নতুন ইস্যুর বাজারে বন্ড যেন গরম কেক। পর পর ইস্যু আসছে করমুক্ত বন্ডের। বিক্রিও হচ্ছে বেশ ভাল রকম। বন্ড নিয়ে এত উৎসাহ সম্ভবত আগে দেখা যায়নি।
এর কারণ একটাই। এ বারে সুদের হার অত্যন্ত আকর্ষণীয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ ছুঁই ছুঁই, যা ব্যাঙ্কের মেয়াদি আমানতের সমান। পার্থক্য হল ব্যাঙ্ক ফিক্সড ডিপোজিটের উপর সুদ করযোগ্য। অন্য দিকে এই সব বন্ডের সুদ পুরোপুরি করমুক্ত। উঁচু হারে করদাতাদের কাছে এটি একটি বড় আকর্ষণ।
কেন্দ্রীয় সরকার এ বার ১৩টি সংস্থাকে করমুক্ত বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে বাজার থেকে মোট ৪৮ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার অনুমতি দিয়েছে। সংগৃহীত টাকা লগ্নি করা হবে পরিকাঠামো শিল্পে। ইস্যু বাজারে আসতে শুরু করেছে গত অগস্ট মাস থেকে। চলছে এখনও।
আগের দু’বছরে সুদের হার এ বারের মতো এত আকর্ষণীয় ছিল না। এত উঁচু সুদে একবার লগ্নি করলে ১০ থেকে ২০ বছরের জন্য নিশ্চিন্ত। পরে সুদ কমার কোনও ভয় নেই। সুরক্ষার দিক থেকেও বন্ডগুলির আকর্ষণ কম নয়। বেশির ভাগ ইস্যুই ‘এএএ’ (ট্রিপল এ) রেটিংযুক্ত। কয়েকটি ইস্যুর রেটিং ‘এএ’ এবং ‘এএ+’। তবে রেটিং সামান্য কম হলে সুদের হার সাধারণত একটু বেশি হয়।
ইস্যুকারী সংস্থাগুলির পুরো অথবা সিংহভাগ মালিকানা সরকারের হাতে থাকায় সুরক্ষার ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিন্ত থাকা যায়। যে-সব সংস্থার ইস্যুর আকার বড়, তাদের কেউ কেউ ইস্যু আনছে দুই/তিন কিস্তিতে। ২০১৩-’১৪ সালের ইস্যুগুলি শেষ হবে মার্চ মাসের মধ্যে। আগামী বছরের ইস্যু নির্ভর করবে নতুন সরকারের অনুমোদনের উপর। এ বার যে-সংস্থাগুলি করমুক্ত বন্ড ইস্যুর অনুমোদন পেয়েছে তার তালিকা সঙ্গে দেওয়া হল।
এখন যে-ইস্যুগুলি খোলা আছে তাদের মূল বৈশিষ্ট্যও সঙ্গের সারণিতে দেওয়া হল।
সব ইস্যুতেই ন্যূনতম আবেদন করতে হবে ১০০০ টাকা মূল্যের ৫টি বন্ডের জন্য। ইস্যুগুলি আগে বন্ধ না-হলে খোলা থাকবে ৭ মার্চ থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত।
তবে করমুক্ত বন্ডের মূলত দুটি অসুবিধা রয়েছে। প্রথমত, এই বন্ডে সুদ পাওয়া যায় বছরে একবার। অর্থাৎ যাঁদের নিয়মিত আয় প্রয়োজন, তাঁদের অসুবিধা হতে পারে। দ্বিতীয়ত, ইচ্ছে হলেই এই বন্ড বিক্রি করা যায় না। সব বন্ডেরই শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধ হওয়ার কথা। কিন্তু নিয়মিত লেনদেন হয় শুধুমাত্র বড় মাপের ইস্যুগুলিরই।
পড়তি সুদের বাজারে অবশ্য করমুক্ত বন্ডের বাজার দর বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে। এ বারের বন্ডে সুদের হার যেহেতু বেশ ভাল, সেই কারণে ব্যাঙ্ক সুদ একবার কমতে থাকলে এই বন্ডের বাজার দর ভাল রকম বাড়তে পারে। অর্থাৎ সুযোগ থাকবে মূলধনী লাভের।