Tarpan by daughters

মা বা বাবা, কেউ এক জন জীবিত থাকলে মেয়ে কি তর্পণ করতে পারে না? কী বলছেন লেখক ও শিক্ষিকা রোহিণী ধর্মপাল

পুরাণ অনুযায়ী মানুষের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে তার উপরে তিন প্রকার ঋণ বর্তায়। সেগুলি হল পিতৃঋণ, দেবঋণ এবং ঋষিঋণ। তার মধ্যে সবার উপরে হল পিতৃঋণ।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:০৮
Share:

প্রতীকী চিত্র

পুরাণ অনুযায়ী মানুষের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে তার উপরে তিন প্রকার ঋণ বর্তায়। সেগুলি হল পিতৃঋণ, দেবঋণ এবং ঋষিঋণ। তার মধ্যে সবার উপরে হল পিতৃঋণ। এই পিতৃঋণ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তর্পণ করা অত্যন্ত জরুরি। পিতৃপক্ষের শেষে মহালয়ার ভোরে পুত্রসন্তানেরা বহু দিন ধরে তর্পণের দায়িত্ব পালন করে আসছে। কিন্তু আদতে শাস্ত্রে নারীদের তর্পণ করার বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।

Advertisement

প্রাচীন গরুড় পুরাণেই বর্ণিত আছে, পবিত্র মনে যদি কোনও নারী তর্পণ করে, তা হলে সে পিতৃঋণের পরিপূর্ণ ফল পায়। অর্থাৎ নারীরাও এই কাজ করতে পারে, পুত্রসন্তানের অনুপস্থিতিতে।

তবে সমাজে এখনও এক প্রশ্ন ঘুরে বেড়ায়— মা বা বাবা কেউ এক জন জীবিত থাকলে কি তর্পণ করা যায় না? বিশেষত যদি বাবার মৃত্যু হয় আর মা বেঁচে থাকেন, তবে সন্তান, বিশেষত কন্যা কি তর্পণ করতে পারে না?

Advertisement

এই প্রশ্ন নিয়েই মুখ খুললেন লেখক ও শিক্ষিকা রোহিণী ধর্মপাল। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “যত জটিলতা বাড়বে, ততই ধর্মব্যবসার সুবিধে হবে। ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যাতে মানুষ ভাবে— যদি কোনও ভুল হয়, পরিবারের ক্ষতি হবে। অথচ তর্পণের আসল অর্থ তো মা-বাবাকে, পূর্বপুরুষদের স্মরণ করা।”

রোহিণী জানান, ছেলে-মেয়ে— দু’জনের ক্ষেত্রেই সমান অধিকার। এমনকী রূপান্তরকামীদেরও এই অধিকার অস্বীকার করা যায় না। রোহিণীর কথায়, “নিজের পরিচয়টা রূপান্তরকামীরা সে ভাবে দিতে চায় না। সে তো ভিতরে অন্য রকম। তাদের ক্ষেত্রে কী হবে? তারা কি তর্পণ করতে পারবে না? এ রকম প্রশ্ন উঠে আসে। তা নিয়ে তো আমরা ভাবি না। আমরা নারী-পুরুষ নিয়ে বড্ড বেশি ভাবি। কিন্তু তার বাইরেও যে একটা মস্ত বড় জায়গা আছে, তাদের ক্ষেত্রে তা হলে কী নিয়ম?”

দিনক্ষণ নিয়েও রোহিণীর মত একেবারে আলাদা। শ্রাদ্ধ হোক বা বিবাহ, তিনি ও তাঁর দল কোনও নির্দিষ্ট তারিখ মানেন না। রোহিণী বলেন, “ভালবাসা থাকলে তর্পণের নির্দিষ্ট দিন বলে কিছু হয় না। সুবিধে মতো সময়ে স্মরণ করলেই তা গ্রহণযোগ্য।”

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement