Coronavirus

ঘরে বসেই কিস্তিমাত

বাড়িতে বসে খেলার ছলেই মন ভাল রাখার চেষ্টা করছেন টলিউডের সেলেবরা। কোন তারকা কী খেলছেন, তার কমেন্ট্রি করল আনন্দ প্লাস পুরনো নেশায় শান দিচ্ছেন অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র। চঞ্চল মনের রাশ টানতে দাবার ঘুঁটিই তাঁর জিয়নকাঠি।

Advertisement

ঈপ্সিতা বসু 

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২০ ০১:১৯
Share:

দাবার ছকে রুক্মিণী-প্রিয়ঙ্কা-সহজের ইন্ডোর দুনিয়া

ছোটবেলাটা যেন আবার ফেরত চলে এসেছে। যে খেলাগুলোর স্মৃতি ক্রমশ ধূসর হতে বসেছিল, সেগুলোই ফের টাটকা হয়ে উঠেছে। যে দাবার বোর্ডের উপরে ধুলোর পরত জমেছিল, সেখানে এখন রাজা-উজির লড়াই চালাচ্ছে। আসলে গৃহবন্দি অবস্থায় তারকারা মেতে উঠেছেন ইন্ডোর গেমসে।

Advertisement

‘‘চলো, এক দান হবে নাকি...’’ থেকে থেকেই লুডোর বোর্ড নিয়ে বসে পড়ছেন শুভশ্রী। তাঁর মতে, সময় কাটানোর জন্য এর চেয়ে ভাল কিছু আর হয় না। তাই ঘর পরিষ্কার, রান্নার ফাঁকে সময় পেলেই তিনি পরিবারের সকলকে নিয়ে লুডো খেলায় মেতে উঠছেন। খেলায় শামিল করেছেন রাজ চক্রবর্তীকেও। তা জিতছে কে? এখানেও বোধহয় লেডি লাক কাজ করছে! রাজ বলছিলেন, ‘‘আমার ভাগ্নী আর মায়ের সঙ্গেই সারা দিন লুডো খেলছে শুভ। আমাকেও টেনে নিয়ে যায়। কিন্তু আমি খালি হেরেই যাই। আর জিতে যাওয়ার পরে শুভশ্রী ছোট বাচ্চাদের মতো লাফালাফি করতে থাকে।’’ ভাগ্নীর কাছ থেকে শিখে লাইফস্টাইল খেলা (বোর্ড গেম)-এ মেতেছেন এই সেলেব-দম্পতি। অস্থির সময়ে ছোট ছোট আনন্দগুলোই তো পাওনা।

Advertisement

লুডোয় মেতেছেন আর এক অভিনেত্রী সন্দীপ্তা সেন। বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গে লুডোর প্রতিযোগিতা শুরু করেছেন তিনি। ‘‘ঠিক করেছি, যে কম্পিটিশনে জিতবে লকডাউন উঠে গেলে তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে,’’ সন্দীপ্তার গলায় উত্তেজনা।

পুরনো নেশায় শান দিচ্ছেন অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র। চঞ্চল মনের রাশ টানতে দাবার ঘুঁটিই তাঁর জিয়নকাঠি। তাই কখনও একা, আবার কখনও মায়ের সঙ্গে দাবার ছক নিয়ে বসে পড়ছেন নায়িকা। ‘‘ছোটবেলায় দাদু ও ঠাকুরদার কাছে দাবা শিখেছি। তার পর বেড়াতে গেলে দাবার সেট কিনে ফিরতাম। তার সব অবশ্য খেলার জন্য নয়, ঘর সাজাতেও কাজে লাগিয়েছি,’’ বলছিলেন রুক্মিণী।

আরও পড়ুন: ‘সাম্প্রদায়িক পোস্ট’, টুইটার থেকে সাসপেন্ড কঙ্গনার দিদি রঙ্গোলি

বাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলে তাকে এনগেজড রাখার জন্য ইন্ডোর গেমসের চেয়ে ভাল কিছু আর হয় না। এই অস্ত্র দিয়েই ছেলে সহজকে সামলাচ্ছেন অভিনেত্রী প্রিয়ঙ্কা সরকার। বলছিলেন, ‘‘আমি ছোট থেকেই শান্ত প্রকৃতির। আমার খেলনাগুলো এখনও সব ভাল রয়েছে। সহজের জন্য আমার ছোটবেলার ওয়র্ড বিল্ডিং, পাজ়ল, লেগোর সেট... সব পাঠিয়ে দিয়েছে আমার মা। ছেলে এখন ওগুলো নিয়েই খেলছে।’’ এতেই শেষ নয়, চলছে কাটাকুটি, ফুল-ফল-নাম-দেশ খেলাও। এ সবের ফাঁকে সময় পেলে তবেই হচ্ছে পড়াশোনা, হাসতে হাসতে জানালেন প্রিয়ঙ্কা।

যদি এমন কোনও খেলা থাকে যা, ঘরে বসেই খেলা যাবে আবার শারীরিক কসরতও হবে। হদিশ দিলেন মুমতাজ় সরকার, ‘‘কেবল অবসরে আনন্দ দেয় না, শরীর-মন দুই সচল রাখার জন্য আমার ভাল লাগে ডাইভ বম্বার।’’ এই খেলায় নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে কাগজের তৈরি প্লেন ছুড়ে রিংয়ের মধ্য দিয়ে পাস করাতে হয়। মুমতাজ়, মৌবনী, মানেকা তিন বোনই এখন এই খেলায় মেতেছেন।

টিনএজারদের বাড়িতে আটকে রাখা বেশ দুষ্কর। যে কারণে অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ছেলে যশোজিৎকে দিনের অনেকটা সময়ই দিচ্ছেন। বাবা-ছেলে মিলে ক্যারম খেলতে বসে পড়ছেন। জয়জিতের কথায়, ‘‘সিটি কলেজে কর্মাস নিয়ে পড়ার সময়ে ক্লাস বাঙ্ক করে কমনরুমে ক্যারম খেলতে চলে যেতাম। তার পর অনেক বছর খুব কমই বসা হয়েছে ক্যারম নিয়ে। লকডাউন সেই সুযোগ করে দিল।’’

কিছু সেলেব আবার অনলাইন গেমে মেতেছেন। ‘‘অনলাইনে লুডো ডাউনলোড করে খেলছি,’’ বলছিলেন বনি সেনগুপ্ত। তাঁর খেলার সঙ্গী কৌশানী মুখোপাধ্যায় ও আরও দুই বন্ধু। বনির মতোই মোবাইল অ্যাপে লুডো বেছে নিয়েছেন তনুশ্রী চক্রবর্তী, ইশা সাহা, মানালি দে। খেলায় হারলে রাতের ঘুম চলে যায় মানালির। এমনই তাঁর নেশা যে, অনলাইনে তিনটে আলাদা আলাদা টিমে খেলেন তিনি। তাঁর সব দলের সঙ্গী পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়।

এ দিকে অভিনেতা যশ দাশগুপ্ত সময় কাটাচ্ছেন মনোপলি খেলে। সিরিয়ালের শুটিং মিস করলেও পছন্দের খেলা জেংগা নিয়ে বেশ উত্তেজিত গৌরব চট্টোপাধ্যায়। ছোট ছোট কাঠের টুকরো জুড়ে ব্যালান্সিংয়ের এই খেলায় গৌরবকে টেক্কা দেওয়া নাকি বেশ কঠিন। গৌরবের বোন নবমিতা আবার উনো খেলতে বেশ পছন্দ করেন। তরুণকুমারের নাতি সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় এ ক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গী।

আরও পড়ুন: বাড়ির আশেপাশে চোর-পুলিশ খেলা চলছে প্রতিদিন: দিতিপ্রিয়া

লকডাউন কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছু। কিন্তু কিছু জিনিস আবার ফিরিয়েও দিয়েছে। যেমন এই ছেলেবেলার খেলাগুলো।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন