প্রতীকী চিত্র
শারদ উৎসবের এই ক’টা দিনে যেন জীবন নতুন করে সেজে ওঠে। আকাশে-বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ, আর সেই আনন্দের মাঝেই বাংলার আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা কত গল্পই না সামনে আসে! তেমনই এক অদ্ভুত আখ্যান জড়িয়ে আছে ময়নাগুড়ির খয়ের খাল অঞ্চলের ‘মা গোসানি’কে ঘিরে। তিনি দুর্গা, কিন্তু তাঁর পুজো হয় শুধু নবমীর দিনে, আর তাঁর বাহন কিন্তু সিংহ নয়, বাঘ!
গল্পের শুরুটা আজ থেকে বহু বছর আগে, তখন দেশে ব্রিটিশ রাজত্ব। ময়নাগুড়ির প্রত্যন্ত গ্রাম খয়ের খালে পার্বতীচরণ এবং মহেন্দ্রনাথ রায় নামে দুই ভাইয়ের বাড়িতে এসেছিলেন এক সন্ন্যাসী। তিনি দুই ভাইয়ের হাতে তুলে দেন এক সোনার দুর্গামূর্তি, উচ্চতা মোটে তিন-চার ইঞ্চি। বিদায় নেওয়ার আগে সন্ন্যাসী বলে যান, যদি কখনও তিনি ফেরেন, তবে মূর্তি নিয়ে যাবেন। আর যদি না ফেরেন, তবে দুই ভাইকে এই দেবীমূর্তি প্রতিষ্ঠা করে নবমীর দিন পুজো করতে হবে। সন্ন্যাসী আর ফেরেননি, সেই থেকে খয়ের খালে শুরু হয় এই এক দিনের দুর্গাপুজো। তবে দেবী এখানে দুর্গা নন, পূজিতা হন ‘মা গোসানি’ নামে।
এই সোনার মূর্তির কিছু বিশেষত্ব আছে। দেবী দশভুজা হলেও, দু’হাতে ত্রিশূল ছাড়া বাকি হাতগুলি তাঁর নিরাস্ত্রই থাকে। লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক— কেউই থাকেন না এই পুজোয়। আর দেবীর বাহন, আগেই বলা হয়েছে, সিংহ নয়, বাঘ। রায় বংশের উত্তরসূরিদের মতে, স্বাধীনতার দু'বছর পরে মহানবমীর দিনে রাজেন রায় দেবীর প্রাণপ্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। তিনি দেবী গোসানির মন্দিরের সেবায়েত ছিলেন এবং সোনার মূর্তি রাখার জন্য মন্দিরে গোপন গর্ভগৃহও তৈরি করেছিলেন।
কিন্তু ডাকাত দলের নজর পড়ে সেই গোপন ডেরায়। মূর্তি লুঠ হয়ে যায়। পরে স্বপ্নাদেশ পেয়ে মূর্তি উদ্ধার হয় বটে, কিন্তু সেই ঘটনার পর থেকেই সোনার মূর্তি মন্দিরে আর রাখা হয় না। এখন গ্রামের নির্দিষ্ট কয়েকটি পরিবার পালা করে এই পুজো করেন, এবং যে বছর যার পালা পড়ে, গোটা বছর সোনার মূর্তি তাঁর তত্ত্বাবধানেই থাকে। মূর্তি কোথায় রাখা আছে, তা কমিটির সদস্য ছাড়া আর কেউই জানতে পারেন না।
দশমীর দিনে মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে দিয়ে দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয় না, বরং নিয়ে যাওয়া হয় সেই গোপন ডেরায়, কড়া পুলিশি পাহারায়। আগে বলি প্রথা থাকলেও এখন আর পশু বলি হয় না।
‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।