সংগৃহীত চিত্র।
শহর কলকাতা এবং তার আশপাশের বারোয়ারি দুর্গাপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম হল পূর্ব কলিকাতা সর্বজনীন দুর্গোৎসব। পুজোর বয়স ৭৯ বছর।
অন্যান্য বারোয়ারি পুজোর মতোই নারকেলডাঙা মেন রোড এলাকার এই পুজোতেও থিমের গুরুত্ব রয়েছে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এ বার তাঁদের থিমের নাম - 'পারাপার'।
এই থিম ভাবনার মাধ্যমে কলকাতার প্রাচীন ও হারিয়ে যাওয়া এক ইতিহাসকে পুনরায় জীবিত করে তুলতে প্রয়াসী পূর্ব কলিকাতা সর্বজনীনের সদস্যরা।
সংগৃহীত চিত্র।
কলকাতা তখনও আজকের রূপ পায়নি। সে তখন ক্রমে এক বর্ধিষ্ণু ও ব্যস্ত জনপদ হিসাবে নিজের পরিসর এবং পরিচিতি বাড়াচ্ছে। তেমন এক প্রেক্ষাপটে এই বসত এলাকার বুক চিরে বয়ে যেত আদি গঙ্গা। সেই সময়ে ওই জলধারার ভূমিকা ও গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।
আদিগঙ্গা বেয়ে চলাচল করত নৌকা, বজরা। কর্মব্যস্ত যাত্রীরা নিত্য সেই পথে যাতায়াত করতেন। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা চলত। বাড়ির মেয়ে-বৌরা পুজো-পার্বণে নদীমাতৃকাকে অর্ঘ্য প্রদান করতেন। এক কথায় সেই সময়ে আদি গঙ্গা ছিল তৎকালীন শহরের প্রধান জীবনরেখা। আজ সে সবই অতীত। এক দিন যে আদি গঙ্গা সগর্বে প্রবাহিত হত, আজ সে অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে, ক্রমশ ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে।
সংগৃহীত চিত্র।
৭৯তম বর্ষে শহর কলকাতার সেই প্রাচীন ইতিহাস এবং সেই ইতিহাসে আদি গঙ্গার ভূমিকা ও অবদান তুলে ধরছে পূর্ব কলিকাতা সর্বজনীনের পুজো। তাদের এ বারের মণ্ডপ সেজে উঠছে নানাবিধ ইনস্টলেশন ও দেওয়াল চিত্রে, যেখানে আদি গঙ্গার নানা রূপ ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে।
থিম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনবদ্য এই বিষয় ভাবনার নেপথ্যে রয়েছেন বিট্টু দাস, শানু হালদার ও শ্রেয়া মজুমদার। প্রতিমা নির্মাণের দায়িত্বও অর্পণ করা হয়েছে শ্রেয়াকে। মণ্ডপ তৈরির ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে আলোকসজ্জার উপরে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।