জিতেন্দ্র এবং শোভা কপূর। বলি ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম ‘হ্যাপি কাপল’ বলা হয় তাঁদের। কিন্তু তাঁদের প্রেম কী ভাবে হল? খুব সহজ ছিল কি সেই প্রেমের পথ? বাধা পেরিয়ে কী ভাবে পরস্পরের কাছে এলেন তাঁরা?
জিতেন্দ্রর সঙ্গে শোভার আলাপ একেবারে ছোটবেলায়। শোভা তখন ১৪, আর জিতেন্দ্র ১৬। একেবারে প্রথম দেখাতেই প্রেম। দেখা হয়েছিল মেরিন ড্রাইভে। সমুদ্রতটে। তারপর?
শোভা কলেজে ভর্তি হলেন। জিতেন্দ্র ছবির জগতে পা রাখলেন। বলিউডে নামডাক হতে শুরু করল জিতেন্দ্রর।
শোভা যোগ দিলেন ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে। প্রতি বারই যখন তিনি ভারতে আসতেন বাড়িতে সময় কাটাবেন বলে, কোনও না কোনও নায়িকার সঙ্গে জিতেন্দ্রর সম্পর্কের খবর প্রকাশিত হত, একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন এমনটাই।
তাঁর মন ভোলাতে লং ড্রাইভে নিয়ে যেতেন জিতেন্দ্র, এক সঙ্গে সময়ও কাটাতেন।
জিতেন্দ্রর সঙ্গে শোভার মনোমালিন্যও হয়। হেমা মালিনীর সঙ্গে জিতেন্দ্রর বিয়েও নাকি ঠিক হয়েছিল, বেশ কয়েকটি সর্বভারতীয় দৈনিকে সেই সময় প্রকাশিত হয়েছিল এমনটাই। তখন নাকি ধর্মেন্দ্র এসে পড়েন বিয়ের মণ্ডপে। তখন বিয়ে ভেস্তে যায় জিতেন্দ্র ও হেমার।
এ জাতীয় কথায় সম্পর্কে অশান্তি শুরু হওয়ায় নিজের ভালবাসার মানুষটিকে বিয়ে করবেন তিনি। ১৯৭৩ সালের ১৩ এপ্রিল বিয়েও ঠিক হয়ে যায় দুই পরিবারের সম্মতিতে। কিন্তু জিতেন্দ্রর বাবা আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাঁদের। বিয়ে পিছিয়ে যায়।
হতাশায় ডুবে যেতে থাকেন শোভা, ছেড়ে দেন চাকরি। জিতেন্দ্রর সঙ্গেই থাকবেন বলে ঠিক করেন। বেশ কয়েক বছর ফের তাঁদের জীবনে সংঘাত আর টানাপড়েন, শোভা ছেড়ে দিয়েছেন চাকরি। জিতেন্দ্রর ছবি তখন হিট করছে না।
‘বিদাই’ নামে ছবি মুক্তির আগে জিতেন্দ্র শোভাকে কথা দেন, এটি হিট করলেই বিয়ে করবেন তাঁরা।
হিট করে ‘বিদাই’। ৩১ অক্টোবর, ১৯৭৪ সাল। জিতেন্দ্র বিয়ে করেন শোভাকে। বাড়িতে বলেন, আর তিনি দেরি করতে চান না। কোনওরকম জাঁকজমকেরও প্রয়োজন নেই। জিতেন্দ্রর বাড়ি থেকে যদিও বলা হয়েছিল, আরও কিছু দিন পর আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের।
জয়া প্রদা ও শ্রীদেবীর সঙ্গেও জিতেন্দ্রর সম্পর্ক নিয়ে জলঘোলা হয়েছিল, জিতেন্দ্র তখন দুই সন্তানের বাবা। একতা ও তুষার ছিলেন তাঁর নয়নের মণি। আবারও সব কিছুকে মিথ্যা প্রমাণ করে জিতেন্দ্র ও শোভা এক সঙ্গেই ছিলেন। কেউ কাউকে ছেড়ে চলে যাননি। এখনও বিয়ের এত বছর পরেও তাঁরা সুখে-দুঃখে পরস্পরের পাশে রয়েছেন।