অফিসে কাজের ফাঁকতালে চোরা অনুভূতিটা কিছুতেই ছাড়ছিল না মালবিকাকে।
উঠতে-বসতে, লাঞ্চ-বিরতিতে এমনকী সহকর্মীদের সঙ্গে গল্প করার ফাঁকেও যেন ফিরে ফিরে আসে চোরাগোপ্তা সেই অনুভূতি।
মানসিক চাপ। পোশাকি নামে স্ট্রেস। কর্টিসল, এপিনেফ্রেনাইন, অ্যাড্রিনালিন ধরনের কিছু স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে নানা বিপত্তি ঘটে যায়। অবসাদ, উদ্বেগ, অনিদ্রা, হতাশায় আক্রান্ত হন মানুষ। মস্তিষ্ক রসায়নে এ বার চাই পরিবর্তন। ওয়ার্কআউট করলে হ্যাপি হরমোন এন্ডরফিনের ক্ষরণ হয়। পাশাপাশি মুড এলিভেটিং হরমোন সেরোটোনিন-এর মাত্রাও বাড়ে। দুয়ে মিলে স্ট্রেস কাটে।
যেমন স্ট্রেস তেমন ওয়ার্কআউট
বাই বাই স্ট্রেস
• মশলা, কোনও রকম ভাজা বা প্রসেসড খাবার একেবারে এড়িয়ে যান
• হাল্কা স্যুপ, সেদ্ধ করা ভুট্টা, অল্প তেলে মুর্গির স্যুপ খেতে পারেন
• কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারও কিন্তু অবসাদের দারুণ টোটকা। তাই আপেল, আঙুর, পাকা পেঁপে, ন্যাসপাতি খান যত খুশি
• ডাবের জল, টক দই, শশা বা লাউ উদ্বেগ, অস্থিরতা কাটাতে দারুণ কাজ দেয়
স্ট্রেসের ধরন দেখে ওয়ার্কআউট বাছুন।
অবসাদ, হতাশা, এনার্জি কম লাগলে ইনটেন্স বা একটু তীব্র মাত্রার ওয়ার্কআউট করুন যাতে আপনি চাঙ্গা হতে পারেন। উদ্বেগ, অনিদ্রা, হাইপার হয়ে গেলে ব্রিদিং, স্ট্রেচিং, ইয়োগা, খেলার ড্রিল করুন যাতে আপনি শান্ত ভাব আনতে পারেন।
আর নয় অবসাদ
চিৎ হয়ে শুয়ে হাঁটু দুটো বুকের কাছে জাপটে ধরুন। লম্বা শ্বাস ছেড়ে এ বার উঠে বসে দু’পা টানটান রেখে দু’হাত দিয়ে পায়ের পাতা স্পর্শ করার চেষ্টা করুন আপনার নমনীয়তা অনুযায়ী। পর্যায়ক্রমে শোয়া-বসা চলুক দশ বার। মোট দুবার করতে পারেন।
বাড়ান আত্মবিশ্বাস
চটপট ক’টা পুশ আপ দিন। কাঁধ সমান চওড়া দূরত্বে্ হাত দুটো মাটিতে রেখে পায়ের পাতায় ভর দিয়ে বুকটা মাটি স্পর্শ করুন লম্বা শ্বাস নিয়ে। আবার তুলুন শ্বাস ছেড়ে। মোট ৩০-টা পুশ আপ দিতে হবে। আত্মবিশ্বাস বাড়ে এই ওয়ার্কআউটে।
বল ড্রিল
ফুটবলের মাপে ড্রপ খায় এমন হাল্কা একটা বল জোগাড় করুন। বলটা ড্রপ দিয়ে দিয়ে দ্রুত পাশাপাশি ছ’পা যান। আবার পাশাপাশি দ্রুত ফিরে আসুন শুরুর জায়গায়। এ বার বল ড্রপ দিয়ে ছ’পা দ্রুত সামনে যান। আবার ব্যাক রান করে ফেরত আসুন। পাঁচ বার করার পর বিশ্রাম নিন। এই ওয়ার্কআউট হার্টরেট বাড়ায়।
উদ্বেগ অনিদ্রার ওয়ার্কআউট
বুকের কাছে পা’টা জাপটে ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখলে রিল্যাক্সড লাগবে। কোবরা বা ক্যাট স্ট্রেচটাও একই রকম ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখতে হবে। এতে চিন্তাভাবনায় স্পষ্টতা আসবে। কর্টিসল বা এপিনেফ্রাইনের ক্ষরণ কমবে। বেশ কিছু যোগব্যায়ামের স্ট্রেচও কার্যকরী ভূমিকা নেবে।
ব্রিদিং
অবসাদ কাটানোর এ এক দারুণ ওয়ার্কআউট। বাবু হয়ে বসে পেটে একটা হাত রেখে এক বার লম্বা শ্বাস নিন আর ছাড়ুন। ২-৩ মিনিট এ ভাবে করবেন। ব্রিদিং মানে শরীরে অনেক বেশি অক্সিজেনের জোগান। শরীর রিল্যাক্সড্ হবে। পেশি শিথিল হয়ে উদ্বেগ দূর হবে।