisement

মহাভারতের একাধিক পর্বে দুর্গাস্তোত্র পাঠ করার নজির রয়েছে। ভীষ্মপর্বে অর্জুন দুর্গাস্তোত্র পাঠ করেছিলেন। অর্জুনের দুর্গা স্তবে ভদ্রকালী ও মহাকালীর উল্লেখ রয়েছে, “নমস্তে সিদ্ধসেনানি আর্যে মন্দরবাসিনী।/ কুমারি কালী কাপালি কপিলে কৃষ্ণপিঙ্গলে।।/ ভদ্রকালী নমস্তুভ্যম্ মহাকালী নমোস্তুতে।/ চণ্ডীচণ্ডে নমস্তুভ্যম্ তারিণী বরবর্ণিনী।।” কৌশিকী, কৈটভনাশিনী-র উল্লেখ রয়েছে এই স্তোত্রে। তাঁরা তো কালীরই রূপ।

মহাভারতের নবম পর্ব অর্থাৎ শল্য পর্বে দেবী কালীর উল্লেখ রয়েছে। সমসময়ে ভারতে পূজিতা মাতৃশক্তিদের উল্লেখ রয়েছে এই পর্বে। এসেছে ভদ্রকালী এবং দেবী কালিকার প্রসঙ্গও।

Advertisement

কালীকে বলিপ্রিয়া বলা হয়। মহাভারতের বিরাট পর্বে অজ্ঞাতবাসের সাফল্য কামনায় যুধিষ্ঠির দুর্গাস্তব পাঠ করেছিলেন। সেই স্তোত্রে বলিপ্রিয়ার উল্লেখ আছে। মহাভারতে সৌপ্তিক পর্বে দেবী কালী যেন বলিপ্রিয়াই হয়ে উঠেছিলেন। বলি গ্রহণ করতে তিনি আবির্ভূতা হয়েছিলেন। সৌপ্তিক পর্বে অশ্বত্থামা যখন পাণ্ডব শিবিরে গভীর রাতে হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছেন, তখন দেবী কালীর আবির্ভাব ঘটছে।

বহু যোদ্ধাকে রুদ্রাস্ত্র ও খড়্গের আঘাতে হত্যা করছেন অশ্বত্থামা। পাণ্ডব শিবিরের রক্ষীরা দেখলেন রক্তবদনা, রক্তবসনা, রক্তমাল্যধারিণী, পাশহস্তা, কালরাত্রিরূপা কালীকে। কালী গান করছেন। যোদ্ধাদের এবং হাতি, ঘোড়ার মতো পশুদের আত্মা সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন কালী। এ ঘটনার আগে থেকে পাণ্ডব শিবিরের রক্ষীরা প্রতি রাতে কালী এবং সংহারে-উন্মত্ত অশ্বত্থামাকে স্বপ্নে দেখতেন। চিরজীবী অশ্বত্থামা স্বয়ং শিবের অবতার। শিবের আর এক নাম কাল এবং তাঁর স্ত্রী কালী। বলা হয়, ‘কাল শিবহ্। তস্য পত্নতি কালী।’ এ ভাবেই কালী ও অশ্বত্থামা কাহিনির সঙ্গে মিলে যায় কাল ও কালী তত্ত্ব। সেই সমাপতনের সাক্ষী মহাভারত।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement