AI system to treat Infertility

১৮ বছর ধরে সন্তানধারণের চেষ্টা বিফল, বন্ধ্যত্ব ঘুচিয়ে দম্পতিকে সন্তান এনে দিল এআই! কী ভাবে সম্ভব?

১৮ বছর ধরে নিঃসন্তান। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, আইভিএফেও মা, বাবা হতে পারবেন না দম্পতি। কিন্তু শেষে অসম্ভবকে সম্ভব করল এআই।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৫ ১৮:২৩
Share:

দম্পতিকে সন্তান এনে দিল এআই, কী ভাবে? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

সন্তানধারণের জন্য সব রকম চেষ্টা করেছিলেন দম্পতি। কিন্তু সফল হননি। চেষ্টা চলছিল গত ১৮ বছর ধরে। শেষে আইভিএফ (ইনভিট্রো ফাইর্টিলাইজেশন) পদ্ধতিরও শরণাপন্ন হন। কিন্তু তা-ও ব্যর্থ হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনও দিনই মা, বাবা হতে পারবেন না তাঁরা। কারণ বন্ধ্যত্ব রয়েছে দু’জনেরই। পুরুষ সঙ্গীর শুক্রাণুর সংখ্যা এত কম যে আইভিএফও ঠিকমতো কার্যকরী হবে না। এত রকম বাধা সত্ত্বেও অসাধ্য সাধন হল। সন্তান এল দম্পতির কোলে। আর সেই অসম্ভবকে সম্ভব করল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)।

Advertisement

চিকিৎসা বিজ্ঞানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। রোগের কারণ নির্ণয় থেকে ওষুধ তৈরি— যে কোনও জটিল থেকে জটিলতর কাজই করে ফেলছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। হালফিলের রোবটিক সার্জারিতেও ভরসা এআই। আর এখন দেখা যাচ্ছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি প্রযুক্তি, আইভিএফেও বড় ভূমিকা নিতে পারে। কী ভাবে?

প্রাকৃতিক বা জৈবিক উপায়ে যাঁরা সন্তান লাভ করতে পারছেন না, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান তাঁদের জন্য বিকল্প বন্দোবস্ত করেছে। পদ্ধতিটাই শুধু আলাদা। আইভিএফ বা নলজাত সন্তান আর পাঁচটা স্বাভাবিক শিশুর মতোই হবে। ভিট্রো কথাটির অর্থ শরীরের বাইরে। এই পদ্ধতিতে শরীরের বাইরে জীবন সৃষ্টি করা হয় বলে পদ্ধতিটিকে ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজ়েশন বলে। চলতি কথায়, 'টেস্ট টিউব বেবি'। মায়ের শরীর থেকে ডিম্বাণু ও বাবার শুক্রাণুর নিষেক ঘটানো হয় শরীরের বাইরে। ভ্রূণ তৈরি করে তা প্রতিস্থাপন করা হয় মায়ের গর্ভে। ওভারিতে সিস্ট, ফ্যালোপিয়ান টিউবে ব্লক, এন্ডোমেট্রিয়োসিস বা পলিসিস্টিক ওভারি থাকলে এবং স্বাভাবিক ভাবে মা হতে না পারলে তখন আইভিএফ করা হয়। এই পদ্ধতিতে সাফল্যের হার যেমন বেশি, তেমনই ব্যর্থও হন অনেকে। ওই দম্পতির ক্ষেত্রেও তা-ই হয়। কারণ চিকিৎসকেরা জানান, পুরুষ সঙ্গীর অ্যাজ়োস্পার্মিয়া আছে।

Advertisement

অ্যাজ়োস্পার্মিয়া এমন এক সমস্যা যাতে শুক্রাণু উৎপাদনের হার কমে যায়। সাধারণত শুক্রাশয়ে প্রতি দিনই প্রায় ১২ কোটির বেশি শুক্রাণু তৈরি হয়। কিন্তু অ্যাজ়োস্পার্মিয়া হলে সেই হার কমে যায়। শুক্রাণুর সংখ্যা যেমন কমে, তেমনই তার গুণগত মানও কমে যায়। ফলে সেই শুক্রাণু আর নিষেক ঘটানোর জন্য ব্যবহার করা যায় না। আইভিএফও কাজ করে না। এখানেই নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করে এআই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা এক বিশেষ প্রযুক্তি তৈরি করেছেন যার নাম ‘স্টার’। এই পদ্ধতিতে জানা যায়, শুক্রাশয়ের কোটি কোটি শুক্রাণুর মধ্যে ঠিক কোন কোনটির গুণগত মান ভাল। সেই নির্দিষ্ট শুক্রাণুটিকে চিহ্নিত করাও সম্ভব। এই দম্পতির ক্ষেত্রেও পুরুষ সঙ্গীর শুক্রাণুর নমুনা নিয়ে, তার মধ্যে থেকে তিনটিকে আলাদা করে এআই। ওই তিনটি শুক্রাণুই ছিল শেষ সম্বল, যা ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করতে পারত। স্বাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ওই বিশেষ তিনটি শুক্রাণুকে খুঁজে বার করা সম্ভবই ছিল না। সেই কাজটিই করে দেয় এআই। তাতে আইভিএফও সফল হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ে সন্তানও আসে দম্পতির কোলে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement