Diabetic Retinopathy

ডায়াবিটিস ছিনিয়ে নিতে পারে দৃষ্টিশক্তি! দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, সতর্ক করছেন গবেষকেরা

ডায়াবিটিসের কারণে যে অঙ্গটির ক্ষতি বেশি হয়, তা হল চোখ। অনেকেই শুনলে আঁতকে উঠবেন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিস থেকে দৃষ্টিশক্তি চলেও যেতে পারে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৪৫
Share:

ডায়াবিটিসে চোখের ক্ষতি কী ভাবে হয়? ফাইল চিত্র।

ডায়াবিটিস ধরা পড়লেই আতঙ্ক শুরু হয়। মনে হয়, এক লহমায় জীবন থেকে অনেক কিছু বাদ পড়ে গেল। বিশেষ করে যাঁরা খেতে ভালবাসেন, তাঁদের সমস্যা আরও। চিকিৎসকেরা বলেই দেবেন, কোনটা খাওয়া যাবে, আর কোনটা নয়। তা ছাড়া ডায়াবিটিস তো একা আসে না, আরও নানা শারীরিক সমস্যা সঙ্গে নিয়েই আসে। ক্ষতি হয় হার্ট, লিভার, কিডনির। আর যে অঙ্গটির ক্ষতি বেশি হয়, তা হল চোখ। অনেকেই শুনলে আঁতকে উঠবেন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিস থেকে দৃষ্টিশক্তি চলেও যেতে পারে। ভারতে ডায়াবিটিসের কারণে দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকেই। আর এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

Advertisement

২০২২ সাল থেকে চালানো একটি সমীক্ষায়, গবেষকেরা দাবি করেছেন ডায়াবিটিসের কারণে দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে অথবা তা চলেও যেতে পারে। ‘দ্য ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নালে এই বিষয়ে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ভারতে অন্তত ৮ হাজার ডায়াবিটিসের রোগীর মধ্যে ১২.৫ শতাংশই ভুগছেন দৃষ্টিশক্তির সমস্যায়। অনেকেরই রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত। তার মধ্যে অন্তত ৪ শতাংশের অবস্থা রীতিমতো সঙ্কটজনক।

ডায়াবিটিসের কারণে রেটিনার ক্ষতি হলে তাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় ‘ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি’। রেটিনা চোখের সবচেয়ে সংবেদনশীল পর্দা। আলোকরশ্মি চোখের ভিতর ঢুকে রেটিনায় প্রতিফলিত হয়েই দৃশ্যমানতা তৈরি করে। রক্তশূন্যতা বা অক্সিজেনের অভাবে রেটিনার সূক্ষ্ম রক্তজালিকাগুলি বন্ধ হয়ে যায়। কখনও আবার রক্তনালির মধ্যে জল বা তেল জাতীয় পদার্থ জমে গিয়ে ফোলা অংশ তৈরি হয়। সেখানে রক্ত জমাট বেঁধে চোখে জ্বালাযন্ত্রণা হয়, আবার কখনও রক্তনালিতে ছিদ্র তৈরি হয়ে সেখান থেকে রক্ত চুঁইয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। ফলে আলোকরশ্মি চোখে ঢুকতে বাধা পায়। ধীরে ধীরে ঝাপসা হতে থাকে দৃষ্টিশক্তি। ডায়াবিটিসের কারণে এই সব সমস্যাই দেখা দিতে পারে।

Advertisement

সমস্যা শুরু হয় চোখে ব্যথা দিয়ে। দূরের জিনিস শুধু নয়, কাছের জিনিস দেখতেও সমস্যা হয়। দু‘পাশের দৃশ্য দেখাতেও সমস্যা হয় অনেক সময়েই। রং বুঝতে পারবেন না রোগী, হঠাৎ চারদিক অন্ধকার দেখা, নির্দিষ্ট কোনও অংশ দেখতে না পাওয়া এবং আচমকা আলোর ঝলকানি দেখা— এ সবও ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির লক্ষণ।

ডায়াবেটিকেরা চোখে এই ধরনের সমস্যা অনুভব করলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা অ‌্যাঞ্জিয়োগ্রাফি, চোখের স্ক‌্যানের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করেন। লেজ়ার থেরাপি, চোখের ইঞ্জেকশন বা স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দিয়ে দৃষ্টিশক্তি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও হয়। ছ’মাস অন্তর চোখ পরীক্ষা করালে, বিপদের ঝুঁকি অনেক কম থাকবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement