The Park Institution Nature Study

গাছের তলায় ক্লাস করাচ্ছে উত্তর কলকাতার দ্য পার্ক ইনস্টিটিউট! ছোটরা পাচ্ছে প্রকৃতির পাঠ

স্কুলের নির্দিষ্ট সময়ে ক্লাসের মাঝেই ‘নেচার স্টাডি’ নিয়ে ভাবছেন স্কুলের শিক্ষকেরা। স্কুল চলাকালীন প্রায়ই পড়ুয়াদের নিয়ে স্কুলের পাশের মাঠে (দেশবন্ধু পার্ক) চলে যান ওই স্কুলের সহকারি শিক্ষক তুষারশুভ্র মণ্ডল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫ ১৬:৩৪
Share:

গাছের তলায় বসে চলছে ক্লাস। নিজস্ব চিত্র।

ঘুরতে ঘুরতে যদি চলে যাওয়া যায় উত্তর কলকাতার দেশবন্ধু পার্কে, দেখা যাবে বড় বড় গাছ। যদি চিনে নিতে অসুবিধা হয়, নিজের হাতের মোবাইল ফোনটি ব্যবহার করে স্ক্যান করে নিতে হবে গাছের গায়ে লাগানো কিউআর কোড। কী গাছ, কেমন তার প্রকৃতি— সব জেনে নেওয়া যাবে। কিন্তু এত গাছে কিউআর কোড লাগাল কারা? উদ্যানের পাশেই রয়েছে, শতবর্ষ প্রাচীন স্কুল দ্য পার্ক ইনস্টিটিউশন। এ সব কাজ সেখানকার ছাত্রদেরই।

Advertisement

কলকাতার চারপাশে ক্রমশ কমে আসছে গাছপালা, ক্রমশ কমে আসছে মানুষের অবসরও। বাড়ির খুদেরা ছুটে চলেছে ইঁদুর দৌড়ে। যেটুকু অবসর, তা-ও কাটে মুঠোফোনের রঙিন ভিডিয়োয়। এখন সমাজমাধ্যমও বহু খুদেকেই ‘সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার’-এর তকমা দিয়েছে। বড়রাও খুশি সে সব নিয়ে। কিন্তু এর মাঝে হারিয়ে যাচ্ছে স্বাভাবিকতা। গাছপালা, পশুপাখি চেনে না এখনকার শিশুরা।

এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের নিয়ে ভাবছে উত্তর কলকাতার স্কুল দ্য পার্ক ইনস্টিটিউশন। স্কুলের নির্দিষ্ট সময়ে ক্লাসের মাঝেই ‘নেচার স্টাডি’ নিয়ে ভাবছেন স্কুলের শিক্ষকেরা। স্কুল চলাকালীন প্রায়ই পড়ুয়াদের নিয়ে স্কুলের পাশের মাঠে (দেশবন্ধু পার্ক) চলে যান ওই স্কুলের সহকারি শিক্ষক তুষারশুভ্র মণ্ডল। শুধু মাঠই নয়, ঘোরেন স্কুলের আশেপাশের এলাকাও। কিন্তু হঠাৎ স্কুলের সময় পড়ুয়াদের নিয়ে মাঠে-ঘাটে ঘোরেনই বা কেন?

Advertisement

উত্তরে তুষার বলেন, ‘‘আমরা পড়ুয়াদের নিয়ে গাছ চিনতে বেরোই। বর্তমান সময় শিশুরা সবুজ চিনতে শিখছে না। প্রাথমিক শিক্ষাই মানুষের শিকড়। শুধু বইয়ের মধ্যেই আবদ্ধ থেকে নয়, প্রকৃতির সঙ্গেও ছোটদের পরিচিত করতে আমাদের এই প্রয়াস।” তুষার জানিয়েছেন, মাঠে গিয়ে সরাসরি গাছ দেখে চেনা শিশু মনেও আগ্রহ বাড়ায়। প্রকৃতির সান্নিধ্য তাদের সমৃদ্ধ করে। শুধু গাছ চেনাই নয়, স্কুলের উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে কিউআর কোড। শিক্ষকদের সাহায্য নিয়ে পড়ুয়ারা নিজেরাই বিভিন্ন গাছের কিউআর কোড তৈরি করেছে। সেই কিউআর কোড ছাপিয়ে সংশ্লিষ্ট গাছের গায়ে লাগানো হয়েছে। যে কোনও ব্যাক্তি ওই কোড স্ক্যান করলেই সংশ্লিষ্ট গাছের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, ‘‘পৃথিবী বাঁচলে আমরা বাঁচব। এমন কার্যকলাপের মধ্যে দিয়ে শিশুদের মধ্যে বৃক্ষ রোপণের বিষয়েও আগ্রহ বাড়বে। তাই আমি ওঁদের সব সময় বলি গাছকে চেনো, গাছকে জানো, গাছের সঙ্গে বন্ধুত্ব কর।’’

গরমের ছুটিকেও কাজে লাগিয়েছেন তুষার। ওই সময় স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে মাঠে গিয়েছিলেন তুষার-সহ স্কুলের অন্য শিক্ষকেরা। গাছের তলায় বসেই গাছ চেনার ক্লাস হয়েছে। পাশপাশি, স্কুলে ক্লাসের সময়ও পড়ুয়াদের বিভিন্ন ধরনের বাড়ির কাজ দেওয়া হয়। কখনও বলা হয় আশে পাশে কোনও কর্পূর গাছ আছে কি না, তা খোঁজ নিয়ে দেখতে। কখনও আবার কোনও গাছের বিষয়ে বিস্তারিত জানার পরামর্শ দেওয়া হয়। এর ফলে পড়ুয়ারাও ক্লাস করতে বেশ আগ্রহ পাচ্ছে বলেই জানিয়েছেন তুষার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement