বিরাট কোহলি। — ফাইল চিত্র।
এক সময়ে হোটেলের ঘরে বসে এক সপ্তাহে ৪০টি টফি খেয়ে নিতেন। নিয়মিত খেতেন মিষ্টি। তার পরেও বিরাট কোহলির ফিটনেস জার্নি অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে পারে। একটি সাক্ষাৎকারে বিরাট বলেছিলেন, ‘‘২০১২ পর্যন্ত আমি খুবই আনফিট ছিলাম। আমি ভাবতাম নিয়মিত প্র্যাকটিস করা মানেই ফিটনেস। কিন্তু ম্যাচে একের পর এক ব্যর্থতার পর ভুল ভাঙে।’’
ফিরে তাকাতে হয়নি বিরাটকে। সোমবার টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন তিনি। বয়স ৩৭ বছর হলেও এখনও বিরাটের ফিটনেস নিয়ে চর্চা হয়। উইকেটে রান নেওয়া থেকে শুরু করে ফিল্ডিংয়ের ক্ষিপ্রতার নিরিখে বিশ্বের ফিট ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনি অন্যতম। অনুরাগীদের মধ্যে অনেকেই সমাজমাধ্যমে দাবি করেছেন, ফিটনেসের নিরিখে আরও হয়তো কয়েক বছর টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারতেন বিরাট। কী ভাবে এতটা ফিট থাকেন তিনি? তারকা ক্রিকেটারের এই ফিটনেসের নেপথ্যে রয়েছে পরিশ্রম এবং নিষ্ঠা।
১) নিয়মানুবর্তিতা: যে কোনও ফিটনেস রুটিনে নিয়মানুবর্তিতার প্রয়োজন। বিরাট দৈনন্দিন জীবনে নিয়ম মেনে চলতে পছন্দ করেন। নিয়মে বাঁধা জীবন তাঁর ফিটনেসের অন্যতম কারণ।
২) নিয়মিত শরীরচর্চা: প্রতি দিন সকালে নিয়ম করে শরীরচর্চা করেন বিরাট। তালিকায় থাকে কার্ডিয়ো এবং ‘হাই ইন্টেনসিটি ট্রেনিং’ (এইচআইটি)। এর ফলে তাঁর স্ট্যামিনা বজায় থাকে। এ ছাড়াও শারীরিক নমনীয়তা বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন ফাংশনাল ট্রেনিংও করে থাকেন। সপ্তাহে ৬ দিন জিমে শরীরচর্চা করেন বিরাট।
৩) কঠোর ডায়েট: ফিটনেসের নেপথ্যে ডায়েটের বড় অবদান থাকে। একটি সাক্ষাৎকারে বিরাট বলেছিলেন, ‘‘আমি একই খাবার দিনে তিন বার করে ছ’মাস খেতে পারি। কোনও সমস্যা হয় না।’’ এর থেকেই বোঝা যায়, ডায়েটকে তিনি বিপুল গুরুত্ব দেন। বিরাটের প্রতি দিনের খাবারের ৯০ শতাংশই সেদ্ধ এবং তার মধ্যে নামমাত্র তেল-মশলা থাকে। ডাল এবং বিভিন্ন ঝোলের পদ তাঁর পছন্দ। এ ছাড়াও উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উপরেও তাঁর ডায়েটে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিরাট কোনও দুগ্ধজাত খাবার খান না। সারা দিনের খাবারে চিনি থাকে না।
জিমে শরীরচর্চা করছেন বিরাট কোহলি। ছবি: সংগৃহীত।
৪) পানীয়: ফিট থাকতে হলে দেহে জলের মাত্রা বজায় রাখা উচিত। আর সারা দিনের পানীয়ের ক্ষেত্রেও বিরাট নিয়ম মেনে চলেন। মূলত তিনি বেশি ক্ষার যুক্ত জল (অ্যালকালাইন ওয়াটার) পান করেন। সূত্রের দাবি, বিরাটের জন্য সেই বিশেষ জল ফ্রান্স থেকে আনানো হয়। ভারতীয় মুদ্রায় সেই এক লিটার জলের দাম প্রায় ৪০০০ টাকা। এই ধরনের জল পান করলে দেহে প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদানের অভাব ঘটে না। এ ছাড়াও সারা দিনে সতেজ থাকতে বিরাট ডাবের জল এবং বিভিন্ন ফলের রস পান করেন।
৫) পর্যাপ্ত ঘুম: স্ত্রী অনুষ্কা শর্মা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ঘুমের সঙ্গে কোনও রকম আপস করতে রাজি নন বিরাট। ঘুম শরীরকে তার প্রয়োজনীয় শক্তি জোগায়। তাই দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমোনোর চেষ্টা করেন বিরাট।