সোনার মতোই রৌপ্য অলঙ্কার বন্ধক রেখে ঋণ নিতে পারবে আমজনতা, জানিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। — প্রতীকী ছবি।
আর্থিক সঙ্কট মেটানোর অন্যতম উপায় হল স্বর্ণঋণ। আর তাই ব্যাঙ্ক বা ব্যাঙ্ক বহির্ভূত আর্থিক সংস্থায় (নন-ব্যাঙ্কিং ফিন্যান্সশিয়াল কোম্পানি বা এনবিএফসি) ‘হলুদ ধাতু’র অলঙ্কার বন্ধক রাখেন অনেকেই। একই নিয়ম কি রুপোর গয়নার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য? এ ব্যাপারে ঠিক কী বলছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) নিয়ম? আনন্দবাজার ডট কম-এর এই প্রতিবেদনে রইল তার হদিস।
সম্প্রতি, রৌপ্যঋণ নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে আরবিআই। সেখানে বলা হয়েছে, এ বার থেকে সোনার মতোই ‘সাদা ধাতু’ বা তার অলঙ্কার বন্ধক রেখে ধার নিতে পারবে আমজনতা। সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত, সমবায় ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক, এনবিএফসি এবং হাউজ়িং ফিন্যান্স সংস্থাগুলি এই ঋণ দিতে পারবে। আগামী বছরের ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে নতুন নিয়ম।
চলতি বছরের ৬ জুন সংশ্লিষ্ট সংস্কারগুলির কথা ঘোষণা করে আরবিআই। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুযায়ী, গ্রাহকেরা রৌপ্য অলঙ্কার এবং মুদ্রার বিপরীতে স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিতে পারবেন। কিন্তু ‘কাগুজে’ রুপোর বিনিময়ে ধার দিতে পারবে না কোনও সংস্থা। বিশ্লেষকদের দাবি, ফাটকাবাজি এবং প্রতারণা আটকাতে এই নিয়ম জারি করেছে আরবিআই।
এ ছাড়া বন্ধকী রুপো ব্যবহার করে ফের ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। লগ্নিকারীদের অনেকেই ‘সাদা ধাতু’র ইটিএফে (এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) বিনিয়োগ করে থাকেন। এর বিপরীতেও কোনও রৌপ্যঋণ মঞ্জুর করা যাবে না বলে জানিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক।
বিজ্ঞপ্তিতে সর্বাধিক কত পরিমাণ ‘সাদা ধাতু’র বিনিময়ে টাকা ধার নেওয়া যাবে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে আরবিআই। সেখানে বলা হয়েছে, ১০ কেজি পর্যন্ত রৌপ্য অলঙ্কার এবং ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত রৌপ্য মুদ্রার বিনিময়ে ঋণ পাবেন আবেদনকারী। উল্লেখ্য, ঋণ পরিশোধের সাত কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক, এনবিএফসি বা হাউজ়িং ফিন্যান্স সংস্থাকে বন্ধক হিসাবে জমা থাকা ‘সাদা ধাতু’র গয়না ফেরত দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিলম্ব হলে গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ বাবদ দৈনিক পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে। এমনটাই বলেছে আরবিআই।
এ ছাড়া বন্ধক থাকা অবস্থায় রৌপ্য অলঙ্কার হারিয়ে গেলে বা তার কোনও ক্ষতি হলে, সংশ্লিষ্ট গয়নার মূল্য পুরোপুরি ভাবে ধার নেওয়া ব্যক্তিকে ফেরত দিতে হবে। ঋণখেলাপির ক্ষেত্রে স্বর্ণঋণের মতোই ‘সাদা ধাতু’ নিলাম করতে পারবে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক, এনবিএফসি বা হাউসিং ফিন্যান্স। নিলামে প্রাপ্ত উদ্বৃত্ত অর্থ সাতটি কর্মদিবসের মধ্যে গ্রাহককে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক।