Oats vs Mouesli

ওজন কমানোই লক্ষ্য? প্রাতরাশে ওট্‌স খাবেন না মুজ়লি, কোনটি খেলে মেদ ঝরবে দ্রুত?

বাঙালির চিরন্তন খাবারের বদলে এখন অনেক বাড়িতেই প্রাতরাশে জায়গা করে নিয়েছে স্বাস্থ্যকর ওট্স, মুজ়লি, ডালিয়া, মিলেট। পুষ্টিকর সবই। কিন্তু যদি ওজন কমাতে হয় ওট্স ভাল, না কি মুজ়লি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫ ১৬:২৭
Share:

ওজন কমাতে গেলে ওট্স না মুজ়লি কোন খাবার বেছে নেবেন? ছবি: আনন্দবাজার ডট কম

জলখাবারে চিরপরিচিত লুচি-পরোটা, রুটি-তরকারি, দুধ-মুড়ির মেনু বদলে যাচ্ছে ক্রমশ। সুস্থ থাকতে হলে পেট ভরালেই হবে না, বুঝতে হবে খাদ্যের পুষ্টিগুণ— এই আলোচনাই সর্বত্র। ইদানীং স্বাস্থ্য সচেতন তরুণ প্রজন্মও খাদ্যাভ্যাস বদলে ওট্স, কিনোয়া, রাগি, মিলেটে মন দিয়েছে। বয়সকালে এসে স্বাদ বদলাতে হচ্ছে, এমন মানুষও কম নেই। ঘরে ঘরে ডায়াবিটিস, হার্টের অসুখ। উঠতে গেলে কোমরে ব্যথা, হাঁটতে গেলে পায়ে ব্যথা। রোগ সারাতে গেলেই চিকিৎসকেরা বলছেন, খেতে হবে পুষ্টিগুণ বুঝে। আর সেই কারণেই সকালের জলখাবারে জায়গা করে নিচ্ছে ওট্স, মুজ়লি, ডালিয়ার মতো খাবার।

Advertisement

কিন্তু ওজন ঝরানোর যদি লক্ষ্য হয়, তা হলে ওট্স না মুজ়লি— কোনটি খেলে ভাল? তার আগে জানা দরকার, কোনটির কী পুষ্টিগুণ। ওট্স হল দানাশস্য। রোলড, স্টিল-কাট, ইনস্ট্যান্ট বিভিন্ন ধরনের ওট্স হয়। এই খাবার জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হল উচ্চ মাত্রার ফাইবার (বিটা গ্লুকান) রয়েছে এতে। আবার ক্যালোরির মাত্রাও বেশ কম। এতে রয়েছে বি ভিটামিন, কপার, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ়ের মতো খনিজ। তা ছাড়া প্রোটিন, সামান্য পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটও মেলে এতে। সুতরাং ওট্‌স এমন একটি খাবার, যা পেট ভরিয়ে রাখে, পুষ্টি জোগায় ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণে রেখেই। ফলে ওজন কমানোর সব কিছুই রয়েছে এতে।

অন্য দিকে, মুজ়লি হল রোলড ওট্স, বাদাম, বীজের মিশ্রণ। কখনও কখনও এতে মিষ্টিও যুক্ত থাকে। বাজার চলতি মুজ়লিতে মিষ্টি এবং তেলের ব্যবহারও হয় কোনও কোনও সময়ে। যেহেতু এতে বাদাম এবং বীজ মেশানো থাকে, স্বাভাবিক ভাবেই পুষ্টি এবং ক্যালোরির পরিমাণও বৃদ্ধি পায়।

Advertisement

উপকারী দু’টি খাবারই। কিন্তু ওজন কমাতে গেলে কোনটি বাছবেন। পুষ্টিবিদ শম্পা সরকার বলছেন, খাদ্যগুণ কোনওটিতেই কম নেই। তবে ক্যালোরির হিসাব কষলে ১০০ গ্রাম ওট্‌সে ২৫০-৩৫০ কিলোক্যালোরি। এই ক্যালোরির পরিমাণ নির্ভর করে তা কী ভাবে খাওয়া হচ্ছে? দুধ দিয়ে কেউ ওট্স খান, ফল মিশিয়ে নেন তাতে। আবার কেউ দই দিয়েও খান। যদি ফ্যাট যুক্ত দুধ দেওয়া হয়, কলা মেশানো হয়, ক্যালোরি বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু যদি ফ্যাট ছাড়া দুধ কিংবা টক দই দিয়ে খাওয়া হয়, আপেল, ন্যাসপাতির মতো ফল যোগ করা হয়, ক্যালোরি তুলনামূলক কম হবে।

অন্য দিকে, ১০০ গ্রাম মুজ়লিতে ক্যালোরির পরিমাণ ৩০০-৪৭৫। মুজ়লিও দুধে ভিজিয়েই খান অনেকে। সে ক্ষেত্রে ফ্যাটহীন দুধ খেলে ক্যালোরি কমবে। আবার বাদাম, বীজ থাকায় এতে যেমন ক্যালোরি বেশি, তেমনই উপকারও। ডায়েটরি ফাইবার, পটাশিয়াম থাকেই। বাদাম থাকায় প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাটও যোগ হয়। হার্ট ভাল রাখতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট জরুরি। ওটসের ফাইবার যা বিটা গ্লুকান নামে পরিচিত হার্ট ভাল রাখে। ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতেও সহায়ক।

ওজন কমানোর প্রসঙ্গে শম্পার বক্তব্য, ‘‘দুই-ই খাওয়া যায়। তবে প্রাতরাশে ক্যালোরির মাত্রা ৩০০-৩৫০ কিলোক্যালোরি রাখাই ভাল। সে ক্ষেত্রে সকালের জলখাবারে কেউ ৪০ গ্রাম মুজ়লি খেতে পারেন। ওজন কমাতে গেলে খেয়াল রাখা দরকার, মুজ়লিতে যেন চিনি না থাকে। ওট্‌সের ক্ষেত্রেও দেখতে হবে, এতে কী কী মেশাচ্ছেন? ওজন কমানোর মূল মন্ত্রই হল ক্যালোরির মাত্রা ঠিক রাখা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement