ছবি: সংগৃহীত।
একুশে জুলাই এর সমাবেশ পড়ছে সপ্তাহের প্রথম দিন সোমবারে। জানা গিয়েছে, দলীয় কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি সমাবেশে যোগ দেবেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর শাসক দলের সমর্থক কর্মীরাও। তাই রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে মিড ডে মিলের বদলে যাবে শুকনো খাবার, আবার কোথাও শিক্ষকেরাই ধরবেন হাতা-খুন্তি।
নারায়ণ দাস বাঙ্গুর ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, ‘‘মিড ডে মিল যাঁরা রান্না করেন, তাঁরা ইতিমধ্যে এই সমাবেশে যাওয়ার জন্য ছুটি চেয়েছেন। তাই আমরা ঠিক করেছি, মিড ডে মিল শিক্ষকেরা মিলে স্কুলে রেঁধে খাওয়াব পড়ুয়াদের।’’
মিড ডে মিলের ক্ষেত্রে শহরতলি ও জেলার স্কুলগুলিতে রান্না হয় স্কুলের রান্নাঘরে। কলকাতায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কিচেন ক্যান্টিন থেকে রান্না আসে বেশির ভাগ স্কুলে। যে সব স্কুলে পর্যাপ্ত জায়গা আছে সেখানে রান্না করেই খাওয়ানো হয়।
একুশে জুলাই রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মীদের মধ্যে শাসকদলের সমর্থকেরা সমাবেশে থাকবেন। ফলে মিড ডে মিল কারা রাঁধবেন বা পরিবেশন করবেন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।
চেতলা বয়েজ় স্কুলের ক্ষেত্রে মিড ডে মিলের রান্না আসে কিচেন ক্যান্টিন থেকে। গত বছর একুশে জুলাইয়ের সময় এই স্কুলে মিড ডে মিলের বদলে দেওয়া হয়েছিল শুকনো খাবার। এ বছরেও তাই হবে বলে মনে করছেন স্কুলে প্রধান শিক্ষক শুভ্র চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘সমাবেশকে ঘিরে মিড ডে মিল নিয়ে সমস্যা তো হয়। গত বছর ওদের তরফ থেকে শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছিল। এই বছরও এই ধরনের শুকনো খাবারই পাঠানো হবে বলে আশা করছি। তবে এখনও তা জানানো হয়নি।’’
শহর ও শহরতলির একাধিক স্কুলে ওই দিনের মিড ডে মিল নিয়ে প্রশ্ন থাকা সত্ত্বেও এ ব্যাপারে কিছুই জানা নেই আধিকারিকদের। মিড ডে মিলের রাজ্য স্তরের প্রজেক্ট ডিরেক্টর অশ্বিন রাঠোর বলেন, ‘‘এই ধরনের কোনও অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে আমরা কড়া পদক্ষেপ করব।’’
তবে অন্য রকম ছবি দেখা গেল উত্তর কলকাতার অন্যতম স্কুল পার্ক ইনস্টিটিউশনে। সেখানে সমাবেশের কারণে মিড ডে মিলের রান্না যাঁরা করেন তাঁরা না আসবেন না জেনে, স্কুলের তরফ থেকে বৈঠক করে পড়ুয়াদের মিড ডে মিল খাওয়ানোর জন্য এগিয়ে এলেন অভিভাবকেরা। তিনজন অভিভাবক সেই দিন স্কুলে মিড ডে মিল রান্না করবেন এবং তাঁদের সাহায্য করবেন শিক্ষকেরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, ‘‘প্রত্যেক বছর এই দিন আমরা নিজেরাই রান্না করে বাচ্চাদের খাওয়াই। আমাদের ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকেরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করে কারা রাজি, সেটা জানতে চাই। এ বছর তিনজন অভিভাবক এগিয়ে এসেছেন রান্নার কাজে সাহায্য করার জন্য।’’
কল্যাণীর পান্নালাল ইনস্টিটিউশন হোক বা দক্ষিণ ২৪ পরগনা কৃষ্ণচন্দনপুর হাইস্কুল, সর্বত্রই কমবেশি একই ছবি। পান্নালাল ইনস্টিটিউশনের সহকারী প্রধান শিক্ষক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘সোমবার যদি মিড ডে মিলের রাঁধুনিরা না আসেন, তা হলে বাচ্চাদের সে দিন মিড ডে মিল খাওয়ানো যাবে না। যদিও তাঁরা এখনও কী করবেন তা স্কুলকে জানাননি।’’
অন্য দিকে, এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক কর্তা জানিয়েছেন, এই বিষয়টি সমগ্র শিক্ষা মিশনের অধীনে শিক্ষা দফতর থেকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই তাঁদের কোনও বক্তব্য নেই।