মূল রাস্তার পাশ দিয়েই সরু গলি। সারি দিয়ে রাখা মাটির তৈরি প্রতিমা। গলি একটু বাঁক নিতেই ‘তেনাদের’ সঙ্গে দেখা!
কারও মাথা কাটা, তো কারও কঙ্কালসার চেহারা থেকে ঝুলছে মুণ্ড! কেউ দিব্যি রোদ পোহাচ্ছেন। তো কেউ কেউ রংচং মেখে একেবারে তৈরি!
যে সে ব্যাপার নয় এমন দৃশ্য! আসলে ‘তেনারা’ তৈরি হচ্ছেন চতুর্দশীর জন্য।
স্কন্ধকাটা রাক্ষস থেকে শুরু করে ডাকিনী-যোগিনীর দল, সকলের সঙ্গেই সাক্ষাৎ সেরে এল আনন্দবাজার ডট কম।
দুই পাশ থেকে বেরিয়ে রয়েছে দাঁত। চোখে টুনি বাল্ব। বোঝাই যাচ্ছে, রাত যত গভীর হবে, সে চোখের দৃষ্টিই ভস্ম করে ফেলবে সকলকে।
একই দেহে দুই মাথা! এমন অদ্ভুত দর্শনা দুই রমণী কিন্তু কারও ক্ষতি করছেন না। বরং তুমুল কোলাহলের মাঝেই দিব্যি দাঁড়িয়ে রোদ পোহাতে ব্যস্ত।
আহা ভূত, বাহা ভূত/ কিবা ভূত, কিম্ভূত/ বাবা ভূত, ছানা ভূত/ খোঁড়া ভূত, কানা ভূত/ কাঁচা ভূত, পাকা ভূত/ সোজা ভূত, বাঁকা ভূত/ রোগা ভূত, মোটা ভূত/ আধা ভূত, গোটা ভূত… কতই না বাহার।
এই মহিলামণ্ডলীতে যে কী পরামর্শ চলছে, তা তেনারাই জানেন!
গত জন্মে মানুষ ছিল নাকি জন্তু, তাঁকে দেখে বোঝার উপায় নেই। কাছে যেতেই ফিসফিস করে বলে উঠল, “লম্বা নাক থাকলেও কারও সাতে পাঁচে নাক গলানোর স্বভাব নেই বাপু!”
গোপালি ভূত দেখেছেন? রাগে যেন অগ্নিশর্মা হয়ে রয়েছেন সবাই।
পর্দা সরিয়ে এক বার উঁকি দিতেই দেখা মিলল তাঁদের। কেবল গোলাপি কেন, রয়েছে হলুদ, সবুজ এমনকী বেগুনি রঙেরও ভূত।
কারও মাথায় পাগড়ি, তো কেউ দিয়েছেন ঘোমটা।
এখানে কঙ্কালদের রাজত্ব। কেউ একেবারে অস্থিসার, তো কেউ বেশ নাদুসনুদুস।
তার মাঝেই দেখা পাওয়া গেল পেটুক কঙ্কালেরও!
কারও মুখ থেকে ঝুলছে মুণ্ড, তো কারও গালের পাশ দিয়ে বেরিয়েছে দাঁত। অদ্ভুত ভাবে বেঁকে গিয়েছে নাক। চোখের কাছ থেকেও যেন চোখ ফেরানো দায়।
রাস্তার ধারে বেশ ভালই জমেছে খাস ভুতুড়ে আড্ডা!
‘পান্তভূতের জ্যান্ত ছানা…’ এদের থেকে সাবধান!
ভূতেদেরও কি শরীর খারাপ হয়? দীপাবলি, কালীপুজোময় দেদার খাওয়াদাওয়ায় বদ হজম হলে পাশেই খোলা আছে দোকান! (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)