অভিষেকের কারণে হতাশায় ভুগতেন অমিতাভ! ছবি: সংগৃহীত।
হিন্দি সিনেমায় নিজের ২৫ বছর পূর্ণ করলেন অভিষেক বচ্চন। বলিউডে আসার দিন থেকে বাবা অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে তুলনা চলেছে নিরন্তর। কেরিয়ারের শুরুর দিকে কটাক্ষ সমালোচনায় জর্জরিত হতে হয়েছে অভিষেককে। যদিও সময়ের সঙ্গে পরিণত হয়েছেন তিনি। হিন্দি সিনেমার ভরসাযোগ্য অভিনেতা হয়ে উঠতে পেরেছেন। তবে, ছেলেকে নিয়ে খুশি নন অমিতাভ। বরং, হাতাশায় ভুগছেন অভিষেকের কারণে!
বিখ্যাত তারকার সন্তানের কাঁধে দায়িত্ব অনেক। বলিউডের ইতিহাসে এ রকমও দেখা গিয়েছে, বাবার জুতোয় পা গলানোর বৃথা চেষ্টায় হারিয়ে গিয়েছেন বহু অভিনেতা। ‘রিফিউজি’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে যাত্রা শুরু করার পর অভিষেককে কিন্তু পায়ের নীচে শক্ত জমি পেতে বিস্তর পরিশ্রম করতে হয়েছে। এক সময় দর্শকের সমালোচনার পাশপাশি বাবার কাছে সমালোচিত হয়েছে অভিষেককে। ছেলের অভিনয় দেখে হতাশ হয়ে গিয়ে অমিতাভ বলেছিলেন, “এই জন্য এত খরচ করেছি তোমার পড়াশোনার পিছনে! একটা সংলাপ বলতে পার না!” ঘটনাটি ২০০৪ সালের, রাম গোপাল বর্মা ‘সরকার’ ছবিতে প্রথম বার বাবা-ছেলে একসঙ্গে। স্ক্রিন টেস্টের জন্য বাবা অমিতাভের সঙ্গে একটি সংলাপ বলতে হবে। ওই বছরই অভিষেকের ‘যুবা’ ছবি মুক্তি পেয়েছে। সিঙ্গাপুরে এই ছবির বিশেষ প্রদর্শনী শাম্মি কপূর অভিষেকের প্রশংসা করেন। ছেলের প্রশংসায় চোখ ছল ছল করে উঠেছিল মা জয়া বচ্চনের। কিন্তু সেই সময় কোনও মন্তব্য করতে চাননি অমিতাভ। স্বল্প কথায় বলেন, “যা বলার পরে বলব।” পরে জানিয়েছিলেন অভিষেকের অভিনয় ‘যুবা’ ছবিতে মোটেই ভাল লাগেনি তাঁর। তার পরই সরকার’ ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হন বাবা-ছেলে।
অভিষেকের কথায়, “স্ক্রিন টেস্টের দিন খুব ঘাবড়ে ছিলাম, হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল। আমার সংলাপের মধ্যে ছিল একটা শব্দ ‘জি’ (‘আজ্ঞে’)। আমাকে বাবা পিছন থেকে ডাকবে আমাকে বলতে হবে ‘জি’। সেটা কিছুতেই বলতে পারছিলাম না। ওই অংশটা পরিচালককে ফেলে দিতে হয়। সেই ঘটনার পর গাড়িতে ডেকে বাবা বলেছিলেন, এই জন্য এক কষ্ট করে রোজগার করে লেখাপড়া শিখিয়েছি? একটা উচ্চারণ করতে পারছ না!” যদিও এখন অবশ্য একেবারেই উলটপুরাণ। ছেলের প্রতিটি ছবি মুক্তির আগে পরে তাঁকে নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন বিগ-বি। ছেলেকে কটু কথা বললে রীতিমতো লড়াই করেন সমাজমাধ্যমে।
অমিতাভ বচ্চনের ছেলে হিসেবে তিনি দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছেন কি না, তা নিয়ে তর্কের অবকাশ রয়েছে। তবে অভিষেক বচ্চন নিজে মনে করেন, যে ‘স্টারডম’ তাঁর বাবা অর্জন করেছেন, তা আর অন্য কারও পক্ষে করা সম্ভব নয়। অভিষেকের মতে, বিগ-বি’র মতো ‘স্টারডম’-এর আকাঙ্ক্ষা তাঁর কখনওই ছিল না। অন্য কারও সে চেষ্টা করা উচিত নয়। অভিষেক মনে করেন, অমিতাভ হলেন সূর্যের মতো। তাঁকে আবর্তন করেই সকলের চলা উচিত। নিজের দুই দশকের কেরিয়ারকে সামগ্রিক ভাবে একটি শিক্ষার প্রক্রিয়া হিসেবেই নিচ্ছেন অভিষেক।