ছবি: সংগৃহীত।
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ছেলে-মেয়েদের মনোজগতে বদল আসে। বিশেষত এই বদল চোখে পড়ে সন্তান কৈশোরে পৌঁছলে। শরীর-মনের বদলের ফলে তাদের আচরণেও পরিবর্তন আসে। এই বয়সের ছেলেমেয়েরা চট করে অভিভাবকদের কথা মানতে চায় না। কিন্তু সুস্থ এবং ভাল থাকতে হলে ভাল অভ্যাস তৈরিও যে জরুরি!
গুরুগ্রামের ত্বকের চিকিৎসক গুরবীন ওয়ারাইচ গাড়েকর সমাজমাধ্যমে কৈশোরের রূপচর্চার কৌশল, তাঁদের অভ্যাস গঠন নিয়ে নানা রকম পরামর্শ দেন। কারণ, এই বয়সি ছেলেমেয়েরাই ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে ত্বক নিয়ে এমন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ফেলে, যার খেসারত তাদেরই দিতে হয়।
নেটপ্রভাবী অভিজ্ঞ চিকিৎসক জানাচ্ছেন, অভিভাবকেরা কী ভাবে কিশোরবয়স্ক সন্তানদের মধ্যে ভাল অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। ত্বক থেকে স্বাস্থ্য, কী ভাবে তারা বজায় রাখতে পারে।
মেকআপ: এই বয়সি মেয়েরা মেকআপ করবেই। বারণ করলে তারা শুনবে না। তাই অভিভাবকদের চিকিৎসকের পরামর্শ, সন্তানকে বোঝানো দরকার, প্রয়োজনে মেকআপ করলে তার আগে ময়েশ্চারাইজ়ার মাখা জরুরি। এতে সরাসরি মেকআপ ত্বকের সংস্পর্শে আসে না বলে ক্ষতি কম হয়। একই সঙ্গে চেষ্টা করা দরকার, যেন সবসময় মেকআপ তুলেই তারা ঘুমোতে যায়। রোজের মেকআপ ত্বকের জন্য ক্ষতিকর, তা বুঝিয়ে প্রয়োজন মতো মেকআপের পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে।
ত্বকের যত্ন: সন্তান বড় হওয়ার সময় থেকেই নিয়ম করে মুখ পরিষ্কার, ময়েশ্চারাইজ়ার মাখা, রোদে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন মাখা এগুলি শেখানো যেতে পারে। শিশুকে নিয়ম করে যেমন দাঁত মাজতে শেখানো হয়, তেমনই ত্বক ভাল রাখার মূল বিষয়গুলিও অভ্যাস করানো ভাল। বিশেষত কৈশোরে উত্তীর্ণ ছেলেদেরকেও শেখাতে হবে, ত্বক পরিষ্কার করা জরুরি। কারণ, এই ব্যাপারে ছেলেরাই সবচেয়ে অসতর্ক হয়। এতে কৈশোরে ত্বকের যে ধরনের সমস্যা হয়, তা এড়ানো সম্ভব।
খাদ্যাভ্যাস: চিপ্স, কোল্ড ড্রিংকস, মিষ্টি, পিৎজ়া, পেস্ট্রি, চকোলেট— সুস্বাদু এই খাবারেই মজে যায় কিশোর-কিশোরীরা। তা স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা হানিকর, বুঝতে চায় না ছেলেমেয়েরা। তাই অভিভাবককে একটু সতর্ক হতে হবে। ভাজাভুজি বা এই ধরনের খাওয়ার দিন সপ্তাহে নির্দিষ্ট করে দেওয়া যেতে পারে। কোল্ড ড্রিংকের মাত্রা কম করতে বলতে পারেন। পুরোপুরি বাদ নয়, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ থাকাটা যে জরুরি, তা বোঝাতে হবে।
ঘুম: ওটিটি, সিরিজ, ফোন নিয়ে রাত কাটিয়ে দেয় কৈশোরের ছেলেমেয়েরা। চিকিৎসক বলছেন, বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগের। রাতভর না ঘুমিয়ে ভোরে বা সকালে ঘুমের অভ্যাস স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। এমন অভ্যাস যাতে তৈরি না হয়, অভিভাবককে সতর্ক হতে হবে। সন্তানদের ঘুমের গুরুত্ব বোঝানো প্রয়োজন। যেমন রাতে যদি কেউ ১২টায় শোয়, তা হলে তা যেন ১২টাই হয়। সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময়টা নির্দিষ্ট করে দিলে বা একটু কড়া হলেও, ঘুমের অভ্যাস ধীরে ধীরে ঠিক হতে পারে।