West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls 2021: উদ্ধার হওয়া ‘ব্যালট’ গেল ‘স্ট্রংরুম’-এ

বুধবার তালড্যাংরার তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী অভিযোগ তোলেন, সিমলাপাল ব্লক দফতরের ‘ড্রপবক্স’-এ সরকারি কর্মীদের ভোট দেওয়া প্রায় দু’শো ‘পোস্টাল ব্যালট’ পড়ে রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বাঁকুড়া ও খাতড়া শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২১ ০৭:১৬
Share:

সিমলাপাল থেকে খাতড়ার পথে। নিজস্ব চিত্র।

বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লক অফিসের ‘ড্রপবক্স’ থেকে বার করে ভোট দেওয়া পোস্টাল ব্যালট বৃহস্পতিবার জমা করা হল খাতড়ার ট্রেজারি অফিসের ‘স্ট্রংরুমে’। গোটা বিষয়টি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে সরব হয়েছেন বিভিন্ন দলের ভোটপ্রার্থীরা। এ নিয়ে কী পদক্ষেপ করা হবে, নির্বাচন কমিশনের কাছে তা জানতে চেয়েছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন।

Advertisement

বুধবার তালড্যাংরার তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী অভিযোগ তোলেন, সিমলাপাল ব্লক দফতরের ‘ড্রপবক্স’-এ সরকারি কর্মীদের ভোট দেওয়া প্রায় দু’শো ‘পোস্টাল ব্যালট’ পড়ে রয়েছে। রাতেই ব্লক অফিসে ‘ড্রপবক্সটি’ পুলিশি ঘেরাটোপে রাখার ব্যবস্থা করে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের এজেন্টদের সামনে ‘ড্রপবক্স’ খোলা হয়। সেখান থেকে ৩৭টি ভোট দেওয়া ‘পোস্টাল ব্যালট’ উদ্ধার হয় বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। সেগুলি খাতড়া মহকুমার ট্রেজারি অফিসের ‘স্ট্রংরুম’-এ রাখা হয়েছে। গোটা ঘটনাটি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি জেলা প্রশাসনিক কর্তারা। বাঁকুড়ার জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ারের সঙ্গে চেষ্টা করেও ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব আসেনি মেসেজেরও।

এ দিন তালড্যাংরার তৃণমূল প্রার্থী অরূপবাবু বলেন, “খুব বড় অনিয়ম হয়েছে।” ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শ্যামল সরকার বলেন, “ভোটের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও প্রশাসনের এমন উদাসীনতা দেখে অবাক হচ্ছি।” সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী মনোরঞ্জন পাত্র বলেন, “প্রশাসন একটু সতর্ক হলে এমনটা হত না।”

Advertisement

বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবার ঘটনাটি জেলা প্রশাসনের নজরে আসার পরেই বিডিও (সিমলাপাল) অরিজিৎ দাসকে ‘শো-কজ়’ করা হয়। সূত্রের খবর, তিনি সেই ‘শো-কজ়’-এর উত্তর দিয়েছেন। জেলার বাকি ব্লকগুলিতেও কোথাও ভোট হয়ে যাওয়া পোস্টাল ব্যালট জমা রয়েছে কি না, তা নিয়েও জেলা প্রশাসনের তরফে খোঁজ নেওয়া হয়। যদিও এমন ঘটনা আর কোথাও ঘটেনি বলেই দাবি করেছে প্রশাসন।

এ বারের নির্বাচনে কোনও ব্লক দফতরেই ‘পোস্টাল ব্যালট’ জমা করার নির্দেশ ছিল না। ভোট কর্মীদের জন্য জেলার তিনটি মহকুমায় একটি করে প্রশিক্ষণ শিবির গড়া হয়েছিল। সেখানেই ‘পোস্টাল ব্যালট’ জমা করার ব্যবস্থা ছিল। যাঁরা সেখানে জমা দেননি, তাঁদের ডাকে ব্যালট জমা করতে বলা হয়। তার পরেও কী ভাবে সিমলাপাল ব্লক অফিসের ‘ড্রপবক্স’-এ পোস্টাল ব্যালট জমা পড়ল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জেলার প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “নিজে থেকেই সিমলাপালের বিডিও ব্লক অফিসের ড্রপবক্সে পোস্টাল ব্যালট জমা নেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হন। এমন সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানা ছিল না।”

বিডিও (সিমলাপাল) অরিজিৎ দাস অবশ্য বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। এ দিন ফোনে তিনি বলেন, “এ নিয়ে যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই বলবেন। আমি যা জানানোর, তাঁদের জানিয়েছি।” প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, “সিমলাপালের বহু প্রত্যন্ত এলাকায় ডাক-যোগাযোগ সুবিধাজনক না হওয়াতেই কিছু ভোটকর্মী বিডিও অফিসে এসে ড্রপবক্সে পোস্টাল ব্যালট জমা দিয়েছেন বলে বিডিও দাবি করেছেন।”

ভোট হয়ে যাওয়া ওই ‘পোস্টাল ব্যালট’গুলির বৈধতা নিয়েও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে। অরূপবাবু বলেন, “গোটা বিষয়টিই তো নিয়ম বিরুদ্ধ হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের মনে একটা সন্দেহ রয়ে গিয়েছে।” জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “নির্বাচন কমিশনকে জেলা প্রশাসনের তরফে সব জানানো হয়েছে। আপাতত উদ্ধার হওয়া ব্যালটগুলি খাতড়ার ট্রেজারি অফিসের স্ট্রংরুমে পৃথক ভাবে রাখা হয়েছে। সেগুলিকে বৈধ হিসেবে ধরা হবে কি না, তা নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন