প্রচারে টাকা বিলির অভিযোগ ডালুর বিরুদ্ধে, কমিশনে নালিশ

ভোটের প্রচারে গিয়ে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করার অভিযোগ উঠল দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালুবাবু)-র বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ ইংরেজবাজার পুরসভার ২০ নম্বর ওর্য়াডের কোঠাবাড়ি এলাকায় দলীয় প্রার্থী নবীন দাসের সমর্থনে প্রচারে গিয়ে এক বৃদ্ধাকে হাজার টাকা দেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মালদহের রির্টানিং অফিসারের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও ডালুবাবু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মালদহের মহকুমাশাসক (সদর) নন্দিনী সরস্বতী বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা ডালুবাবুকে শো-কজ করেছি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে। তা পেলে এর পরের পদক্ষেপ করা হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লদহ শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৫ ১৯:০৮
Share:

সেই টাকা দেখাচ্ছেন বৃদ্ধা। মঙ্গলবার মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

ভোটের প্রচারে গিয়ে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করার অভিযোগ উঠল দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালুবাবু)-র বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ ইংরেজবাজার পুরসভার ২০ নম্বর ওর্য়াডের কোঠাবাড়ি এলাকায় দলীয় প্রার্থী নবীন দাসের সমর্থনে প্রচারে গিয়ে এক বৃদ্ধাকে হাজার টাকা দেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মালদহের রির্টানিং অফিসারের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও ডালুবাবু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মালদহের মহকুমাশাসক (সদর) নন্দিনী সরস্বতী বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা ডালুবাবুকে শো-কজ করেছি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে। তা পেলে এর পরের পদক্ষেপ করা হবে।’’

Advertisement

এ দিনের ঘটনায় ডালুবাবুর বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের তরফ থেকে রির্টারনিং আফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তথা ওই ওর্য়াডের প্রার্থী দুলাল সরকার বলেন, ‘‘বেশ কিছু দিন ধরে আমরা শুনতে পারছিলাম এলাকায় কংগ্রেস টাকা বিলি করছে। ওই ওর্য়াডের কংগ্রেস প্রার্থী এক চিটফান্ড কোম্পানির এজেন্ট ছিলেন। মানুষের টাকা লুঠ করে ভোটে বিলি করছেন। এ দিন আমরা সংবাদমাধ্যমে দেখতে পাই, ডালুবাবু এক বৃদ্ধা মহিলাকে টাকা দিচ্ছেন। এতে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয়েছে বলে আমরা মনে করি। তাই আমরা অভিযোগ করেছি। আশা করি, কমিশন তদন্ত করে আইনি পদক্ষেপ করবে।’’

এই বিষয়ে কংগ্রেস প্রার্থী নবীন দাস বলেন, ‘‘এ দিন আমাদের প্রচারে ব্যাপক ভিড় হয়েছিল। সেই ভিড় দেখে তৃণমূল চক্রান্ত করে এমন রটাচ্ছে। ভোটে কারা টাকা বিলি করছেন তা মানুষ নিজের চোখে দেখছেন। তাই এই বিষয়ে বেশি কিছু বলব না।’’

Advertisement

সাংসদ ডালুবাবু অবশ্য প্রচারে গিয়ে কাউকে টাকা দেওয়ার প্রশ্নই নেই বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কাউকে টাকা দিইনি। সংবাদমাধ্যমে দেখাছে আমি পকেটে হাত দিয়েছি। তবে পকেট থেকে কী বার করছি তা দেখায়নি। আমি একটি কাগজ আমার এক কর্মীকে দিয়েছিলাম। তাই টাকা দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি ওই এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করেছি। সবার কাছে গিয়ে শুনতে পারেন আমি টাকা দিয়েছি কিনা। আমি এখনও শো-কজ চিঠি পাইনি। পেলে তার উত্তর দেব।’’

এ দিন নির্বাচনী প্রচারের মালদহে যান প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে ঘটনাটা দেখেছি। ঘটনার বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। আমরা দেখলাম ডালুবাবু পকেটে হাত দিয়েছেন। তবে কী বার করেছেন তা আমরা দেখতে পাইনি। অভিযোগ যে কেউ করতে পারে। প্রশাসন তা খতিয়ে দেখবে।’’

যাঁকে ঘিরে এই ঘটনা, ২০ নম্বর ওর্য়াডের কোঠাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ওই বৃদ্ধার নাম ব্রজবালা ঘোষ। সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা ভিক্ষা করে সংসার চালান। সংসারে তাঁর একমাত্র বিধবা মেয়ে রয়েছে। একটি ভাঙাচোরা ঘরে কোন রকমে বসবাস করেন তাঁরা। এ দিন সকালে ওই বৃদ্ধাকে এক হাজার টাকা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। টাকা দেওয়ার পর ‘হাত’ চিহ্নে ভোট দিতে বলা হয়েছে বলে দাবি বৃদ্ধার। তাঁর কথায়, ‘‘এ দিন কে এসেছিল, আমি তাঁকে চিনি না। আমাকে এক হাজার টাকা দিয়ে বলা হয় কিছু খেতে। এক জন আমাকে হাত দেখিয়ে বলেন এই চিহ্নে ভোট দিতে। আমি কারও কাছে টাকা চাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন