Mahalaya Significance

মহালয়া আসলে এক প্রকার শ্রাদ্ধ! কী ব্যাখ্যা রয়েছে শাস্ত্রে?

মহালয়া ঋণ পরিশোধের বার্ষিক কিস্তি দানের দিন। মহালয়া কেবল প্রথা নয়, এটি একটি আবেগও বটে; যেখানে মৃত্যুর পরেও প্রজন্মের সাথে প্রজন্মের কর্তব্যের বন্ধন থাকে।

Advertisement

তমোঘ্ন নস্কর

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:০৬
Share:

প্রতীকী চিত্র

"আব্রহ্মস্তম্ব পর্যন্তং জগৎতৃপ্যতু" অর্থাৎ ব্রহ্ম থেকে শুরু করে সমগ্র বিশ্বের যা কিছু সবই তৃপ্ত হোক। মহালয়ার ভোর নদী বক্ষে, বা পুকুরে হাতে জল নিয়ে মানুষ, পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করেন। এই তর্পণ কী কেবলই পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে? না, কেবল ওটুকু নয়। আসল কথাটি তো এই মন্ত্রেই নিহিত রয়েছে। ব্রহ্ম থেকে শুরু করে সমগ্র বিশ্বের যা কিছু অর্থাৎ পিতৃগণকে কেন্দ্র করে দেব, ঋষিগণ সহ সমগ্র বিশ্ব চরাচরের যা কিছু জীবিত, যার মধ্যেই ব্রহ্ম আছে; তাদের সবার তৃপ্তি বিধানের উদ্দেশ্যে কল্যাণ কামনা করা হয়।

Advertisement

তবে কী আমরা এত দিন ভুল জানতাম? না। সব সময়ই পিতৃগণ উত্তরপুরুষের কাছে দেবতুল্য। স্বর্গতুল্য পিতৃলোকে তাঁদের নিবাস। তাঁদের থেকেই উত্তর পুরুষের অর্জন। সে বিজ্ঞানের জিনতত্ত্বই বলুন বা আপনার উপলব্ধি বোধ। প্রত্যেকেই পিতৃগণের কাছে চিরঋণী।

পূর্বপুরুষের থেকেই উত্তরপুরুষের বংশ ও গোত্র প্রাপ্ত হয়। এবং তাঁদের অংশেই অর্থাৎ ঔরসেই উত্তরপুরুষ শরীর পেয়ে জন্ম নেয় ধরাধামে। পিতৃপুরুষের আশীর্বাদ উত্তরপুরুষের কাছে সকল সময়ই ধনাত্মিকা এবং সম্বৃদ্ধি প্রদায়ক। পিতৃপুরুষ তৃপ্ত না হলে দেব পূুজোর পূণ্যও মাটি হয়।

Advertisement

সহজ কথায় বললে, মহালয়া এই ঋণ পরিশোধের বার্ষিক কিস্তি দানের দিন। মহালয়া কেবল প্রথা নয়, এটি একটি আবেগও বটে; যেখানে মৃত্যুর পরেও প্রজন্মের সাথে প্রজন্মের কর্তব্যের বন্ধন থাকে। স্মরণ থাকে অতীতের। শিকড়ের প্রতি যত্নবান হতে শেখায়।

আচ্ছা, ঋণ পরিশোধ! তা হলে সেই অর্থে শ্রাদ্ধ বোঝায় কি এটি? হ্যাঁ, সেই অর্থে মহালয়া শ্রাদ্ধ কর্ম বটে। কিন্তু তা ব্যপক অর্থে। মনে রাখতে হবে, শ্রাদ্ধ মানেই প্রেত শ্রাদ্ধ বা প্রেত কর্ম নয়। সে হল অশৌচান্ত এক দিষ্ট বা সপিন্ডকরণ। আর মহালয়া হল পার্বণ শ্রাদ্ধ। নান্দীমুখ, বৃদ্ধির মত পিতৃগণের উদ্দেশ্যে পার্বণ শ্রাদ্ধ আমাদের সকলের পরিবারেই বিয়ে, অন্নপ্রাশন, উপনয়নের মত শুভ কাজেও হয়।

সচরাচর পিতা- পিতামহ- প্রপিতামহকে আহ্বান করার পর মাতৃকুলের এক জনকে আহ্বান করা হয়। অর্থাৎ সমগ্র পিতৃপুরুষ তথা চরাচর এর গ্রহীতা। জগতের কল্যাণ কামনার্থে এক মহতী উদ্যোগ।

তথ্য ঋণ- শাস্ত্রকার শ্রী অরিজিৎ মজুমদার

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement