Howrah Bonedi Bari Puja

হাঁড়িকাঠ সহ পালিয়ে যায় মোষ! ডোমজুড়ের ঘোষ বাড়ির ৩৫০ বছরের দুর্গাপুজোর সঙ্গে জড়িয়ে কোন ইতিহাস?

ডোমজুড়ের বেগড়ী পশ্চিম পাড়ার ঘোষ বাড়ির পুজোর বয়স প্রায় ৩৫০ বছর বা তারও বেশি। কবে থেকে এই বাড়িতে পুজো শুরু হয়েছিল তা এখন আর কেউ সঠিক ভাবে বলতে পারেন না।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:১৫
Share:

নিজস্ব চিত্র

বনেদি বাড়ির পুজো বললেই মাথায় আসে কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বনেদি বাড়ি। কিন্তু বাংলার বিভিন্ন জেলার, বিভিন্ন বনেদি বাড়ির পুজোর সঙ্গে যে কত রকমের গল্প, ইতিহাস জড়িয়ে তার ইয়ত্তা নেই। আর তেমনই এক বনেদি বাড়ি হল ডোমজুড়ের বেগড়ী পশ্চিম পাড়ার ঘোষ বাড়ি। মনে করা হয় এই বাড়ির পুজোর বয়স প্রায় ৩৫০ বছর বা তারও বেশি। কবে থেকে এই বাড়িতে পুজো শুরু হয়েছিল তা এখন আর কেউ সঠিক ভাবে বলতে পারেন না।

Advertisement

এই বাড়ির বর্তমান প্রজন্মের অভীক ঘোষ আনন্দবাজার ডট কমকে জানান তাঁদের বাড়ির পুজো মাঝে প্রায় ১০৬ বছরের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাঁর কথায়, “আমাদের বাড়িতে পুজোর সময় মোষ বলি হতো। আন্দুল রাজবাড়িতে কামান দাগলে, সেই আওয়াজ শুনে আমাদের বাড়িতে মোষ বলি হতো। এক বার বলির সময় মোষ হাঁড়িকাঠ সমেত পালিয়ে যায়। সেই সময় পুরোহিত এবং বাড়ির সেই সময়ের বড়রা মনে করেন যে পুজোয় কোনও খুঁত হয়েছে। তাই পুজো বন্ধ করে দেওয়া হয়।”

যে পুজো বন্ধ হয়ে গিয়েছে, সেই পুজো আবার কেন শুরু হল? তিনি জানান যে তাঁর পূর্বপুরুষ স্বপ্নাদেশ পান দেবীর। অভীক বলেন, “আমার এক দাদু আছেন, উনিই স্বপ্নে দেখেন যে দেবী তাঁকে বলছেন যে ‘আমায় আবার এই বাড়িতে নিয়ে আয়’। তখন আবার যেখানে আগে ঠাকুর পুজো হতো সেখানেই রং, ইত্যাদি করে পুজো আরম্ভ হয়।” ১৯৯৮ সাল থেকে পুনরায় পুজো হচ্ছে এই ঘোষ বাড়িতে।

Advertisement

এখানে প্রতি বছর জন্মাষ্টমীর দিন কাঠামো পুজো হয়। এবং তারপর থেকে শুরু হয় প্রতিমা নির্মাণের কাজ। পঞ্চমীর দিন রাতে বোধন হয়। বাড়ির পুজোর রীতি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অভীক ঘোষ বলেন, “আগে যে পানি শঙ্খ ব্যবহৃত হতো, সেটা মাটির তলা থেকে পেয়েছি, ওটা দিয়েই আরতি করা হয় এখন। নৈবেদ্য দেওয়া হতো যে থালায়, সেটাও পাওয়া গিয়েছে। ওটাতেই এখন নৈবেদ্য দেওয়া হয়।” তিনি আরও জানান, আগে যে তাঁদের মোষ বলি হতো সেই সময় এক মণ ঘি দিয়ে প্রায় এক মাস ধরে মোষের ঘাড় মালিশ করে নরম করা হতো। শুধু তাই নয়, দেবীকে দেওয়া হতো এক মণ চালের নৈবেদ্য। এখন সে সব কিছুই নেই। সন্ধি পুজোয় এখন ৯ রকমের ফল দেবীকে উৎসর্গ করা হয়। সঙ্গে পুজোর ক’দিন ঘোষ বাড়িতে আমিষ ঢোকে না বলেই জানালেন অভীক ঘোষ।

এ বার পুজোয় হাওড়া অঞ্চলে বেড়াতে গেলে একবার যাবেন নাকি এই ঘোষ বাড়ির ঠাকুর দেখতে?

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement