কৃত্রিম নখ থেকে ঘনাচ্ছে বিপদ! ছবি: ফ্রিপিক।
ত্বকের খুবই বিপজ্জনক রোগ সোরিয়াসিস। এক বার হলে সহজে সারতে চায় না। বরং দিনে দিনে আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ে। জ্বালা, চুলকানি, র্যাশ, ক্ষত তৈরি হয় ত্বকে, যা থেকে প্রবল যন্ত্রণায় ভোগেন রোগী। সোরিয়াসিস ত্বকের নানা জায়গায় হতে পারে, এমনকি মাথার ত্বকেও। শুধু তা-ই নয়, নখেও সোরিয়াসিস হয়। এখন নানা রকম নেল এক্সটেনশন নিয়ে মজেছেন কমবয়সিরা। আঠা, রাসায়নিকের ব্যবহারে কৃত্রিম নখ আসল নখের উপর বসিয়ে দেওয়া হয় নেল এক্সেটনশনে। আর সে সব রাসায়নিক থেকেই নখের উপরে ও চারপাশের ত্বকে সোরিয়াসিসের মতো সংক্রমণ ঘটছে অনেকেরই।
নখসজ্জায় বিপদ
নখরঞ্জনী দেখতে ভাল লাগলেও তা অনেক সময়েই নিরাপদ নয়। যে আঠা ও রাসায়নিক দেওয়া হয় তাতে অ্যাসিটোন থাকে। নখের উপর দীর্ঘ সময় ধরে ওই রাসায়নিক লেগে থাকলে তার থেকে অ্যালার্জির সংক্রমণ ঘটতে পারে। নখের চারপাশের চামড়া কালো হতে থাকবে, নখের স্বাভাবিক রং ফ্যাকাশে হয়ে যাবে, ত্বক শুকিয়ে খসখসে আঁশের মতো হবে। ওই জায়গায় সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি বেশি পড়লে তা থেকে নেল সোরিয়াসিস হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে।
কতটা বিপজ্জনক সোরিয়াসিস?
চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডল জানান, সোরিয়াসিস আসলে ত্বকের এক বিশেষ ধরনের ক্রনিক সমস্যা। ত্বকের দু’টি প্রধান স্তর থাকে— বাইরের অংশটিকে বলা হয় এপিডার্মিস, এবং ভিতরের ত্বককে ডার্মিস। এপিডার্মিসের উপরের দিকে থাকে মৃত কোষ বা কেরাটিন। নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই মৃত কোষ ঝরে গিয়ে নীচে থাকা সজীব কোষগুলি উপরে উঠে আসে। এই প্রক্রিয়া চলতেই থাকে। কোনও অবস্থায় যদি এই প্রক্রিয়ায় গোলমাল ঘটে, তা হলেই সোরিয়াসিস দেখা দেয়।‘সাধারণত ২৮ দিন অন্তর ত্বকের এই বদলে যাওয়ার প্রক্রিয়াটি অর্থাৎ ‘এপিডার্মিস টার্নওভার’ চলতে থাকে। কিন্তু ত্বকের উপর যদি রাসায়নিকের প্রলেপ থাকে, তা হলে ওই প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়। ধীরে ধীরে ত্বকের এই অংশগুলি পুরু হয়ে ওঠে। কখনও আবার তা অত্যন্ত শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে থাকে, ছাল ওঠে, চুলকানি হয় বা জ্বালা করতে থাকে।
নখ ভাল রাখতে হলে তাই কৃত্রিম নখের ব্যবহার কমাতে হবে। মাঝেমধ্যে নখের সাজ ভাল, কিন্তু দিনের পর দিন তা পরে থাকলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। নখ সব সময়ে শুকনো রাখার চেষ্টা করুন। ভিজে থাকলে নখের গোড়া পচে যায়। মাঝেমাঝেই গরম জলে নখ ডুবিয়ে রাখুন। এতে নখে জমে থাকা ব্যাক্টেরিয়া নষ্ট হয়ে যায়। সংক্রমণের ঝুঁকি কমে। নখ ভাল রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবারও খেতে হবে। বিশেষ করে প্রোটিন, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন বেশি করে খাওয়া জরুরি।