Abhishek Manu Singhvi

সম্পাদক সমীপেষু: ওঁরা কেউ বলেননি

বাক্‌স্বাধীনতা প্রসঙ্গে এই উক্তি নেহরুর নয়। এমনকি যাঁর নামে সাধারণত এই বিখ্যাত উক্তিটি চলে সেই মহান দার্শনিক ভলতেয়ারও (বাঁ দিকের ছবিতে) এটি বলেননি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২০ ০০:০১
Share:

দেশদ্রোহের সংজ্ঞা বা আইনি ব্যাখ্যা কোনওটা না মেনেই মোদী সরকার প্রতিবাদীদের হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি (‘প্রতিবাদ মানেই দেশদ্রোহ! মোদীকে খোঁচা সিঙ্ঘভির’, ২৩-২)। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন ‘‘জওহরলাল নেহরুর বিখ্যাত উক্তি ছিল, তুমি যা বলছ, আমি তার চূড়ান্ত বিরোধী হতে পারি। কিন্তু তোমার সে কথা বলার অধিকার রক্ষার জন্য আমি শেষ পর্যন্ত লড়ব।’’

Advertisement

বাক্‌স্বাধীনতা প্রসঙ্গে এই উক্তি নেহরুর নয়। এমনকি যাঁর নামে সাধারণত এই বিখ্যাত উক্তিটি চলে সেই মহান দার্শনিক ভলতেয়ারও (বাঁ দিকের ছবিতে) এটি বলেননি। ব্রিটিশ লেখিকা ইভলিন বিয়েট্রিস হল (যাঁর ছদ্মনাম ছিল স্টিফেন জি ট্যালেনটায়ার), ১৯০৩ সালে লিখেছিলেন ভলতেয়ারের জীবনী ‘দ্য লাইফ অব ভলতেয়ার’। ১৯০৬ সাল নাগাদ শেষ করেন আর একটি বই ‘দ্য ফ্রেন্ডস অব ভলতেয়ার’। গল্পের ছলে বলা এই জীবনীতে আছে দশ জন মানুষের কথা যাঁদের জীবন শুধু পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পৃক্তই ছিল না, তাঁরা ছিলেন ভলতেয়ারের সমসাময়িক এবং বন্ধুস্থানীয়। তাঁদের মধ্যে এক জন হলেন, এলভেশাস।

১৭৫৮ সালে এলভেশাস লেখেন ‘অন মাইন্ড’, যে গ্রন্থে তিনি দাবি করেন, স্বার্থসিদ্ধিই মানব সমাজে একমাত্র প্রেষণা এবং চালিকাশক্তি। ভাল মন্দ বলে আলাদা কিছু নেই, যা আছে তা হল প্রতিযোগিতামূলক সুখ। বইটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়, যাজকেরা ঘোষণা করেন বইটি নাস্তিক্যবাদী এবং স্বভাবতই বিপজ্জনক। বইটি সরবন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে পোড়ানো হয়। ভলতেয়ার বলেন, বইটিতে মৌলিকতার অভাব আছে। ভীত সন্ত্রস্ত এলভেশাস বাধ্য হয়ে তাঁর মতবাদ প্রত্যাহার করেন।

Advertisement

হলের লেখা ‘দ্য ফ্রেন্ডস অব ভলতেয়ার’ গ্রন্থের এলভেশাস সম্পর্কিত পরিচ্ছেদে আছে সেই বিখ্যাত বাক্যটি, যা ভলতেয়ারের নামে চলে। হল লেখেন, ‘‘বইটি তার নিজের জন্য বা লেখকের জন্য যা কোনও দিন করতে পারত না, লেখকের উপর এই নির্যাতন তাদের দু’জনের জন্যই তা করেছিল। শুধু অল্প কয়েক দিনের জন্য জনপ্রিয় হওয়া নয়, এই শতাব্দীর বিখ্যাত গ্রন্থদের মধ্যে তার স্থান নির্দিষ্ট হয়েছে। যাঁরা বইটিকে ঘৃণা করতেন, আর এলভেশাসকেও খুব পছন্দ করতেন না, তাঁরাও এখন এগিয়ে এলেন তাঁর সমর্থনে। ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় ভলতেয়ারকে যে আঘাত দিয়েছিলেন এলভেশাস, এখন ভলতেয়ার তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখলেন। প্রকাশ্যে এলভেশাসের গ্রন্থের বহ্ন্যুৎসব প্রসঙ্গে ভলতেয়ার বলেন, ‘একটা সামান্য অমলেট নিয়ে বড় বাড়াবাড়ি হচ্ছে। একটা তুচ্ছ অবান্তর ব্যাপারের জন্য এক জন মানুষের উপর এই নিপীড়ন কী ঘৃণ্য অন্যায়!’ এখন তাঁর মনোভাব অনেকটা এই রকম: ‘তুমি যা বলছ আমি তার চূড়ান্ত বিরোধী হতে পারি, কিন্তু তোমার সে কথা বলার অধিকার রক্ষার জন্য আমি শেষ পর্যন্ত লড়ব।’’’

আসলে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে থাকা শেষোক্ত বাক্যটি লেখিকা কর্তৃক ভলতেয়ারের মনোভাবের সারসংক্ষেপ ছাড়া কিছু নয়। সেটিই ভুল করে ভলতেয়ারের উপর আরোপ করা হয়, আর সিঙ্ঘভির ‘ফ্য পা’ বা ভ্রমাত্মক উক্তির ফলে যা হল তা: উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে।

শিবাজী ভাদুড়ী

সাঁতরাগাছি, হাওড়া

নার্সের গাফিলতি

কিছু দিন ধরে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু হলে, কখনও কখনও ডাক্তারদের নিগ্রহ করা হচ্ছে। কিন্তু রোগীর মৃত্যু বহু ক্ষেত্রেই হয় নার্সিং স্টাফের গাফিলতিতে। অধিকাংশ হাসপাতালে বেশি মুনাফার জন্য অত্যন্ত কম বেতনে নার্স নিয়োগ করা হয়, তাঁরা অনেক সময়ে ভাষাও বোঝেন না, আর কাজ না করে নিজের মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। তাই, বিশেষত রাত্রিবেলা কোনও রোগী সঙ্কটগ্রস্ত হলে, সেটা তক্ষুনি দেখা ও ডাক্তারকে সঙ্গে সঙ্গে জানানো হয়ে ওঠে না। ফলে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়। এই অভিজ্ঞতা আমার নিজের। কয়েক মাস আগে আমি একটি কঠিন রোগে শল্যচিকিৎসার জন্য নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হই। এই একই কারণে আমার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হয়েছিল। ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছি।

সমীর কাঞ্জিলাল

কলকাতা-৬১

খাতা ও সময়

একই শিক্ষককে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের খাতা দেওয়া বন্ধ হোক। কিছু শিক্ষক আছেন, যাঁদের কাছে কোনও খাতাই পড়ে না। আবার কিছু শিক্ষককে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক, দুই পরীক্ষার খাতাই দেখতে দেওয়া হয়। এই বছর মাধ্যমিকে খাতা দেখার সময় অনেকটা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগে তিন দফায় খাতা জমা হত। এখন দু’দফায়। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের খাতা দুটোই দেখার সময় প্রায় এক মাস থেকে ১ মাস ১৫ দিন হয়। এত কম সময়ের মধ্যে এত খাতা জমা দেওয়ার তাড়া থাকলে, সব ক্ষেত্রে ঠিক বিচার নাও হতে পারে।

সুজিত কুমার ভৌমিক

চণ্ডীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক

একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের হাওড়া শাখা থেকে ২০০৯ সালে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ গৃহঋণ প্রকল্পে পাঁচ লক্ষ টাকার ১০ বছরে ১২০টি কিস্তিতে পরিশোধ্য গৃহঋণ নিই। কিস্তির সংখ্যা, অর্থের হিসেব এবং পরিশোধের পদ্ধতি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষই ঠিক করে দেন। দশ বছরে নিরবচ্ছিন্ন ১২০টি কিস্তি শর্তানুযায়ী আমার মাসিক বেতন থেকে সরাসরি শোধ করার পর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে ‘নো ডিউ সার্টিফিকেট’ চাইতে গেলে, হাওড়া শাখা প্রবন্ধক জানান, তখনও প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা পরিশোধ করা বাকি রয়েছে।

বিনা মেঘে বজ্রপাত! এই বিষয়ে লিখিত জানাতে অনুরোধ করলে, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বহু টালবাহানার পর, তিন মাস পরে আমার লোন অ্যাকাউন্টে হঠাৎ ‘ভুল করে কেটে’ নেওয়া তিয়াত্তর হাজার টাকা ফেরত দিয়ে, কোনও বিবরণ ছাড়াই পত্র মারফত জানান: পরিশোধ না হওয়া বকেয়া অর্থের পরিমাণ এক লক্ষ তিপ্পান্ন হাজার টাকা। এই পত্রের ঠিক এক মাসের মধ্যেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আমার লোন অ্যাকাউন্টকে সারফেসি অ্যাক্টের ১৩(২) ধারায় অনুৎপাদক সম্পদ বা এনপিএ ঘোষণা করে কাগজে বিজ্ঞাপন জারি করেন এবং পরিশোধ না হওয়া বকেয়া অর্থের পরিমাণ হিসেবে দাবি করেন এক লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার টাকা। বকেয়া অর্থের পরিমাণের পরিবর্তন এখানে লক্ষণীয়। এই ঘোষণার বিরুদ্ধে আমার আপত্তির কথা লিখিত ভাবে জানাই, এমনকি তাঁদের ঋণের সুদের হিসেবে গোলমালের কথাও জানাই। সারফেসি অ্যাক্টের নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের ১৫ দিনের মধ্যে তার জবাব দেওয়ার কথা থাকলেও, আজ অবধি তা জানানো হয়নি। ব্যাঙ্কের হেফাজতে থাকা আমার জমির নথিপত্রও ফেরত দেওয়া হচ্ছে না।

তথ্য জানার অধিকার আইনে আমার এই লোনের বিশদ বিবরণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক এই তথ্য ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে ওই ব্যাঙ্কের উচ্চতম কার্যালয়ে অভিযোগ জানালেও তাঁরা ‘নীরব’ থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বোধ করি।

শৈবাল চট্টোপাধ্যায়

দক্ষিণ নলডাঙা, হুগলি

এতেও টাকা!

এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বনগাঁ শাখায় গিয়েছিলাম, ২৫-২ তারিখে, সিগনেচার ভেরিফিকেশন-এর জন্য। দু’মিনিটের মধ্যে তাঁরা ভেরিফিকেশন করে দেন, কিন্তু এর জন্য ১৫০ টাকা চার্জ এবং ২২ টাকা জিএসটি নিয়ে মোট ১৭২ টাকা আমার অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হবে, জানান। ব্যাঙ্কের কাজ আমাদের পরিষেবা দেওয়া। আমরা যে টাকা সেভিংস অ্যাকাউন্টে রাখি, তা ব্যাঙ্ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঋণ দিয়ে অর্থ উপার্জন করে। আর সই যাচাইয়ের মতো সামান্য কাজের জন্য টাকা চার্জ করা হচ্ছে!

দেবল মণ্ডল

বনগাঁ, উত্তর ২৪ পরগনা

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন