ডিমের পোচের উপর দিয়ে একটু গোলমরিচ ছড়িয়ে দিলে হালকা ঝাল ভাব, সুগন্ধ— স্বাদটাই পাল্টে দেয়। মাংস হোক বা হালকা নাড়াচাড়া করা সব্জি— গোলমরিচের ঝাঁজেই হয়ে ওঠে স্বাদু।
তবে মশলার বাজারে ভেজালও হয়। কখনও গোলমরিচের মতো দেখতে বীজ মিশিয়ে তেলের প্রলেপ দিয়ে ঝকঝকে করার চেষ্টা হয়। কখনও মেশানো হয় কাঠের গুঁড়ো। তার কারণ হল, মশলা হিসাবে গোলমরিচ খুব সস্তা নয়। তাই কায়দা করে জিনিসটির ওজন বাড়িয়ে লাভের অঙ্ক ঘরে তোলার সুযোগ ছাড়েন না অসাধু ব্যবসায়ীরা।
গোলমরিচে সবচেয়ে বেশি ভেজাল করা হয় পেঁপের দানা মিশিয়ে। পেঁপের দানা কিছুটা গোলমরিচের মতো দেখতে। পেঁপে খেলেও, তার দানাটি সে ভাবে খাওয়ার চল নেই। ফলে অনেকটা পরিমাণ গোলমরিচে বেশ কিছুটা পেঁপের বীজ মিশিয়ে দিলে চট করা ধরা যায় না। তাজা দেখাতে, চকচকে করতে বীজে নিম্নমানের তেলের প্রলেপ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। গোলমরিচের গুঁড়োও বিক্রি হয়। আর তাতে কাঠের গুঁড়ো মিশিয়ে দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা গিয়েছে। ভেজাল মানেই তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। তা থেকে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যেতে পারে। পেটের সমস্যাও হতে পারে।
বাড়িতে আনা গোলমরিচটি খাঁটি কি না বোঝার কয়েকটি উপায় আছে।
১। দুই-চারটে গোলমরিচ ভেঙে মুখে দিন এবং শুঁকে দেখুন। গোলমরিচের নিজস্ব এবং ঝাঁঝালো গন্ধ আছে। নাকের কাছে আনলে তা টের পাওয়া যায়। জিনিসটি ভেজাল হলে সেই ঝাঁজ, গন্ধ কোনওমতেই থাকবে না। জিভে দিয়েও তা দেখতে পারেন।
২। আঙুলে নিয়ে গোলমরিচ ভাঙার চেষ্টা করুন। চাপ দিলে আসল মরিচ মোটেই ভাঙবে না। কারণ, এটি বেশি শক্ত। তবে সহজে ভেঙে গেলে বুঝতে হবে পেঁপে বা অন্য কোনও ফলের বীজ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।
৩। এক গ্লাস জলে এক টেবিল চামচ গোলমরিচ ফেলে দিন। আসল গোলমরিচ সবসময় ডুবে যাবে। নকল হলে সেটি হালকা হবে এবং ভেসে উঠবে। এটিও মশলা খাঁটি কি না, বোঝার সহজ উপায়।
৪। একটি চামচে কয়েকটি গোলমরিচ নিয়ে আগুনের সামনে ধরুন। তেতে গিয়ে যদি সুগন্ধ ছড়ায় বুঝতে হবে মশলা খাঁটি। পেঁপের বীজ হলে সেই গন্ধ মোটেই আসবে না।
৫। গোলমরিচ জলে ফেলে দেখুন রং উঠছে কি না। হাতে ঘষলেও যদি দেখা যায় রং উঠছে, তা হলে বুঝতে হবে জিনিসটি নকল।