ফ্রোজ়েন চিংড়িতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ, সতর্ক করল এফডিএ। ছবি: এআই।
চিংড়িতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ? খেলেই শরীরে ঢুকবে বিষ। তেজস্ক্রিয় পদার্থ রক্তে মিশলে ক্যানসারের ঝুঁকি বহু গুণে বেড়ে যাবে বলে সতর্ক করল আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (এফডিএ)।
হিমায়িত বা বরফে সংরক্ষিত কুচো চিংড়িতে বিপজ্জনক মাত্রায় তেজস্ক্রিয় পদার্থের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। বাজারে যে প্যাকেটবন্দি ফ্রোজ়েন চিংড়ি পাওয়া যায়, তাতেই রাসায়নিক রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এফডিএ জানিয়েছে, ইন্দোনেশিয়া থেকে প্যাকেটবন্দি হয়ে যে কুচো চিংড়ি বাজারে আসছে, তার মধ্যে সিজ়িয়াম-১৩৭ নামে এক ধরনের তেজস্ক্রিয় পদার্থ পাওয়া গিয়েছে। এগুলি শরীরে ঢুকলেই যে বিষক্রিয়া হবে তা নয়, তবে দিনের পর দিন এমন প্যাকেটবন্দি চিংড়ি খেতে থাকলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ রক্তে মিশে ক্যানসারের ঝুঁকি বহু গুণে বাড়িয়ে দেবে।
ফ্রোজ়েন চিংড়ির প্যাকেট বেশির ভাগই ইন্দোনেশিয়া থেকে আসে। সে সবের মধ্যে তেজস্ক্রিয় পদার্থ কী ভাবে এল, তা জানা যায়নি। এফডিএ সতর্ক করে জানিয়েছে, এই সব প্যাকেট যে যে দেশে ছড়িয়েছে, সেখানকার বাসিন্দাদের সতর্ক হতে হবে। প্যাকেটবন্দি চিংড়ি কেনার আগে ভাল করে দেখে নিতে হবে, তা কোথা থেকে আমদানি করা হয়েছে।
সিজ়িয়াম-১৩৭ হল সিজিয়াম তেজস্ক্রিয় মৌলের একটি আইসোটোপ। পারমাণবিক চুল্লিতে এটি ব্যবহৃত হয়। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজে লাগে এটি। এই তেজস্ক্রিয় পদার্থ বিটা ও গামা রশ্মি বিকিরণ করে। মানুষের শরীরে ঢুকে রক্তে জমা হতে থাকলে তা কোষের অনিয়মিত বিভাজন ঘটাবে যা ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করবে। শুধু তা-ই নয়, এই তেজস্ক্রিয় মৌল স্নায়বিক রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে, সমস্যা দেখা দিতে পারে প্রজননে।
প্যাকেটবন্দি হিমায়িত যে কোনও খাবারই বিপজ্জনক। শুধু চিংড়ি নয়, তা কাঁচা মাছ বা মাংসও হতে পারে। চকোলেট, বিস্কুট, কেক, বোতলবন্দি পানীয়, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, ব্রেকফাস্ট সিরিয়ালস (ফ্লেভার্ড), সস, তেল— যা যা নিয়মিত খাওয়া হয়, সেগুলির প্যাকেট খুঁটিয়ে দেখতে হবে। দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করে রাখার জন্য এগুলিতে নানা রকম প্রিজ়ারভেটিভ মেশানো হয়, যা শরীরের জন্য বিষ। এতে থাকা আইএনএস ২১১, যার নাম সোডিয়াম বেনজ়োয়েট, বেশ ক্ষতিকর। স্থূলত্ব, শিশুদের এডিএইচডি রোগের কারণ হতে পারে। আইএনএস ২৫০, সোডিয়াম নাইট্রাইট— ক্যানসার, মস্তিষ্কের সচলতা কমিয়ে দেওয়া, স্নায়বিক সমস্যা তৈরি করতে পারে। তেল রান্নাঘরের আবশ্যিক উপাদান। তাই সেখানেও রাসায়নিকের মাত্রা দেখে নিন। আইএনএস ৩২০, ৪৭৭ যদি কোনও পণ্যে থাকে, তা হলে সেটি না খাওয়াই বাঞ্ছনীয়।