নিতম্বে ব্যথা হচ্ছে? ওষুধেও না সারলে সতর্ক হোন। ছবি: ফ্রিপিক।
শরীরের যে কোনও অঙ্গেই ব্যথাবেদনা স্বাভাবিক জীবনের ছন্দপতন ঘটায়। সে পিঠ-কোমর টনটনিয়ে উঠুক বা ঘাড়ে-কাঁধে বিদ্যুতের শক লাগার মতো ব্যথা— যাঁর হয়, তিনিই তার মর্ম বোঝেন। ব্যথাবেদনাও বিভিন্ন প্রকার। চিকিৎসাবিজ্ঞানে তাদের নাম, ধরন, প্রকৃতিও ভিন্ন ভিন্ন। নিতম্ব ও কোমরের যন্ত্রণায় অনেকেই ভোগেন। বিশেষ করে আঁটসাঁট জিন্স বা ট্রাউজার পরার অভ্যাস যাঁদের আছে, তাঁরাই বেশি ভুক্তভোগী। আবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটানা বসে কাজ করলেও নিতম্বের পেশিতে টান ধরতে পারে, যন্ত্রণা হতে পারে। এমন ব্যথা শুধু ওষুধে সারার নয়। এ ব্যথা সাধারণও নয়। এক টানা তিন সপ্তাহের বেশি যদি ব্যথা থাকে, তা হলে বুঝতে হবে, তা জটিল অসুখের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
নিতম্বের একটানা ব্যথার কারণ গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাস পেশিতে টান বা নিতম্বের হাড়ে চির ধরা। নিতম্বের সবচেয়ে বড় পেশি গ্লুটিয়াস, যা দুর্বল হয়ে পড়লে যন্ত্রণা শুরু হয়। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিস’। এই ব্যথা দিনের পর দিন থেকে গেলে তা থেকে আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বাড়ে। অস্থিরোগ চিকিৎসক প্রবীরকুমার দত্ত জানিয়েছেন, নিতম্বের সবচেয়ে বড় পেশি গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাসের কাজ ধারণ করে থাকা। এর পরেই থাকে গ্লুটিয়াস মিডিয়াস, যা অনেক প্রশস্ত ও ঘন। মিডিয়াসের নীচের দিকে থাকে সবচেয়ে ছোট পেশি গ্লুটিয়াস মিনিমাস। এরা একটা নির্দিষ্ট বিন্যাসে থাকে। যদি তাদের গঠন ও বিন্যাস নষ্ট হয়, তখনই নিতম্বে যন্ত্রণা শুরু হয়। তিন পেশি তাদের কার্যক্ষমতা হারালে তখন অনেক সময়ে রক্ত জমাট বাঁধতেও থাকে। যাঁরা একটানা বসে কাজ করেন, খুব আঁটসাঁট পোশাক পরেন অথবা খুব বেশি স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খান, তাঁদের ‘অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিস’ হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
চিকিৎসা কী?
ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে পারে। তবে তার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি। গরম বা ঠান্ডা সেঁক দিলে সাময়িক ভাবে আরাম পেতে পারেন। কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম আছে, চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে সেগুলি করা যায়। যেমন স্ট্রেচিং করা যেতে পারে।
শারীরিক ভঙ্গি ঠিক থাকলে নিতম্বের পেশির উপর চাপ কমতে পারে। বসার সময়ে ভঙ্গি ঠিক রাখতে হবে।
নিতম্বের হাড়ে চিড় ধরার জন্য যদি ব্যথা হয়, তা হলে ‘আর্টিকুলার কার্টিলেজ রিপ্লেসমেন্ট’ বা কিছু ক্ষেত্রে ‘জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট’ করানোরও প্রয়োজন হতে পারে।