Kaushik Ganguly & Parambrata Chatterjee

পঞ্জাবিকে কি ‘পাকিস্তানি ভাষা’ বলা হয়? ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বিতর্কে ক্ষুব্ধ কৌশিক ও পরমব্রত

আজও পাকিস্তানের বহু মানুষ পঞ্জাবি ভাষায়, এমনকি গুজরাতি ও সিন্ধি ভাষাতেও কথা বলেন। তা হলে কি পঞ্জাবি ভাষাকে ‘পাকিস্তানি ভাষা’ বলা হয়? প্রশ্ন তুলেছেন পরমব্রত।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৫ ১৪:৪২
Share:

‘বাংলাদেশি ভাষা’ বিতর্কে কী বললেন কৌশিক ও পরমব্রত। ছবি: সংগৃহীত।

বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে একটি চিঠিতে উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অধীন দিল্লি পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে বিতর্ক। যে ভাষায় দেশের জাতীয় সঙ্গীত রচিত, সেই ভাষাকে কী ভাবে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। টলিপাড়ার শিল্পীরাও এই বিষয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় থেকে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

Advertisement

কৌশিক নিজে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ছাত্র, এক সময় করেছেন শিক্ষকতাও। তাই তিনি সেই বিতর্কিত চিঠির ছবি ভাগ করে নিয়ে কৌশিক লিখেছেন, “বাংলা ভাষা আমার প্রিয় বিষয় শুধু নয়। ৮ বছর আমি শিক্ষকতা করেছি বাংলা ভাষার শিক্ষক হিসেবে। ‘বাংলাদেশি ভাষা’র ‘টেক্সট’ বলে কোনও কিছুর অস্তিত্ব আছে, জানতাম না। সেই ভাষা অনুবাদ না করলে তদন্ত বিঘ্নিত হচ্ছে এই চিঠিতে পড়লাম!”

বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলা কি স্রেফ ভুল? বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে তৃণমূল ও পদ্মশিবিরের মধ্যে। কৌশিক তাঁর পোস্টে লিখেছেন, “দিল্লিতে অজস্র বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলা ভাষার বহু শ্রদ্ধেয় অধ্যাপকেরা আছেন। প্রশাসন কি পারে না তাঁদের কাছে গিয়ে নিজেদের বাংলা ভাষা সম্পর্কে ধারণাটা স্বচ্ছ করতে? উইলিয়াম কেরি বাংলা ভাষাটা প্রাণ দিয়ে শিখেছিলেন বাংলার আত্মাকে বুঝতে। আজকের প্রশাসন বাংলা বিষয়ে অস্বচ্ছ হলে সাহায্য নিন। না হলে প্রশাসনিক চিঠিতে নিজেদের মারাত্মক অজ্ঞতা এমন বারবার সামনে আসবে। বাংলা ভাষা থেকে হাজারটা আঞ্চলিক উপভাষা তৈরি হলেও, ‘টেক্সট’ একমাত্র বাংলা। ধন্যবাদ।”

Advertisement

এই বিষয় নিয়ে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও দীর্ঘ পোস্ট করেছেন। পরমব্রত একাধিক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, যে কোনও ভাষা পরিষ্কার ভাবে বলতে পছন্দ করেন তিনি। তাঁর অভিনীত চরিত্রও পর্দায় বাংলা ভাষার হয়ে কথা বলে। অভিনেতা প্রথমেই জানিয়েছেন, তাঁর বক্তব্যে কোনও রকমের রাজনীতি নেই।

তাই পরমব্রত লিখেছেন, “ভারতের রাজনীতিতে আমার যে সামান্য আগ্রহ ছিল, তা ক্রমশ আমি হারিয়ে ফেলেছি।” কৌশিকের মতোই পরমও খোঁচা দিয়েছেন, ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে আলাদা কিছু রয়েছে, তা তিনি জানতেন না। অভিনেতার কথায়, “উপভাষা আলাদা হতে পারে। কিন্তু ভাষাটা একই। আমাদের ভাষা, আমাদের মাতৃভাষা— বাংলা।”

দেশে বাংলা ভাষার অবস্থান ঠিক কোথায়, তা নির্দিষ্ট ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন পরমব্রত। এই ভাষাতে কাজ করে এসেছে নোবেল পুরস্কার। পরম লিখেছেন, দেশভাগের পর থেকে আলাদা হয়েছে দুই বাংলা। কিন্তু ভাষা একটাই। পঞ্জাবও দেশভাগ দেখেছে। তাই আজও পাকিস্তানের বহু মানুষ পঞ্জাবি ভাষায়, এমনকি গুজরাতি ও সিন্ধি ভাষাতেও কথা বলেন। তা হলে কি পঞ্জাবি ভাষাকে ‘পাকিস্তানি ভাষা’ বলা হয়? প্রশ্ন তুলেছেন পরমব্রত।

অভিনেতা তাঁর পোস্টের শেষে লেখেন, “এটা কি নিতান্ত একটি ভুল? যদি তা-ই হয়, তা হলে আপনাদের তথ্য নিয়ে আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত। আমরা হিন্দি ভাষা এবং উত্তর ভারতের অন্য ভাষা ও সংস্কৃতিরও উদ্‌যাপন করি। সেই ভাষার মানুষদেরও আমরা আপন মনে করি। আপনারা সেটা করতে পারেন না?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement