তিসি বীজ কী ভাবে খেলে স্বাস্থ্য ভাল থাকবে, সমস্ত পুষ্টিগুণ পাবে শরীর? ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
সকালটা স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে শুরু করা দরকার, বলেন চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদেরা। তাই লুচি-পরোটার বদলে অনেকেই বেছে নিচ্ছেন ওট্স থেকে স্মুদি। কেউ দিন শুরু করেন মেথি ভেজানো বা চিয়া ভেজানো জল দিয়ে। কেউ খান তিসি বা ফ্ল্যাক্সসিড ভেজানো জল। স্মুদি থেকে স্যালাডে তিসির বীজ ছড়িয়ে খাওয়ারও চল আছে।
তিসি বা ফ্ল্যাক্সসিড হল ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস। এ ছাড়া তিসির বীজে রয়েছে আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড। এই সমস্ত উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে সামগ্রিক ভাবে হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখে।তিসির বীজে ফাইবার থাকে। ডায়াবেটিকেরাও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই বীজ খেতে পারেন। লিগন্যান্স নামক একটি উপাদান রয়েছে তিসিতে। এটি এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। যা শরীর ভাল রাখার জন্য জরুরি। তা ছাড়া এই উপাদানটি শরীরে ‘ফাইটোইস্ট্রোজেনিক’ রূপে কাজ করে। অর্থাৎ, শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতি পূরণ করে। ফলে রজোনিবৃত্তির সময়ে মহিলাদের হরমোনের হেরফের সামাল দেওয়ার কাজটিও ভাল ভাবেই সম্পন্ন করে। তিসি বীজে রয়েছে থিয়ামিন, কপার, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাসের মতো একাধিক খনিজ। ওজন কমাতেও বীজটি কার্যকর। ফলে জলখাবারে এই বীজটিও জায়গা করে নিয়েছে।
স্মুদি থেকে স্যালাডে কেউ খান বীজটি ছড়িয়ে। আটা মাখার সময়েও অনেকে তিসি বীজ ছড়িয়ে দেন। আবার, কেউ কেউ বীজটি খান গুঁড়িয়ে। কী ভাবে খেলে বীজের পুষ্টিগুণ শোষণ করা শরীরের পক্ষে সহজ হবে, পরামর্শ দিলেন মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ দীপশিখা জৈন। সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন খাবারের পুষ্টিগুণ নিয়ে মাঝেমধ্যেই নিজের সমাজমাধ্যমে পরামর্শ দেন দীপশিখা।
তিনি জানাচ্ছেন, তিসি বীজ গোটা খেলে সমস্যা হতে পারে দু’টি। বীজের পুরু শক্ত খোসাটি হজম করা যেমন কঠিন, তেমনই তা থেকে সহজে পুষ্টিগুণ শোষিত হতে চায় না। দীপশিখার মতে, তিসি বীজের উপকারিতা প্রশ্নাতীত। কিন্তু শক্ত বীজটি শরীর ভাঙতে পারে না। ফলে সেটি অপাচ্য অবস্থায় শরীরে রয়ে যায়। মলের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।পুষ্টিগুণ থাকা সত্ত্বেও শরীর তা পায় না।
পুষ্টিবিদেরা সতর্ক করেন, শুকনো বীজ গলায় আটকে যাওয়ার ভয় থাকে। ফলে ভাল হয়, তিসি বীজ গুঁড়িয়ে নিলে। তিসি বীজ শুকনো কড়াইয়ে একটু নাড়াচাড়া করে গুঁড়িয়ে রাখা যায়। সেই গুঁড়ো স্মুদিতে মিশিয়ে বা রুটি তৈরির সময় আটাতেও মিশিয়ে নেওয়া ভাল। ঈষদুষ্ণ জলেও তিসির গুঁড়ো মিনিট দশেক ভিজিয়ে খেয়ে নেওয়া যায়। দই দিয়ে ওট্স খাওয়ার সময়, বা স্যালাডেও তিসির গুঁড়ো ছড়িয়ে খাওয়া যেতে পারে।