Krishnanagar Jagadhatri Immersion 2025

জগদ্ধাত্রীর ভাসানে কাঁধে কাঁধ মেলালেন মহিলারা, কৃষ্ণনগরে ঐতিহ্যের সঙ্গেই ধ্বনিত হল নারীশক্তির জয়গান!

জগদ্ধাত্রী বিসর্জন ঘিরে রাতভর কৃষ্ণনগর মেতে ওঠে উৎসবের আমেজে।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:২৫
Share:

সংগৃহীত চিত্র।

নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে সাড়ম্বরে সম্পন্ন হল জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জন পর্ব। গত ৩০ ও ৩১ অক্টোবর নবমীর তিথি ধরে মূল পুজো সম্পন্ন হওয়ার পরে ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকে ১ নভেম্বর গভীর রাত পর্যন্ত চলল প্রতিমা নিরঞ্জন।

Advertisement

এ বছর বিসর্জন শোভাযাত্রায় কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্য ও পরম্পরা বজায় থাকল পূর্ণ মাত্রায় - যেখানে রাজবাড়ির প্রতিমা সবার আগে এবং চাষাপাড়ার বিখ্যাত 'বুড়িমা' সবার শেষে জলঙ্গী নদীতে নিরঞ্জন হলেন।

রাজবাড়ির বিসর্জন দিয়ে সূচনা:

Advertisement

ঐতিহ্য মেনে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির প্রতিমা বিসর্জন সবার আগে সম্পন্ন হয়। একমাত্র নবমীর দিনই রাজবাড়ির দরজা সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। পুজো শেষে রাজবাড়ির প্রতিমা রাজবাড়ির সামনে থেকে প্রদক্ষিণ করে নিয়ে যাওয়া হয় জলঙ্গী নদীর তীরে। মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় প্রবর্তিত এই পুজো আজও নিষ্ঠার সঙ্গে পালিত হয় এবং রাজবাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জনের সঙ্গেই কৃষ্ণনগরের বিসর্জন পর্বের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।

সংগৃহীত চিত্র।

হালদার পাড়ায় মহিলাদের কাঁধে 'আদরিণী মা':

এ বারের বিসর্জনে এক উল্লেখযোগ্য ছবি দেখা গেল হালদার পাড়ার আদরিণী মায়ের ক্ষেত্রে। প্রাচীন রীতি মেনে এই বারোয়ারির প্রতিমা কাঁধে করে নিরঞ্জন ঘাটে নিয়ে যাওয়ার প্রথা রয়েছে। তবে এ বছর সেই ঐতিহ্যকে বহন করলেন মহিলারা। কাঁধে প্রতিমা তুলে নিয়ে তাঁরা যখন 'জগদ্ধাত্রী মাই কি জয়' ধ্বনি দিতে দিতে ঘাটের দিকে এগিয়ে গেলেন, তখন রাস্তার দু'পাশে হাজার হাজার দর্শনার্থী ভাসলেন আবেগে। নারীশক্তির এই প্রকাশ কৃষ্ণনগরের বিসর্জন শোভাযাত্রায় এক নতুন মাত্রা যোগ করল।

বুড়িমার বিদায়, শেষ হল উৎসব:

কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ চাষাপাড়ার 'বুড়িমা'। ২৫৩তম বর্ষে পা দেওয়া এই বিখ্যাত প্রতিমার বিসর্জন হয় সবার শেষে। গভীর রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার অপেক্ষায় থাকেন হাজার হাজার মানুষ, শুধুমাত্র বুড়িমাকে বিদায় জানানোর জন্য!

নিয়ম মেনে প্রতিমা প্রথমে রাজবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তারপর কাঁধে চাপিয়ে বিশাল আকারের প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় জলঙ্গী নদীতে। স্বর্ণালঙ্কারে ভূষিতা বুড়িমার নিরঞ্জন দেখার জন্য এ বারেও ভিড় ছিল উপচে পড়া। বুড়িমার বিসর্জনের সঙ্গেই কৃষ্ণনগরের এই বছরের জগদ্ধাত্রী পুজোর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটল।

সংগৃহীত চিত্র।

রাতভর উৎসব:

বৃষ্টি বা ক্লান্তি - কোনও কিছুই কৃষ্ণনগরবাসীর উৎসাহে ছেদ ঘটাতে পারেনি। দশমীর দিনে ঘট বিসর্জন শুরু হলেও মূল প্রতিমা নিরঞ্জনের শোভাযাত্রা চলে গভীর রাত থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত। রং, আলো ও ঢাকের তালে কৃষ্ণনগর শহর যেন রাতভর এক প্রাণবন্ত মহোৎসবে মেতে ওঠে!

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement