‘অশালীন আচরণ থেকে প্রতারণা’, অভিযোগের উত্তরে কী বললেন অরিন্দম?

কখনও অশালীন আচরণ, কখনও বা প্রতারণা ... একাধিক অভিযোগের তির পরিচালকের দিকে। কী বলছেন অরিন্দম শীল?টিভি সিরিজ় ‘ভূমিকন্যা’ করার সময়ে স্ক্রিপ্ট পড়ার অছিলায় অরিন্দম তাঁর গায়ে হাত দেন বলে অভিযোগ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৪৭
Share:

রূপাঞ্জনা, অরিন্দম, তনুরুচি

এক বিতর্ক মিটতে না মিটতেই, অন্যটির সূত্রপাত। পরিচালক অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে ওঠা #মিটু বিতর্কে ঘি ঢাললেন পরিচালকের প্রথম স্ত্রী তনুরুচি শীল। কিছু দিন আগে অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র পরিচালকের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণের অভিযোগ করেছিলেন।

Advertisement

টিভি সিরিজ় ‘ভূমিকন্যা’ করার সময়ে স্ক্রিপ্ট পড়ার অছিলায় অরিন্দম তাঁর গায়ে হাত দেন বলে অভিযোগ। ‘‘ফাঁকা অফিসে আমাকে ডাকেন। তার পরেই ওই অসভ্যতামি। সে সময়ে ওঁর স্ত্রী শুক্লা (শীল) এসে যায়। সঙ্গে সঙ্গে ওঁর ভোল বদলে যায়,’’ বক্তব্য রূপাঞ্জনার। কিন্তু তিনি এত দিন অভিযোগ করেননি কেন? ‘‘আমি চ্যানেলের সঙ্গে চুক্তিতে ছিলাম। ওই সময়ে অভিযোগ করলে ‘ভূমিকন্যা’ বন্ধ হয়ে যেতে পারত। তাতে অনেকের রুজি-রোজগার আটকে যেত। তা ছাড়া এত বড় একটা স্টেপ নেওয়ার আগে আমাদের সমাজে একজন মেয়েকে অনেক ভাবতে হয়,’’ মত অভিনেত্রীর। আইনি পদক্ষেপের কথাও তাঁর ভাবনায় রয়েছে বলে জানালেন রূপাঞ্জনা।

অরিন্দম এই অভিযোগ অস্বীকার করেন, ‘‘ওই দিন অফিসে অন্যান্য স্টাফও ছিল। শুক্লা আসার পরে রূপাঞ্জনা অনেকক্ষণ ওর সঙ্গে গল্প করে। অস্বস্তি থাকলে কি সেটা পারত? আমি যদি এতই খারাপ হই, তা হলে আমার সঙ্গে কাজ করতে চেয়ে মেসেজ করত না নিশ্চয়ই। মিথ্যে বলার একটা মাত্রা রয়েছে।’’

Advertisement

এই #মিটু বিতর্কে রূপাঞ্জনার পাশে দাঁড়িয়েছেন তনুরুচি শীল, যিনি অরিন্দমের প্রথম স্ত্রী। যদিও তনুরুচির বক্তব্য, তাঁর সঙ্গে পরিচালকের আইনি বিচ্ছেদ হয়নি। একসঙ্গে অভিনয়ের সূত্রে তনুরুচি আর অরিন্দমের আলাপ এবং প্রেম। ১৯৯২ সালে তাঁদের সামাজিক বিয়ে হয়, ’৯৩ সালে রেজিস্ট্রি। কিন্তু ২০০৩ সালে অরিন্দম ডিভোর্সের মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা গত বছর খারিজ হয়ে গিয়েছে বলে জানালেন তনুরুচি। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় রূপাঞ্জনার সমর্থনে পোস্ট করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি অরিন্দম শীলের স্ত্রী। কিন্তু উনি আমার সঙ্গে তঞ্চকতা করেছেন। উনি থাকেন শুক্লা দাসের সঙ্গে।’’

কিন্তু নিজেদের ব্যক্তিগত চাপানউতোর তিনি সকলের সামনে তুলে আনছেন কেন? ‘‘সকলে যাতে অরিন্দমের আসল ছবিটা দেখতে পায়, সেই কারণেই রূপাঞ্জনার পাশে দাঁড়িয়েছি,’’ মত তনুরুচির। একটি বেসরকারি সংস্থায় তনুরুচি এবং শুক্লা একই সময়ে চাকরি করতেন। সেই সূত্রেই অরিন্দম-শুক্লার ঘনিষ্ঠতা হয় বলে দাবি তাঁর।

সম্পত্তি নিয়েও তনুরুচির অভিযোগ রয়েছে, ‘‘অরিন্দম আমাকে সম্পত্তি থেকেও বঞ্চিত করেছে। বেলেঘাটায় আমাদের যৌথ ভাবে কেনা ফ্ল্যাট ছিল। সেটা দখল করে রেখেছে। ও তখন বাম সরকারের ঘনিষ্ঠ ছিল। সেই জোরে আমাকে তাড়ায়। এখন তৃণমূল কংগ্রেসে গিয়েছে সুবিধে পাবে বলে।’’ সম্পত্তি থেকে বেদখল প্রসঙ্গে অরিন্দমের বক্তব্য, ‘‘কোর্টের বয়ান অনুযায়ী ওই ফ্ল্যাটে আমাদের দু’জনেরই মালিকানা রয়েছে। আমি কিনে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ও কোর্টের দিন ফেল করে। চাইলে আমি কোর্টের সেই কাগজও দেখাতে পারি।’’

অরিন্দম তার সঙ্গে এ-ও বলেন যে, ‘‘আমার ব্যক্তিগত জীবন এই প্রসঙ্গে কেন উঠে আসছে জানি না। শুক্লা, মেয়ে সোনিকা আমার সব কিছু, এটুকু বলতে পারি।’’ আরও জানালেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি তুলে ধরার জন্য তনুরুচির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার কথাও ভাবছেন।

বাদ-বিবাদ চলতেই থাকবে। কিন্তু বলিউড #মিটু বিতর্ক নিয়ে যতটা সরব হয়েছিল, টলিউডের ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে, তার তদন্ত হয়েছে বলিউডে। টলিউড কি আদৌ সে রকম কিছু ভাবছে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন