রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করবেন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।
বেঙ্গালুরুর পুষ্টিবিদ রায়ান ফার্নান্ডোর মতে, এইচবিএ১সি-র মাত্রা অর্থাৎ রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করার জন্য জটিল নিয়ম মানার দরকার নেই। যাপনেরপাঁচটি অভ্যাস বদল করলেই রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এই অভ্যাসগুলি একত্রে এইচবিএ১সি-র মাত্রা হ্রাস করতে পারে। বিজ্ঞানসম্মত ৫টি অভ্যাসের ফলে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি, শর্করা জমিয়ে রাখা এবং খাওয়ার পর শর্করা হঠাৎ অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া— এই সমস্ত প্রবণতাকে ঠিক করা যায়।
ব্লাড সুগার কমানোর উপায়। ছবি: সংগৃহীত।
পুষ্টিবিদ নতুন কোন কোন অভ্যাস রপ্ত করতে বলছেন?
১. শরীরচর্চার বিশেষ নিয়ম: শরীরের সবচেয়ে বড় অঙ্গ, যা গ্লুকোজ় জমিয়ে রাখতে পারে, তা হল পেশি। পেশি যত বেশি সক্রিয় থাকবে, তত বেশি নিয়ন্ত্রণে থাকবে সুগার। রায়ান বলছেন, এর জন্য অ্যরোবিক এবং শক্তিবৃদ্ধির ব্যায়াম করতে হবে। প্রথমটি প্রতি সপ্তাহে ১৫০ মিনিট ধরে অভ্যাস করুন। দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে ২-৩টি সেশন প্রয়োজন।
২. নির্দিষ্ট পরিমাণ ওজন হ্রাস: দেহের ওজনের ৭-১০ শতাংশ হ্রাস করা দরকার। যার ফলে ইনসুলিনের সঙ্কেত প্রেরণের ক্ষমতা বাড়ে এবং লিভারে গ্লুকোজ়ের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় ও সেখানে রক্ত সরবরাহ করার ক্ষমতা বাড়ে বলে মত চিকিৎসকের। তাতেই নিয়ন্ত্রণে থাকে শর্করা।
৩. খাওয়ার নতুন নিয়ম: ১০-১২ ঘণ্টার মধ্যে দিনের খাওয়া সম্পন্ন করঅভ্যাস করুন। মধ্যরাতে খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমাতে হবে। অগ্ন্যাশয়কে বিশ্রাম দেওয়ার দরকার, যাতে অঙ্গটি ভাল ভাবে কাজ করার শক্তি অর্জন করতে পারে। উপবাসের সময় নির্দিষ্ট থাকলে তা সম্ভব। আর মধ্যরাতে খাওয়াদাওয়া করে গেলে সারা রাত ধরে রক্তে শর্করার মাত্রায় হেরফের ঘটতে থাকে।
৪. বিশেষ খাদ্যাভ্যাস: কম কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার বা মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট শুরু করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক। পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে ফাইবার, চর্বিহীন প্রোটিন, বাদাম এবং মাছ বেশি খেতে হবে। এর ফলে খাওয়ার পর আকস্মিক ভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পাবে এবং ইনসুলিন সেনসিটিভিটি উন্নত হবে।
৫. শরীর সক্রিয় রাখার নিয়ম: সিঁড়ি ব্যবহার, হেঁটে যাতায়াত করা, খাওয়ার পর অল্প হেঁটে নেওয়ার (১০ মিনিট মতো) অভ্যাস রপ্ত করা দরকার বলে মনে করেন রায়ান। ছোট পরিসরে অথচ ঘন ঘন হাঁটাচলা করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।