জাপানিজ় ওয়াকিংয়ের নিয়ম কী? ছবি: ফ্রিপিক।
৩০ মিনিট হাঁটতে হবে শুনে আঁতকে উঠছেন? এ হাঁটায় বুক ধড়ফড় করবে না, ক্লান্তি তো হবেই না। হাঁটতে হাঁটতে কখন আধ ঘণ্টা পেরিয়ে যাবে, বুঝতেও পারবেন না। জোরে হাঁটার ধকল যাঁরা নিতে পারেন না, তাঁদের জন্য আদর্শ ‘জাপানিজ় ওয়াকিং’। ধীর গতিতে হাঁটলে ওজন কমবে তো? এ-ও মনে হতে পারে। জোরে হাঁটা না ধীরে হাঁটা ভাল, সে নিয়ে ধন্দে পড়লে, নতুন রুটিনে হেঁটে দেখতে পারেন। হার্টের রোগ বা উচ্চ রক্তচাপ— যে কোনও অসুখ থাকলেও ৩০ মিনিটের জাপানিজ় ওয়াকিং করা যায়। বয়স্কদের জন্য অন্যতম সেরা ব্যায়াম এটি।
জাপানিজ় ওয়াকিংয়ের নিয়ম কী?
জাপানের শিনশু ইউনিভার্সিটির গবেষক হিরোসি নোজ় ও শিজ়ু মাসুকি হাঁটার এক পদ্ধতি বার করেছেন। জাপানিজ় ওয়াকিং হল একরকমের ‘ইন্টারভাল ওয়াকিং ট্রেনিং’ যাতে একটানা হনহন করে হাঁটার প্রয়োজন নেই। বরং ধীরেসুস্থে কখনও গতি বাড়িয়ে, আবার কখনও কমিয়ে হাঁটতে হয়। পুরোটাই গতি নিয়ন্ত্রণ ও সময় ধরে হয়। হাঁটতে হাঁটতে আবার খানিক স্ট্রেচিংও করে নেওয়া যায়। শরীরের উপর ধকল পড়ে না। তাই প্রবীণেরা এই রুটিন মেনে সহজেই হাঁটতে পারেন। তাতে ৩০ মিনিট হাঁটাও হয়, আবার শরীরও তেমন ক্লান্ত হয় না।
এ বার আসা যাক হাঁটার পদ্ধতিতে। গবেষক হিরোসি শেখাচ্ছেন, প্রথম ৫ মিনিট হবে ‘ওয়ার্ম আপ’। এই সময়ে ধীরেসুস্থে হাঁটা শুরু করতে হবে। চাইলে স্পট জগিং করে শরীর চনমনে করে তুলতে পারেন। ‘ওয়ার্ম আপ’ পর্বটি পাঁচ মিনিটের জায়গায় ১০ মিনিটও হতে পারে। এর পরের ৩-৫ মিনিট গতি বাড়িয়ে হাঁটতে হবে। তখন থামলে চলবে না। একে বলে ‘ইন্টারভাল সাইকেল’। এতে শরীরের কসরত হবে। তার পর আবার গতি কমিয়ে ফেলুন। পরের ৫ মিনিট ধীর গতিতে হাঁটুন। এই ভাবে ধীর গতিতে শুরু করে মাঝে গতি বাড়িয়ে ও শেষে কমিয়ে হাঁটতে থাকুন। প্রক্রিয়াটি চলবে ৩০ মিনিট। সপ্তাহে ৪ দিন এই রুটিনে হাঁটলেই মেদ ঝরবে।
জাপানিজ় ওয়াকিং শুরু করার পর সঙ্গে স্টপ ওয়াচ রাখতে পারেন। তাতে সময় বোঝা সুবিধা হবে। ভাল জুতো পরতে হবে। সঙ্গে ফিটনেস ট্র্যাকার রাখতে পারেন। এতে বোঝা যাবে কতটা হাঁটলেন।
সুবিধা কী কী?
জাপানিজ় ওয়াকিংয়ে মেদ কমবে অবধারিত ভাবেই। ওয়েট ট্রেনিং বা কার্ডিয়োয় যেমন শরীরের ধকল হয়, এতে তেমন হবে না। কিন্তু ক্যালোরি পুড়বে। নিয়ম মেনে করতে পারলে সপ্তাহখানেকের মধ্যেই মেদ ঝরতে শুরু করবে।
হার্টের স্বাস্থ্য ভাল হবে। নিয়ম মেনে করলে শরীরে রক্ত চলাচল ভাল হবে। খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমবে।
পেশির শক্তি বাড়বে। দীর্ঘ ক্ষণ যাঁরা বসে কাজ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে খুবই উপযোগী জাপানিজ় ওয়াকিং।
প্রবীণেরা নিশ্চিন্তে করতে পারেন। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলেও জাপানিজ় ওয়াকিং করা যাবে। এতে রক্তচাপ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।