Kali Puja 2025

শিব নন, কালীর পদতলে থাকে অসুর এবং সিংহ, জানেন কোথায়?

তিনশো বছরের বেশি সময় যাবৎ পূজিতা হচ্ছেন মা চঞ্চলা কালী। কথিত, মহামায়া ও চামুণ্ডার মিলিত রূপ হলেন চঞ্চলা কালী। দেবী বিরাজ করেন সিংহ ও অসুরের উপরে।

Advertisement

সৌভিক রায়

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:০৭
Share:

সংগৃহীত চিত্র

দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে পূজিতা হন মা চঞ্চলা কালী। পুজোর বয়স তিনশো বছরের বেশি। কথিত, মহামায়া ও চামুণ্ডার মিলিত রূপ হলেন চঞ্চলা কালী। বালুরঘাট শহরের অদূরে ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের হোসেনপুরের কাছে চখবাকর গ্রামে চঞ্চলা কালী মন্দির। প্রথমে ছিল মাটির, বর্তমানে পাকা মন্দির গড়ে উঠেছে। ফি বছর দোলপূর্ণিমার পরে কৃষ্ণপক্ষের প্রতিপদে গভীর রাতে চঞ্চলা কালীর পুজো হয়।

Advertisement

জনশ্রুতি অনুযায়ী, গভীর জঙ্গলের মধ্যে দেবীর প্রথম দর্শন পেয়েছিলেন কেরানু বর্মণ নামে এক গ্রামবাসী। তাঁর হাতেই এই পুজো শুরু। এলাকার নামানুসারে কালীর নাম হয় চঞ্চলা। আর একটি কাহিনিও শোনা যায় লোকমুখে। মাহিনগর এলাকার মহি রাজা পুজোর প্রচলন করেন। মাহিনগর থেকে সুরঙ্গ পথে চখবাকরে এসেছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পরে পুজো দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে এলাকার কোনও এক বাসিন্দা স্বপ্নাদেশ পেয়ে আবার পুজো আরম্ভ করেন। পুজোর ব্যয়ভার বহন করেন স্থানীয় জমিদার।

দেবী কালিকার প্রতিমা ব্যতিক্রমী, এখানকার কালী অষ্টভুজা। উচ্চতা প্রায় সাড়ে দশ হাত। ছিন্ন মস্তক অসুর এবং সিংহের পৃষ্ঠে অধিষ্ঠান করেন দেবী চঞ্চলা কালী। তাঁর পদতলে শিব থাকেন না। দেবী সালঙ্কারা, লোল জিহ্বা। নরমুণ্ডের মালায় ভূষিতা। তন্ত্র মতে এই মন্দিরে পুজো হয়। মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি পুকুর। সেই পুকুরের জল দিয়ে পুজোর যাবতীয় কাজ করা হয়। বলির হাড়িকাঠ সারা বছর পুকুরের জলে ডোবানো থাকে। পুজোর দিন বিকেলে তা তোলা হয়। পুজোর পাঁচ দিন আগে মন্দিরে ঘট বসে। পুজোয় পাঁঠা, পায়রা, চুল বলির প্রথা রয়েছে। বাতাসা, কদমা ও নকুলদানা প্রসাদ হিসাবে নিবেদন করা হয়। বার্ষিক পুজো ছাড়াও প্রতি অমাবস্যায় বিশেষ পুজো হয়। নিত্যপুজোও চলে।

Advertisement

পুজোর অন্যতম আকর্ষণ হল ভক্তদের লোকক্রীড়া। পুজো উপলক্ষে প্রায় তিনশো জন ভক্ত সমবেত হন। প্রত্যেকে উপবীত ধারণ করেন। গাজনের মতো কাঠের পাটাতনে পেরেক পুঁতে তার উপরে ভক্তরা শিব-কালী সেজে নাচ করেন। ঢাক, ঢোল, কাঁসর বাজতে থাকে। মুখোশ পরে নাচ, অস্ত্র নিয়ে খেলা দেখানো ইত্যাদি চলে। চঞ্চলা কালীর পুজোর পরে দু’টি দিন মন্দির চত্বরে রাতভর মঙ্গলচণ্ডীর গান গাওয়া হয়। পুজো উপলক্ষে মেলাও বসে। সব মিলিয়ে দিন তিনেকের উৎসব চলে। বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের পাশাপাশি ভিন রাজ্যের ভক্তরাও আসেন এই পুজোয়।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement