দেউলিয়া হয়েছিল অমিতাভের প্রযোজনা সংস্থা। ছবি: সংগৃহীত।
দেশের প্রথম সারির তারকা অমিতাভ বচ্চন। তাঁর সাফল্য অপরিসীম। কিন্তু, তাঁরও কর্মজীবনে এমন এক অবস্থা আসে যখন অর্থাভাবের কারণে তাঁকে অন্য এক বলি অভিনেতার কাছে হাতজোড় করতে হয়। নিজের প্রযোজনা সংস্থা ‘অমিতাভ বচ্চন কর্পোরেশ লিমিটেড’ (এবিসিএল) খুলে রীতিমতো দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন অভিনেতা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই বিষয়ে মুখ খুললেন টিনু আনন্দ।
‘মেজর সাব’, ‘তেরে মেরে সপনে’র মতো বেশ কিছু ছবির প্রযোজনা করেছিল অমিতাভের সংস্থা। ‘দেখ ভাই দেখ’-এর মতো জনপ্রিয় টেলিভিশন শো প্রযোজনার দায়িত্বে ছিল এই সংস্থা। কিন্তু সংস্থার সাফল্য ঊর্ধ্বমুখী ছিল না। প্রায় ৯০ কোটি টাকার লোকসান হয়। একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন অভিনেতা। সেখানেও বিপুল ক্ষতি হয়েছিল। সেই সময় অমিতাভের কেরিয়ারও ছন্দে ছিল না। তাই সংস্থাকে ভরাডুবির হাত থেকে রক্ষা করতে পারেননি অভিনেতা।
টিনু পরিচালিত ‘মেজর সাব’-এর কাজ শুরু থেকেই সমস্যার মুখে পড়তে শুরু করে। কারও বেতন দেওয়া যাচ্ছিল না সঠিক সময়ে, ফলে কলাকুশলীরা কাজ করতে মানা করে দেয়। পরিচালকের কথায়, “আমরা যে কোন কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ করেছি, শুধু আমিই জানি। প্রযোজকের হাতে টাকা ছিল না এবং গোটা ইউনিটকে তিনি একটা হোটেলে রেখেছিলেন। ভাবুন! দু’দিন অন্তর অন্তর সকলে কর্মবিরতির ঘোষণা করত কারণ তাঁদের টাকা দেওয়া হচ্ছিল না। কাজ না করার হুমকি দিত রোজ। তখনই সিদ্ধান্ত নিই, আর কোনও দিন ছবি পরিচালনা করব না। কারণ আমার যন্ত্রণা কেউ বুঝবে না। আমি গোটা ইউনিটের কাছে অপমানিত হতাম। মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হত।”
কয়েক বছর আগে এক সাক্ষাৎকারে অমিতাভের আর্থিক এবং মানসিক অবস্থা নিয়ে কথা বলেন বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা অঞ্জন শ্রীবাস্তব। বাংলা এবং হিন্দি নাটকের পাশাপাশি ‘কভি হাঁ কভি না’, ‘রাজু বন গয়া জেন্টলম্যান’-এর মতো হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেছেন অঞ্জন। অমিতাভ যখন দেনায় ডুবে গিয়েছিলেন সেই সময় অনেকেই তাঁর বিরুদ্ধে কুমন্তব্য করছিলেন। এমনকি বিনোদন সংস্থার কর্মীরাও অমিতাভের বিরুদ্ধে কুকথা বলতে পিছপা হননি, এমনটাই দাবি করেন অঞ্জন। অমিতাভ নিজেও জানিয়েছিলেন, সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় ৫৫টি মামলা দায়ের হয়েছিল, প্রায় রোজই বাড়িতে পাওনাদারেরা আসতেন। কিন্তু নিজের চেষ্টায় ওই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। একের পর এক ছবিতে কাজ করে ঘুরে দাঁড়ান অমিতাভ বচ্চন। ধীরে ধীরে ফের বলিউডের ‘শাহেনশাহ’ হয়ে ওঠেন তিনি।