ভাজাভুজি আর মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে নিয়ন্ত্রণ করুন সহজেই! ছবি : সংগৃহীত।
খাবারের সঙ্গে আবেগের একটা সুতো বাঁধা আছে কোথাও। হয়তো তাই উৎসবে-আনন্দে-উদ্যাপনের কথা হলে প্রথমেই প্রশ্ন আসে কী খাওয়াদাওয়া হবে? আবার মনখারাপ থাকলে, মেজাজ বিগড়োলেও পছন্দের কেক-কুকিজ়-মিষ্টি খাওয়ার প্রতি ঝোঁক বাড়ে। মানসিক চাপে থাকলে বেশি খাওয়ার উদাহরণ তো ভূরি ভূরি! সেই প্রবণতার নানা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও আছে। কিন্তু সারা দিন এমন নানা আবেগের সঙ্গে পাল্লা দিতে যদি এটা ওটা খাওয়া চলতেই থাকে, তবে মুশকিল!
এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই যে, খাবারের স্বাদ-গন্ধ ক্ষণিকের জন্য হলেও মন ভাল করে দিতে পারে। আবার শারীরিক শক্তি জুগিয়ে ক্লান্তি এবং অবসাদ কাটাতেও সাহায্য করে খাবার। এ যুগের ব্যস্ত জীবনযাত্রায় নানা প্রতিযোগিতার পাকে মানসিক চাপ, উদ্বেগ, মনঃকষ্ট বা মনখারাপ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। খাবার দিয়ে অনেকেই সেই আবেগের ওঠাপড়া সামাল দেন। এই কচুরি খেলেন তো ওই রাবড়ি, কখনও জিলিপি খেতে ইচ্ছে হল তো কখনও চপ-তেলেভাজা-এগরোল কিংবা পেস্ট্রি, প্যানকেক ইত্যাদি। ফলে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে বাড়তে থাকে ওজন। বাড়ে ফ্যাটি লিভার, হার্টের অসুখ, ডায়াবিটিসের মতো রোগের সম্ভাবনা।
মজার ব্যাপার হল, এই অভ্যাস যে ভাল নয়, তা বুঝেও অনেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। আবেগের বশবর্তী হয়ে চোখের সামনে ভাজাভুজি বা মিষ্টি খাবার বা সোডা যুক্ত নরম পানীয় দেখলে চুম্বকের টান অনুভব করেন। শেষে বিবেক আর বিচার-বিবেচনা হাল ছাড়ে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস জেতে। হেরে যায় স্বাস্থ্যভাবনা। আশার কথা হল, ওই অভ্যাসকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
বলিউডের নায়িকা আলিয়া ভট্ট, করিনা কপূর, জাহ্নবী কপূরের পুষ্টিবিদ রুজুতা দ্বিবেকর জানাচ্ছেন, এই যে হুটহাট এটা ওটা খাবার খাওয়ার ইচ্ছেয় নিয়ন্ত্রণ টানতে না পারা, সেটি কয়েকটি নিয়ম মেনে বদলানো যায়।
কী কী করতে হবে?
১। স্বাস্থ্যকর দৈনন্দিন খাবারের মধ্যেও অনেক রকম প্রিয় পদ থাকে। যার স্বাদ-গন্ধ আপনার ভাল লাগে। কারও ক্ষেত্রে ভাত-ডাল-আলুপোস্ত সেই প্রিয় খাবার। কেউ ভালবাসেন খিচুড়ি খেতে। কারও মুড়ি-আলুসেদ্ধ-টম্যাটো-পেঁয়াজ-লঙ্কা-ধনেপাতা দিতে মাখিয়ে খেতে ভাল লাগে। ভাত বা রুটির সঙ্গে খাওয়ার নানা রকম পছন্দের তরকারিও থাকতে পারে। সারা দিনের যত বার খাবার খান, তার মধ্যে একটি এমন পছন্দসই খাবার রাখুন।
২। দিনের আর একটি খাবার হতে হবে পুষ্টিকর এবং সুষম। অর্থাৎ সেই খাবারে নানা ধরনের ভিটামিন, প্রোটিন, ফাইবার, শর্করা এবং খনিজ থাকবে। সেটা প্রাতরাশ হতে পারে, আবার দুপুরের খাবারও হতে পারে।
৩। সারা দিনের খাবারে নিয়মিত এক মুঠো বাদাম এবং ডালও রাখতে পারলে ভাল।
৪। সপ্তাহে এক দিন একটা মশলাদার টক-ঝাল-মিষ্টি সুস্বাদু খাবার, যেমন চাট, ফুচকা ইত্যাদি খাওয়া যেতেই পারে।
৫। রুজুতা বলছেন, রোগা হতে গিয়ে পছন্দের সব খাবারকে কঠোর হাতে দূরে সরালেই মুস্কিল হয় সবচেয়ে বেশি। রোজ কেক-কুকিজ়-চিপস-মিষ্টি ইত্যাদি না খেয়ে মাসে দু’বার খেলে ক্ষতি নেই।