সংগৃহীত চিত্র।
পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের গোমাই গ্রামের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের জগদ্ধাত্রী পুজো প্রায় ১৭০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে চলেছে! বংশপরম্পরায় এই পুজো হয়ে আসছে নিষ্ঠা ও সম্মানের সঙ্গে। যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে রহস্যে ঘেরা কিংবদন্তি!
'শিবা ভোগ':
চট্টোপাধ্যায় বাড়ির এই পুজোয় একটি বিশেষ ও স্বতন্ত্র রীতি প্রচলিত আছে। সেই অনুসারে - গভীর রাতে, যখন চার দিক নিস্তব্ধ থাকে, তখন পরিবারের পুরোহিত একা গ্রামের সীমানার বেলতলায় গিয়ে দেবীকে 'শিবা ভোগ' নিবেদন করেন। লোকমুখে প্রচলিত, বেলতলায় শৃগাল (শিবা) এসে সেই ভোগ গ্রহণ করলে তবেই পুজো সম্পন্ন হয়েছে বলে ধরা হয়! বহু বছর ধরে এই প্রথা আজও অক্ষুণ্ণ রয়েছে এই পরিবারের পুজোয়।
রীতিনীতিতে সাবেকিয়ানার ছোঁয়া:
দেবী মূর্তি: চট্টোপাধ্যায় বাড়ির দেবীর প্রতিমা 'এক চালা'-য় তৈরি হয়। যেখানে সিংহ ও হাতিও সাধারণত এক সঙ্গেই থাকে।
বলিদান: আগে নবমীর দিনে ছাগ বলিদান-এর রেওয়াজ থাকলেও, বর্তমানে তার বদলে ছাঁচি কুমড়ো বলি দেওয়া হয়।
ভোগ গ্রহণ: নবমীর দিনে মন্দির প্রাঙ্গণে এলাকার ভক্তরা এক সঙ্গে অন্ন ভোগ গ্রহণ করেন।
গ্রামবাসীর অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশ:
এটি পারিবারিক পুজো হলেও শক্তিরূপিণী দেবীর এই আরাধনায় গোটা গ্রাম মেতে ওঠে। এলাকার প্রতিটি মানুষই চট্টোপাধ্যায় বাড়ির এই পুজোয় সামিল হন। দশমীর পুজো সাঙ্গ হওয়ার পর দেবী জগদ্ধাত্রীর প্রতিমা কাছেই দামোদর নদে বিসর্জন দেওয়া হয়। এই পুজো এক দিকে যেমন একটি পরিবারের নিষ্ঠা ও পরম্পরার প্রতীক, তেমনই অন্য দিকে এটি গোমাই গ্রামের সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করার এক উৎসব।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।