সোলাঙ্কি এবং রজতাভ।
তাঁর প্রথম ছবির ৩৫ শতাংশ শুটিং হয়ে আটকে গিয়েছে। পরের ছবির অভিনেত্রী পালিয়ে গিয়েছেন। বউ ডিভোর্স দিয়েছেন। মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দেন না। আদ্যোপান্ত পাগল, মাতাল লোকটা অবচেতনে দু’জন মানুষের সঙ্গে ঝগড়া করেন। তাতে আরও কনফিউসড হয়ে থাকেন। তিনি বিশ্বাস করেন ভাল ছবি বলে কিছু হয় না। ছবিটা ভাল করে বানাতে হয়।
চেনেন লোকটিকে? ওঁর নাম মৃণাল সেন। উনি এক ব্যর্থ পরিচালক।
মৃণালকে আপনি দেখতে পাবেন ‘ধানবাদ ব্লুজ’-এ। সৌরভ চক্রবর্তীর পরবর্তী ওয়েব সিরিজ। ভাবনা, চিত্রনাট্য, পরিচালনা সবই সৌরভের। তাঁর কথায়, ‘‘ধানবাদ ব্লুজ সব থেকে কঠিন প্রজেক্টগুলোর মধ্যে একটা। ডার্ক থ্রিলার। স্যাটায়ারও রয়েছে। এই মৃণালের কথায় কেউ পাত্তা দেয় না। কিন্ত ওঁর অ্যাসিস্ট্যান্ট মনে করেন, স্যর এক দিন ঠিক ভাল ছবি বানাতে পারবেন। জীবনে কোণঠাসা মুহূর্তে একটা অফার পান। ঝরিয়াতে একটা ছবি বানাতে হবে। মোটা টাকা দেবে। ঝরিয়া ধানবাদের খাদান এলাকা। মাফিয়া রাজ চলে। ওখানে পৌঁছে মৃণাল বুঝতে পারেন তাঁকে যে ছবিটা করতে ডাকা হয়েছে তার সঙ্গে তাঁর মূল্যবোধ, নীতি, আদর্শ মেলে না। কিন্তু বুঝতে পারেন, ছবিটা না বানালে প্রাণে বেঁচে ফিরতে পারবেন না। সেখান থেকে বেঁচে ফেরার গল্প। একটা ছবি বানাতে গিয়ে আর একটা ছবি বানানোর গল্প।’’
আরও পড়ুন, বিয়ে কবে? রাইমা বললেন…
মৃণালের চরিত্রে অভিনয় করছেন রজতাভ দত্ত। এটাই তাঁর প্রথম ওয়েব সিরিজ। রজতাভ শেয়ার করলেন, ‘‘এর আগে ওয়েবের অফার এসছিল। কিন্তু চরিত্রগুলো ততটা পছন্দ হয়নি। বা মনে হয়েছিল কোনও রকম ভাবে দ্রুত ফুটেজ ভরাতে পারার চেষ্টার জন্য কাজটা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে স্ক্রিপ্টটা খুব ইন্সপায়ারিং লেগেছিল। শুধু আমার চরিত্র নয়। পুরোটাতেই যত্ন রয়েছে। আমার মনে হয়েছিল, এতটা বুদ্ধিদীপ্ত স্ক্রিপ্ট যিনি লিখছেন ছবিটাও তাঁর মাথায় আঁকা রয়েছে। সৌরভের সঙ্গে এটা প্রথম কাজ। ওর কাজের সঙ্গে পরিচিতও ছিলাম না। যা প্রত্যাশা করেছিলাম তার থেকে অনেকটাই বেশি পাচ্ছি।’’
শুটিংয়ে রজতাভ এবং পরিচালক সৌরভ।
কিন্তু মৃণাল ঠিক কেমন? রজতাভ বললেন, ‘‘এই চরিত্রে এমন কিছু মেটিরিয়াল পেয়েছি যে কোনও অভিনেতার ক্ষেত্রে তা খুব লোভনীয় জায়গা। এক, অ্যালকোহলিক। দুই, ডিভোর্সী। যাদের সঙ্গে ঝগড়া করে তাদের নামের মধ্যে একটা দুষ্টুমি রয়েছে। লোকটা ছবি করতে চায়, কিন্তু যে কোনও কারণেই হোক সাকসেসফুল নয়। আমার গড়পরতা অন্য কাজের থেকে এখানে নিজেকে নতুন করে ভাঙচুর করতে পারব। ওরা প্রায় অরিজিনাল লোকেশনে গিয়ে ছবি করার চেষ্টা করছে। ওদের সঙ্গে কাজ করে সত্যিই খুব ভাল লেগেছে।’’
কিন্তু কাদের সঙ্গে অবচেতনে ঝগড়া হয় মৃণালের? সৌরভ হেসে বললেন, ‘‘বাঙালির খুব কাছের দু’জন পরিচালক। এখন এটুকুই বলব।’’
আরও পড়ুন, দিতিপ্রিয়াই কি এ বার দুর্গা? অভিনেত্রী বললেন…
রজতাভর সহকারীর চরিত্রে অভিনয় করছেন শোলাঙ্কি রায়। তাঁরও ওয়েবে এটাই প্রথম কাজ। অভিনেত্রী বললেন, ‘‘প্রথম ওয়েব করছি। এখানে রনিদার অ্যাসিস্টান্ট। স্যরের প্রতি একটা প্রেমও আছে। কিন্তু রনিদার তরফ থেকে কী, সেটা রিভিল হয় না। প্রচন্ড অ্যাডমায়ার করি যাঁকে তাঁর প্রতি তো একটা অব্যক্ত প্রেম থাকে…। মেয়েটির সিনেমা বানানোর স্বপ্ন। রনিদা সেটার রূপকার।’’
এ ছাড়াও বিভিন্ন চরিত্রে অপরাজিতা আঢ্য, দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য, ইমরান হাসনি, রূপাঞ্জনা মৈত্রর চরিত্রে সমৃদ্ধ এই ওয়েব সিরিজ। সৌরভ জানালেন, ট্রিকস্টারের প্রযোজনায় পুজোর পরে হইচই প্ল্যাটফর্মে দেখা যাবে ‘ধানবাদ ব্লুজ’।
(সিনেমার প্রথম ঝলক থেকে টাটকা ফিল্ম সমালোচনা - রুপোলি পর্দার বাছাই করা বাংলা খবর জানতে পড়ুন আমাদের বিনোদনের সব খবর বিভাগ।)