হাঁটবেন না ধীরে জগিং করবেন? কোনটিতে ওজন দ্রুত কমবে? ছবি: ফ্রিপিক।
প্রতি দিন ১০ হাজার পা হাঁটার উপকারিতা নিয়ে এত আলোচনা হচ্ছে যে, হাঁটা ভাল না কি জগিং— তা নিয়ে আন্তর্জালে বিস্তর খোঁজাখুঁজি চলছে। হাঁটলে ওজন কমবে, না কি ধীরেসুস্থে জগিং করলে মেদ ঝরবে, এই প্রশ্নই বেশি। আবার হাঁটলেই তো হল না, কী ভাবে হাঁটছেন, কেমন গতিতে তা-ও গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই হাঁটা ভাল না জগিং, সে নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র একটি গাইডলাইন রয়েছে। কাদের জন্য কোনটি ভাল বা কারা কোনটি করলে বেশি উপকার পাবেন, তা জেনে নেওয়া যাক।
শরীর সুস্থ রাখতে হাঁটাহাঁটি, দৌড়নো বা জগিং-এর কোনও বিকল্প নেই। দিনে ২০ মিনিট সময়ও যদি এই ধরনের শরীরচর্চা করা যায়, তা হলে আর জিমে গিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি তুলে ঘাম ঝরানোর প্রয়োজন পড়ে না। হু-র গবেষকেরা জানাচ্ছেন, দিনে ৪৫ মিনিট মাঝারি গতিতে হাঁটা আর ১৫ মিনিট ধীরে জগিং করার উপকারিতা অনেক।
হাঁটলে কী লাভ?
হাঁটার গতি ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটার হলে তাকে ‘পাওয়ার ওয়াকিং’ বলা হয়। এই ধরনের হাঁটায় হৃদ্যন্ত্রের গতি বেড়ে যায়, ক্যালোরিও দ্রুত ক্ষয় হয়। হাঁটার গতি প্রতি ঘণ্টায় ৩-৫ মাইল রেখে যদি ৪৫ মিনিট হাঁটা যায়, তা হলে ১৫-২০০ ক্যালোরি ঝরবে। হাঁটলে ‘হ্যাপি’ হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে, যা শরীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও ভাল রাখে। হাঁটার সময়ে নিয়মও মানতে হয়। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে মিলিয়ে পা ফেলতে হবে। শ্বাস নেওয়ার সময় ৪ পা ফেলুন, শ্বাস ছাড়ার সময় আরও ৪ পা। ধীরে ধীরে শ্বাস- প্রশ্বাসের লয় কমলে প্রতি শ্বাসে পদক্ষেপের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় শারীরিক কসরতও হবে, মনঃসংযোগও বাড়বে।
জগিং করলে কী উপকার হবে?
ধীর গতিতে মিনিট ১৫ যদি জগিং করা যায়, তা হলে পায়ের পেশি মজবুত হবে। ওজন তো কমবেই, হার্টও ভাল থাকবে। জগিংয়ে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। ৪-৫ মাইল প্রতি ঘণ্টা হিসেবে যদি প্রতি দিন ১৫ মিনিট কেউ জগিং করেন, তা হলে ১০০-১৫০ ক্যালোরি ঝরতে পারে। তবে বাইরে প্রকৃতির মাঝে জগিং করা ভাল।
কারা কোনটি করবেন?
দ্রুত ওজন কমাতে হলে ধীরে জগিংই ভাল। এতে ক্যালোরি ক্ষয় তাড়াতাড়ি হবে।
পায়ের পেশির জোর বাড়াতে জগিং করতে পারেন। যাঁরা সময়ের অভাবে জিমে যেতে পারছেন না, তাঁরা জগিং করলে উপকার পাবেন।
হাঁটুতে ব্যথা থাকলে হাঁটাই ভাল। তখন জগিং করতে গেলে মুশকিল হবে।
হার্টের রোগ থাকলে অথবা হাঁপানির সমস্যা থাকলে জগিং নয়, বরং মাঝারি গতিতে হাঁটুন, এতে উপকার হবে বেশি।
ডায়াবিটিসে যদি মেদ অনেক বেড়ে যায়, তা হলে জগিং করা যেতে পারে।
ষাটোর্ধ্ব প্রবীণেরা হাঁটাহাঁটিতেই বেশি ভরসা রাখতে পারেন।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। অনেকের নানা রকম শারীরিক সমস্যা থাকে। কাজেই হাঁটবেন না জগিং করবেন, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।