বলিউডের ডিভা বলা হত তাঁকে। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন এই অভিনেত্রী।
তাঁর আমলে নায়িকাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক ছিল তাঁরই। তিনি বলিউড অভিনেত্রী রীনা রায়। ‘জখমি’, ‘কালিচরণ’, ‘নাগিন’ ছবিগুলির জন্য পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার।
বাবা-মা দু’জনেই অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিবাহ বিচ্ছেদের পর মা তাঁর নাম বদলে দিলেন। নাম হল রূপা, সেখান থেকে নাম বদলে হল রীনা। এই অভিনেত্রী ‘বোল্ড সিনে’ স্বচ্ছন্দ, বলা হত এমনটাই।
বিজয় অরোরার সঙ্গে ‘জরুরত’ ফিল্মে নজর কাড়েন তিনি। এর পর থেকে তাঁকে ‘জরুরত গার্ল’ বলে ডাকা শুরু হয়। তবে তাঁর ডেবিউ ছবি ছিল ড্যানির সঙ্গে। ছবির নাম ছিল ‘নয়ি দুনিয়া, নয়ে লোগ’।
বলিউডের বি গ্রেড ছবিতেও কাজ করেছেন তিনি। ১৯৭৩ সালে জিতেন্দ্রর সঙ্গে ‘জ্যায়সে কি ত্যায়সা’ ছবিতে কাজ করেন। সেই ছবির ‘আব কে সাওন মে ডারে’ গানের সঙ্গে তাঁর নাচ বিপুল জনপ্রিয় হয়।
সুনীল দত্তের সঙ্গেও তাঁর জুটি দর্শকের পছন্দ হয়। জিতেন্দ্রর সঙ্গে ‘বদলতে রিশ্তে’, ‘পিয়াসা শাওন’, ‘আপনাপন’-সহ ১৭টি ছবি করেন তিনি। এর মধ্যে ১২টিই সুপারহিট।
১৬টি ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন রীনা রায় ও শত্রুঘ্ন সিন্হা। এর মধ্যে ৯টি ছিল সুপারহিট। দুই অভিনেতার মধ্যে সম্পর্ক ছিল ব্যক্তিগত স্তরেও। তা নিয়ে অনেক বিতর্কও রয়েছে। শত্রুঘ্ন যদিও পুনম সিন্হাকে বিয়ে করেন।
‘আশা’ ছবিতে ‘সিসা হো ইয়া দিল কো’ গানটি তাঁকে দর্শকের মধ্যে মারাত্মক জনপ্রিয় করে তোলে।
‘আপনাপন’ ছবির জন্য ‘বেস্ট সাপোর্টিং অ্যাকট্রেস’-এর পুরস্কার পেয়েছিলেন রীনা। কিন্তু তিনি সেই ছবির নায়িকা হওয়ায় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
রাজেশ খন্না, বিনোদ খন্না, ধর্মেন্দ্র, প্রত্যেকের সঙ্গে তাঁর ছবি ছিল সুপারহিট। শাস্ত্রীয় নৃত্য থেকে ডিস্কো নাম্বার— সবেতেইে সমান সাবলীল ছিলেন রীনা।
১৯৮৩ সালে পাকিস্তানের ক্রিকেটার মহসিন খানের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। সেই সময় এই বিয়ে ছিল বহুল চর্চিত। করাচিতে বিয়ে হয় তাঁদের। বিয়ের পর ইংল্যান্ড-পাকিস্তানে যাতায়াত ছিল অভিনেত্রীর।
একটি মেয়েও হয় তাঁদের। কিন্তু বিয়ে টেকেনি বেশি দিন। বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের। কারণ হিসাবে ইংল্যান্ডে থাকতে না চাওয়া এবং কাজকে মিস করার কথা জানিয়েছিলেন রীনা। অসম্ভব বিলাসবহুল জীবনযাপনে হাঁফিয়ে ওঠার কথাও বলেছিলেন তিনি। মেয়ের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়ে আইনি লড়াইয়ের মাঝেও ছবি চালিয়ে যান তিনি।
বেশ কিছু দিন ছবি থেকে দূরে সরে ১৯৯৩ সালে ফিরে আসেন ‘আদমি খিলোনা হ্যায়’ ছবিতে।
রাজ বব্বরের সঙ্গে ‘ইন্তেহা’, এ ছাড়াও ‘মোরান ইন গুলামি’, ‘সনম তেরি কসম’ ছবিগুলি তিনি করেছেন আইনি লড়াইয়ের সময়েই। তবে দর্শক তাঁকে মনে রেখেছেন জিতেন্দ্রর জুটি হিসাবেই।
জেপি দত্তর ‘বাটওয়ারা’ ছবিতে অভিনয় করেন মহসিন খান। রিনার শেষ ছবি ছিল জেপিরই পরিচালিত ‘রিফিউজি’।
মেয়ে জন্নতকে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর নিজের কাছে ফিরে পান তিনি। বর্তমানে মেয়ের সঙ্গে মুম্বইতেই থাকেন রীনা। বোন বরখার সঙ্গে অভিনয়ের স্কুলও খুলেছেন পরবর্তীতে।