সৌরভ দাস আবারও খলনায়ক! ছবি: ফেসবুক।
১৯৫৪ সালেও কলকাতা অপরাধমুক্ত ছিল না! তখনও ‘সিরিয়াল কিলার’ দাপিয়ে বেড়াত শহরে। তার নজর নারীশরীরের প্রতি। এ রকমই এক নৃশংস খুন হয়েছিল কালীঘাটে। যার জেরে তোলপাড় শহর। ‘বেলারানি’র শরীর টুকরো টুকরো করে শহরের নানা জায়গায় ছড়িয়ে দিয়েছিল ‘বীরেন দত্ত’ নামের এক মঞ্চাভিনেতা! কেন?
এই প্রশ্ন নিয়ে তদন্তে নেমেছিল সে সময়ের গোয়েন্দা। তখনই কেঁচো খুঁড়তে কেউটে। প্রশাসন জানতে পারে, খুনি এর আগে একই ভাবে খুন করেছে একাধিক নারীকে! তার পর?
সেই ঘটনার পর্দা উঠতে চলেছে ২০২৫-এ। রুদ্রনীল ঘোষের নেতৃত্বে নতুন করে তদন্ত শুরু আবার। পরিচালনায় সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়। পুরো ঘটনা দেখা যাচ্ছে ‘ফ্রাইডে’ ওয়েব প্ল্যাটফর্মে। পরিচালক আনন্দবাজার ডট কম-কে জানিয়েছেন, ‘১৯৫৪’ নামে তিনি একটি সিরিজ় বানিয়েছেন। সেখানেই নতুন করে চিরুনি তল্লাশি করা হবে বিষয়টি নিয়ে। সিরিজ়ের প্রথম ঝলক সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। আবার ‘সাইকো সিরিয়াল কিলার’-এর ভূমিকায় সৌরভ দাস।
‘১৯৫৪’ সিরিজ়ে সৌরভ দাস এবং পূজারিণী ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত।
বারবার তিনি এই ধারার চরিত্রে। কেন? একঘেয়েমিতে ভোগেন না! নায়ক হওয়ার সব গুণ যখন তাঁর মধ্যে রয়েছে। প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। সৌরভের কথায়, “একেবারেই একঘেয়েমিতে ভুগি না। কারণ, প্রত্যেকটি চরিত্র প্রত্যেকের থেকে আলাদা। প্রত্যেক বার তাই নতুন করে ফুটিয়ে তোলার সুযোগ পাই।” তাই নায়ক না হতে পারলেও দুঃখ পান না। আফসোসও হয় না তাঁর। তার পরেই রসিকতা করেছেন, “আমার পরিচালকও কাজপাগল। চরিত্র নিখুঁত না হওয়া পর্যন্ত অদ্ভুত পাগলামি করতে থাকেন। দুই পাগলে মিলে চুটিয়ে কাজ করেছি।”
২০২৫-এ বসে ১৯৫৪ সাল, সেই সময়ের মানুষের ভাবনা, এক অভিনেতা-খুনিকে অনুভব করা তো যথেষ্ট কষ্টের! এ ব্যাপারে সহমত সৌরভ। বললেন, “আমার হাতে একটাই অস্ত্র, আমার ঠাকুর্দা। তিনি সেই আমলে দাপুটে মঞ্চাভিনেতা ছিলেন। নারীচরিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি পেয়েছিলেন। আমি যখন মঞ্চাভিনেতা হিসাবে অভিনয় করেছি তখন ওঁকে এই চরিত্রে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আর বার বার চিত্রনাট্য পড়েছি। পরিচালকের থেকে জানতে চেয়েছি, তিনি কী চান।”
সৌরভ না হয় খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে তৃপ্ত। দর্শকের মনে যে প্রশ্ন, কেন বার বার পর্দায় ‘সাইকো কিলার’ তিনি? বাস্তবেও তিনি কি এরকমই?
প্রশ্ন শুনে হেসে ফেলেছেন অভিনেতা। “আমায় নিয়ে কে কী বলল, কী ভাবল— কিচ্ছু যায়-আসে না। যে চরিত্রে অভিনয় করে তৃপ্ত হব, সেটাই করব।” একটু থামলেন। ফের বললেন, “বাস্তবে আমার কোনও মানসিক সমস্যা নেই। খুবই সাদামাঠা, সাধারণ ছেলে আমি। বলতে পারেন, বিয়ের পরে নিজেকে সামলে চলতে শিখেছি। কিন্তু ওই পর্যন্তই!” ‘মন্টু পাইলট’, ‘গোপাল পাঁঠা’ আর ‘বীরেন দত্ত’— কোন চরিত্র তা হলে বেশি কাছের? এ বার তিনি একটু উদাস। সৌরভের কথায়, “এই একটা জায়গায় আমি অতৃপ্ত। এখনও মনের মতো ‘ভিলেনি’ করার সুযোগ পাইনি। ফলে, প্রথম-দ্বিতীয় বাছতে পারছি না।”
স্মৃতি হাতড়াতে হাতড়াতে জানালেন, দর্শকের কাছে ‘মন্টু পাইলট’ বেশি জনপ্রিয়। অভিনেতা কিছুতেই ভুলতে পারেন না ‘বয়েই গেছে’ ধারাবাহিকের কৌতুক চরিত্র ‘বিরসা’কে। “আমায় অভিনেতা হিসাবে পরিচিতি দিয়েছে ওই চরিত্র। ওকে ভুলি কী করে?”