প্রতীকী চিত্র।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ আইন কলেজগুলিতে ভর্তির ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ ছিল। বিতর্ক এড়াতে চলতি বছর থেকে বিএ এলএলবির প্রবেশিকা পরীক্ষা নেবে বেসরকারি সংস্থা। চলতি সপ্তাহের শেষে প্রকাশিত হতে চলেছে বিজ্ঞপ্তি।
সাউথ কলকাতা ল কলেজের ধর্ষণকাণ্ডের ঘটনা সামনে আসার পর তদন্ত করতে গিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ে, ভর্তির ক্ষেত্রে আইন কলেজগুলির দুর্নীতি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, আইন বিভাগ ও কলেজগুলিতে ভর্তিতে দু’রকমের দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। প্রথমত কেন্দ্রীয় প্রবেশিকার ফলাফলের মেধাতালিকা তৈরিতে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ সামনে এসেছে। দ্বিতীয়ত প্রথম বর্ষের ভর্তিতে সাধারণ মানের অনেক ছাত্র-ছাত্রী মেধাতালিকার প্রথম সারিতে চলে এসেছে। এই ধরনের অভিযোগ সামনে আসার পরই প্রবেশিকা পরীক্ষা আইন বিভাগের হাতে না রেখে বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
চলতি মাসের শুরুতেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কলেজগুলিতে প্রথম বর্ষে ভর্তির জট কেটেছে। আইনের প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা আর নেই, বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার অনুমতি পেয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এই অনুমতি পেয়েছে এক বছরের জন্য। পরের বছর যাতে প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে জটিলতা না তৈরি হয় তাই দ্রুত তারও অনুমোদন নিতে চলেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর
বিএএলএলবির পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারছিল না কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। তার কারণ তাদের কোর্সের অনুমোদনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছিল। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ল অ্যাডভাইসারি কমিটি বৈঠক করেন। সেখানে ১৪টি কলেজের উপাধ্যক্ষ ও অধ্যক্ষেরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় চলতি সপ্তাহের শেষে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও পুজোর আগেই ভর্তির আবেদন নেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। শুধু তাই নয় পূজোর পর বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে। এই পরীক্ষায় এমসিকিউ ও কম্পিউটার বেসড টেস্ট নেওয়া হবে বলে জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত দে বলেন, "কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগ নিয়ে নানান ধরনের অভিযোগ সামনে এসেছে, সেখান থেকে আলোর পথ দেখাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। সঠিক পথে পরিচালনার জন্য সকলের ভূমিকা প্রয়োজন। এ ভাবেই দুর্নীতি মুক্ত করা যাবে।"
বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার অনুমতি ছাড়াই প্রায় এক দশক ধরে আইন বিভাগ চলছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বার কাউন্সিলের অনুমোদন ছাড়া চলছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি কলেজ। তার মধ্যে চারটি সরকারি ও ১০টি বেসরকারি। ২০১৬ সালের পর থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অনুমোদন ছিল না। অনুমোদনের জন্য দেয় ৩৫ লক্ষ টাকা বকেয়া রেখেছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রসঙ্গত, কসবার আইন কলেজে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর বিষয়টি সামনে আসে। তারপরই পদক্ষেপ করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় এই অসুবিধার জন্য আইন বিভাগের কর্মকর্তাদেরই দায়ী করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় যখন বিষয়টি জানতে পারে যখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবে, বিশ্ববিদ্যালয় সমস্যা সমাধানের জন্য একটি কমিটি গঠন করে পদক্ষেপ করে। প্রয়োজনীয় অর্থ অবিলম্বে জমা দেওয়া হয়। তারপরেও বেশ খানিকটা সময় লেগে গেল এই অচলাবস্থা কাটাতে।