Bonedi Barir Jagadhatri Puja

হাওড়ার 'উকিলবাড়ি'র জগদ্ধাত্রী পুজোয় আজও অটুট ৩০০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্য

পুজোর সময় একত্রিত হন চট্টোপাধ্য়ায়ের পরিবারের সকল সদস্য।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৩৭
Share:

সংগৃহীত চিত্র।

হাওড়া জেলার জগৎবল্লভপুর ব্লকের অন্তর্গত রামপুরের চট্টোপাধ্যায় পরিবারে প্রায় ৩০০ বছর ধরে জগদ্ধাত্রী পুজো করা হচ্ছে। আজও নিষ্ঠা ভরে এবং আড়ম্বরের সঙ্গে এই পুজোর যাবতীয় রীতি-রেওয়াজ পালন করা হয়। এক সময়ের এই জমিদার পরিবার, যা এলাকায় 'উকিলবাড়ি' নামে সুপরিচিত, তাদের এই পুজো দুর্গোৎসবের থেকেও বেশি আনন্দের স্রোত বয়ে নিয়ে আসে পরিবারের সদস্যদের মধ্য়ে!

Advertisement

ঘট পুজো থেকে মূর্তি পুজোর সূচনা:

চট্টোপাধ্য়ায় পরিবারের ইতিহাস বলছে, প্রায় ৩০০ বছর আগে এই আয়োজন ঘট পুজোর মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। তার প্রায় এক শতাব্দী পর, পরিবারের সদস্য দেবেন্দ্রনাথ গোস্বামী চট্টোপাধ্য়ায়ের আমলে - আনুমানিক ১৯২ বছর আগে প্রথম দেবীর মৃন্ময়ী মূর্তি তৈরি করা হয় ও তাঁর পুজো শুরু হয়। জন্মাষ্টমীর পর থেকেই বাড়ির ঠাকুরদালানে প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু হয়ে যায়।

Advertisement

ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি:

চট্টোপাধ্য়ায় বাড়িতে পুরনো নিয়ম-রীতি মেনে পুজো সম্পন্ন হয়। যেমন -

পুজোর সূচনা: নবমীর সকালে দেবীঘট স্নানের মাধ্যমে পুজোর প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

একত্রিত পুজো: এই বাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোয় সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমীর পুজো একই দিনে অনুষ্ঠিত হয়।

কুমারী পুজো: এই দিনটিতে কুমারী পুজোও করা হয়।

বিসর্জন: এর পর দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।

উৎসবের মেজাজ ও মহাভোজ:

এই পরিবারের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৫৭ জন! পেশাগত জীবনে এঁদের অনেকেই আইনজীবী! জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় সকলে পৈতৃক বাড়িতে একত্রিত হন। সারা বছরের ব্যস্ততার পর এই পুজোই যেন পরিবারের সবথেকে বড় 'কর্মবিরতি'। বাড়ির পুরুষরা ঠাকুরদালান সাজানো ও পুজোর সামগ্রী জোগানে ব্যস্ত থাকেন। আর, বাড়ির মহিলারা নৈবেদ্য সাজানো এবং ভোগ তৈরিতে হাত লাগান।

জমিদার আমলের প্রথা মেনে পুজোর আগেই গ্রামবাসীকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়। নবমীর দিন আত্মীয়-স্বজন এবং গ্রামবাসীকে নিয়ে কয়েক হাজার মানুষের খাবারের আয়োজন করা হয়। এই পুজো কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়। এটি রামপুর চট্টোপাধ্য়ায় পরিবারের ঐতিহ্য এবং এলাকার সংহতি ও আনন্দের প্রতিচ্ছবি।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement