Antar Chowdhury On Puja Song

এখন কেউ গান শোনেন না, দেখেন! ইদানীং সবাই গায়ক, গানের ভিড়ে ভাল কাজ হারিয়ে যায়: অন্তরা

“এখনকার শিল্পীদের উচ্চারণেও পাশ্চাত্যের প্রভাব। তাঁরা আর সঠিক ভাবে বাংলা শব্দ উচ্চারণও করেন না”! আফসোস শিল্পীর।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৩২
Share:

গানের একাল-সেকাল বর্ণনায় অন্তরা চৌধুরী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

অন্তরা চৌধুরীর বয়স তখন মাত্র সাত। সেই সময়ে তাঁর প্রথম পুজোর গানের রেকর্ড বেরিয়েছিল। সলিল চৌধুরীর কথা ও সুরে ‘বুলবুল পাখি ময়না, টিয়ে’। তিনি বড় হয়েছেন। শারদীয়া গানের সংখ্যাও বেড়েছে। সম্প্রতি সুদীপ্ত চন্দের কথায় ও সুরে তিনি পুজোর গান গাইলেন। যদিও উপলক্ষ ‘আন্তর্জাতিক ভ্রমণ দিবস’।

Advertisement

করোনাকালে গৃহবন্দি মানুষের মনে বেড়ানোর অনুভূতি জাগানোর ভাবনা থেকেই সুদীপ্তের এই প্রয়াস। অন্তরার গাওয়া ‘দূর অজানায়’ তৈরি করতে গিয়ে আরও একটি বিপ্লব ঘটেছে। প্রয়াত সুধীন দাশগুপ্তের ছেলে সৌম্য দাশগুপ্ত এবং সলিল চৌধুরীর মেয়ে অন্তরা চৌধুরী এই প্রথম একসঙ্গে কাজ করলেন। অন্তরার গানের সঙ্গীতায়োজনের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ভিন্ন পেশা ছেড়ে এই গান দিয়েই গানের দুনিয়ায় পা রেখেছেন তিনি।

দুই প্রজন্মের মধ্যে সেতু অন্তরা। বেশ কয়েক বছর পরে আবার পুজোর গান গাইতে গিয়ে দুই সময়কে মেলাতে পারছেন? প্রশ্ন করেছিল আনন্দবাজার ডট কম। অন্তরার কথায়, “বড় হওয়ার পর বাবা আমায় দিয়ে ‘এমন সঘন গহন বর্ষায় তুমি’, ‘ও ভোলা মন’ গাওয়ালেন। তখন আমি কুড়ি। ১৯৯৫-তে বাবা চলে যাওয়ার পর থেকেই পুজোর গান সে ভাবে আর গাওয়া হয়নি। তবে ‘রিমেক’ করেছি। মা সবিতা চৌধুরী কিংবা লতা মঙ্গেশকরের গান গেয়েছি। এখন আর পুজোর গানই হয় না!” অন্তরা তাই আগের সময়কে খুবই ‘মিস্’ করেন। তাঁর আক্ষেপ, আগে শ্রোতারা গান শুনতেন। এখন সকলে গান দেখেন। আগে গানের রেকর্ড বার হত, এখন মিউজ়িক ভিডিয়োর রমরমা।

Advertisement

গায়িকা তাই শিল্পীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবিত। তাঁর মতে, “বাবাদের আমলে রেকর্ড সংস্থার তরফ থেকে গানের ডাক আসত। গান রেকর্ডের পর সংস্থাই গানের প্রচার করতেন। এখন শিল্পী নিজেরাই গান রেকর্ড করে ইউটিউবে ছেড়ে দিচ্ছেন। প্রায় সকলেই গাইতে পারেন। ফলে, গানের ভিড়ে ভাল কাজ হারিয়ে যাচ্ছে।” যার জেরে একটি গান গেয়েই খ্যাতনামী হওয়ার সুযোগও আর নেই, যা অতীতে ঘটত। যেমন, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় মানেই ‘রানার’ বা ‘গাঁয়ের বধূ’। অন্তরার দাবি, “এখন শিল্পীদের ঘোর দুর্দিন। এই প্রজন্মের শিল্পীদের প্রচুর লড়তে হচ্ছে।”

অন্তরার আরও উপলব্ধি, অর্থনৈতিক দিক থেকেও পরিবর্তন এসেছে। আগে রেকর্ড বা ক্যাসেট বিক্রির পরিমাণ দিয়ে শিল্পীকে বিচার করা হত। এখন শিল্পীকে কত লক্ষ দর্শক-শ্রোতা অনুসরণ করছেন, তার উপরে সব নির্ভর করে। আগে রেকর্ড বা ক্যাসেট বিক্রির অর্থ শিল্পী পেতেন। এখন সবটাই বিনামূল্য। উপার্জনের জন্য শিল্পীদের প্রচুর মঞ্চানুষ্ঠান করতে হয়। রইল বাকি গায়কির বদল। অন্তরার আফসোস, “এই প্রজন্ম পাশ্চাত্যমুখী। পশ্চিমকে অনুসরণ করতেই ব্যস্ত। সারা ক্ষণ রক গানে ডুবে আছেন। বাংলা গানেও সেই ছায়া খোঁজেন তাঁরা।” এখনকার শিল্পীদের উচ্চারণেও বুঝি সেই প্রভাব। তাঁরা আর সঠিক ভাবে বাংলা শব্দ উচ্চারণও করেন না!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement